Published : Wednesday, 13 November, 2019 at 12:00 AM, Update: 13.11.2019 1:50:57 AM

বশিরুল ইসলাম ||
সিলেটে
শাহ জালালের (র.) মাজার জিয়ারত করে উদয়ন ট্রেনে ফিরছিলেন চাঁদপুরের
হাইমচরের তিকশিকান্দির জাহাঙ্গীর হোসেন ও তার পরিবার। ছিলেন দশ নম্বর
স্থানে থাকা বগিতে। কিন্তু দানব হয়ে এসে তূর্ণা নিশীথা ট্রেন কেড়ে নেয় তার
সুখের সংসার। নিহত হন স্ত্রী আমাতন বেগম, পাঁচ বছরের মেয়ে মরিয়ম আর ভাগিনার
স্ত্রী কাকলী বেগম। আহন হন জাহাঙ্গীর হোসেন, ভাগিনার শিশু সন্তান মাহিমা
এবং বোন রাহিমা বেগম। কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আহত অবস্থায়
কাঁতরাচ্ছেন জাহাঙ্গীর।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে তিনি চেতনা ফিরে পেলে
পরিবার পরিজনের খবর জানতে চান নার্সদের কাছে। কিন্তু নার্সরা তাকে পরিবারের
খবর জানাননি। রাত সাড়ে আটটার দিকে জাহাঙ্গীরের পরিবারের নিহত তিনজনকে
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কিছুক্ষণের জন্য আনেন তার পরিবারের
সদস্যরা। কিন্তু জাহাঙ্গীরের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন বলে তাকে তাদের মৃত্যুর খবর
জানানো হয়নি। পরে তিন জনের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় চাঁদপুরের হাইমচরে।
জানা
গেছে, চাঁদপুরের হাইমচরের তিকশিকান্দির হাসিম আলীর জাহাঙ্গীর হোসেন (৪০),
তার স্ত্রী আমাতন বেগম (৩৫), মেয়ে মরিয়ম (৫), বোন রাহিমা বেগম (৪৫), বোনের
ছেলে মাঈনুদ্দিনের স্ত্রী কাকলী বেগম ও তার শিশু কন্যা মাহিমাকে নিয়ে ৬
নবেম্বর সিলেট যান। সিলেটে হযরত শাহ জালাল (র) এর মাজার জিয়ারত শেষে তারা
সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী আন্ত:নগর উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে করে
ফিরছিলেন। ছিলেন পেছনের দিকের বগিতে। দুর্ঘটনায় নিহত হন জাহাঙ্গীর হোসেনের
স্ত্রী আমাতন বেগম (৩৫), মেয়ে মরিয়ম (৫), বোনের ছেলে মাঈনুদ্দিনের স্ত্রী
কাকলী বেগম। আহত বোন রাহিমা ও শিশু মাহিমা ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে
চিকিৎসাধীন।
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জাহাঙ্গীর
জানান, মাজার জেয়ারতের উদ্দেশ্যে গত ৬ নভেম্বর বুধবার সিলেট গিয়েছিলেন একই
পরিবারের ৬ জন। আহত অবস্থায় ঢাকা আর্মি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে দাদী ও
নাতনি। তবে তার স্ত্রী সন্তানদের কোনো খবর এখনো জানেন না।
আহত জাহাঙ্গীর তার পরিবারের লোকদের খুঁজে বের করতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করছেন।
কুমিল্লা
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই
মুহূর্তে জাহাঙ্গীর বেশি কথা বলতে দেওয়া যাবে না। সে মানসিক চাপে আছে এবং
শারীরিকভাবেও সে অনেক অসুস্থ। সে বর্তমানে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দ্বিতীয় তলায় ক্যাজুয়ালটি ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে।