
আরামবাগ, মোহামেডান, ভিক্টোরিয়া ও দিলকুশা ক্লাবে অভিযানে সবক’টিতে ক্যাসিনোর সরঞ্জাম পাওয়া যায়---
নিজস্ব
প্রতিবেদক: এবার একসঙ্গে চার কাবে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। রাজধানীর
মতিঝিলে অবস্থিত আরামবাগ, মোহামেডান, ভিক্টোরিয়া ও দিলকুশা কাবে এই অভিযান
চালানো হয়।
অভিযানে চারটি কাবেই ক্যাসিনোর সরঞ্জাম পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা
বাহিনী। ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট এসব কাবের
নিয়ন্ত্রক বলে জানা গেছে।
রাজধানীর মতিঝিলে দিলকুশা স্পোর্টিং কাব ও
আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ পাশাপাশি অবস্থিত। রোববার বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে মতিঝিল ও
পল্টন থানা পুলিশ কাব দুটিতে অভিযান শুরু করে। দুটি কাব থেকেই ক্যাসিনো ও
জুয়া খেলার বিপুল সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের এডিসি
শিবলি নোমান জানান, বিকেল সাড়ে ৩টায় আরামবাগ কাবে গিয়ে দেখা যায় সেখানে
আগে থেকেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। অন্ধকারে সবকিছু দেখা যাচ্ছিল না। তবে সেখানে
ক্যাসিনো চলে সেটা বোঝা যাচ্ছিল। এছাড়া অভিযানের খবর শুনে সবাই পালিয়ে
গেছেন। দিলকুশায়ও কাউকে পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে রাজধানীর ভিক্টোরিয়া কাবে
অভিযান চালিয়ে নগদ এক লাখ টাকা, মদ, বিয়ার, জুয়া ও ক্যাসিনোর সরঞ্জাম
উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার বিকেল একই সময়ে শুরু হওয়া অভিযানে এসব উদ্ধার
করা হয়। মতিঝিল জোনের ডিসি আনোয়ার হোসেন জানান, কাবের ভেতরের পরিবেশ দেখে
মনে হচ্ছে এখানেও নিয়মিত ক্যাসিনো বসত।
পুলিশের নাকের ডগায় এসব ক্যাসিনো
কীভাবে এতদিন চলছিল? সেই প্রশ্ন উঠেছে সর্বমহলে। রাজধানীর এসব কাবে
ক্যাসিনোগুলো কতদিন ধরে চলছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পুলিশের মতিঝিল
জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের কাছে খবর আসা মাত্রই
অভিযানে এসেছি। কতদিন ধরে চলছে, কারা এর সাথে জড়িত -এসব বিষয় তদন্ত করে
দেখব।
চারটি কাবই পুলিশের নাকের ডগায়, এটাতো অস্বীকার করার উপায় নেই?
এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চারটি কাবই পুলিশের নাকের ডগায় ছিল, এটা
অস্বীকারের কোনো উপায় নেই। তবে আমরা জানা মাত্রই অভিযান শুরু করেছি।
ক্যাসিনো পরিচালনা করা অবৈধ। এখান থেকে যাদের নাম আসবে তারা যতই প্রভাবশালী
হোক, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর (বুধবার) অবৈধ জুয়া ও
ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে র্যাবের হাতে আটক হন ঢাকা দক্ষিণ মহানগর
যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। পরে অস্ত্র ও মাদকের পৃথক
দুই মামলায় তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
গত শুক্রবার রাজধানীর
সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রভাবশালী ঠিকাদার হিসেবে
পরিচিত যুবলীগ নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে আটক করে
র্যাব। এ সময় বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক দ্রব্য ছাড়াও নগদ এক কোটি ৮০
লাখ টাকা, ১৬৫ কোটি টাকার ওপরে এফডিআর (স্থায়ী আমানত) করার নথি জব্দ করা
হয়।
এছাড়া শুক্রবার রাতে রাজধানীর কলাবাগান ক্রীড়াচক্র কাবে অভিযান
চালায় র্যাব। এ সময় কাবটির সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজের কাছে সাত প্যাকেট
গন্ধহীন হলুদ রঙের ইয়াবাসহ অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
জব্দ করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ক্যাসিনোতে খেলার কয়েন, স্কোরবোর্ড ও ৫৭২
প্যাকেট তাস। র্যাবের ধারণা, কাবটি ক্যাসিনো খেলা হত।
একই রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি কাবেও অভিযান চালানো হয়। তবে কাবটি বন্ধ থাকায় সেখানে থাকা বারটি সিলগালা করে দেন র্যাব সদস্যরা।