
প্রাণি কল্যাণ নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় বিধান করে জাতীয় সংসদে প্রাণি কল্যাণ বিল- ২০১৯ সংশোধিত আকারে পাস করা হয়েছে।
মালিকবিহীন কোনো প্রাণী হত্যা করলে ছয় মাসের জেল অথবা ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধানও রাখা হয় নতুন এই প্রাণী কল্যাণ বিলে।
রোববার (৭ জুলাই) মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
জাতীয় সংসদে বিলটি নিয়ে আলোচনাকালে জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও গণফোরামের সংসদ সদস্যরা।
তবে তাদের সেই প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। এরআগে গত ১০ মার্চ সংসদে বিলটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিলে প্রত্যেক প্রাণির মালিক বা তত্ত্বাবধানকারীর দায়িত্ব যৌক্তিক কারণ ছাড়া ওই প্রাণির প্রতি কল্যাণকর ও মানবিক আচরণ করা এবং নিষ্ঠুর আচরণ করা থেকে বিরত থাকতে সুনির্দিষ্ট বিধান করা হয়েছে। বিলে প্রাণিকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করানো বা অপ্রয়োজনীয়ভাবে প্রহার, প্রয়োজনীয় খাদ্য না দেয়া, বসবাসের যথাযথ ব্যবস্থা না করা, উত্যক্ত করা, ক্ষতিকর ওষুধ প্রয়োগ, আহত প্রাণির চিকিৎসা না করা, অনুমোদন ছাড়া বিনোদন বা ক্রীড়ায় ব্যবহারকে প্রাণির প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ হিসাবে নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। অবশ্য প্রয়োজনে উল্লেখিত কোনো কোনো কর্মকান্ডকে নিষ্ঠুরতা থেকে অব্যাহতি দেয়ার বিধানও করা হয়েছে।
একই সঙ্গে বিলে পোষা প্রাণির বাণিজ্যিক উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনাকে নিবন্ধনের আওতায় আনার বিধান রাখা হয়েছে। নিষ্ঠুরতা বা অন্য কোনো কারণে আহত প্রাণীর চিকিৎসা এবং তত্ত্বাবধানের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
এছাড়া বিলে উল্লেখিত বিধান লঙ্ঘনকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে বিচার ও সুনির্দিষ্ট শাস্তির ব্যবস্থার বিধান করা হয়েছে।
নতুন এই আইনে চলাফেরার সুযোগ না দিয়ে কুকুরকে একটানা ২৪ ঘণ্টা বেঁধে বা আটকে রাখলে তা নিষ্ঠুরতা হিসেবে গণ্য হবে। এই অপরাধের জন্য ছয় মাসের জেলের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
১৯২০ সালের পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতা নিরোধ আইন বাতিল করে নতুন আইন করতে বিলটি পাস করা হয়। এই আইনে প্রাণি বলতে মানুষ ছাড়া সব স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, সরীসৃপ জাতীয় প্রাণি, মাছ ছাড়া অন্যান্য জলজ প্রাণি এবং সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপনে ঘোষিত অন্য কোনো প্রাণি বোঝাবে।