
তানভীর দিপু:
মোবাইল
কোর্ট দেখলেই মাস্ক মুখে, তারপর আবার নাই। মনে হয়, জরিমানাকে ভয় করেই তারা
ব্যবহার করছেন মাস্ক। করোনা ভাইরাসের কারনে যে প্রাণহানির সম্ভাবনা রয়েছে
এমন ভয়ও কারো মাঝে নাই। করোনা প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করার
লক্ষ্যে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলাসহ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকায়
সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে জেলাপ্রশাসনের মোবাইল কোর্ট। এতেও যেন কারো কোন
ভ্রুক্ষেপ নেই। গত ৩দিন ধরেই টানা মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হলেও- মাস্ক ছাড়া
মানুষ আর মোবাইল কোর্টের চলছে চোর-পুলিশ খেলা।
মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত
করতে কঠোর হুশিয়ারি দিয়ে কুমিল্লা জেলাপ্রশাসক মোঃ আবুল ফজল মীর জানান,
মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে মোবাইল কোর্টে জরিমানা হচ্ছে। প্রয়েজনে জেল
হবে। কারণ একজন ভাইরাসবহনকারীর মাধ্যমে শত মানুষের মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে।
গতকাল
কুমিল্লা নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড় মোড়েই দেখা গেছে মাস্কহীন হাজার
হাজার মানুষের চলাফেরা। কেউ মাস্ক পরলেও তা নেমে আছে থুতনিতে। অনেকে আবার
মাস্কটিকে আইডি কার্ডের মত কোমরে ঝুলিয়ে হাঁটছেন। কারো মাস্ক পকেটে আবার
কারো মাস্ক ব্যাগে। একাধিক মাস্কহীন লোকজনকে জিজ্ঞেসকরে জানা গেল, বাড়ি
থেকে বের হওয়ার সময় মাস্ক নিতে ভুলে গেছেন।
কুমিল্লার কোটবাড়ি থেকে আসা
পুলিশ লাইন মোড়ের একটি ডায়গনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নিতে আসা সারোয়ার
আলমের মুখে মাস্ক নেই, তবে পকেটে রেখেছেন একটি সার্জিক্যাল মাস্ক। তার
স্ত্রীর মুখ বোরকার নেকাবে ঢাকা থাকলেও চার বছর বয়সী সন্তানেরও নেই মাস্ক।
মাস্ক
থাকলেও কেন তা ব্যবহার করা হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শুনেছি
শহরে মাস্ক না পরলে জরিমানা করে, এজন্য এটা(মাস্ক) পকেটে রেখেছি।
করোনার
সংক্রমন বাড়ছে নিশ্চিত করে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সমন্বয়ক ডা. নিসর্গ
মেরাজ চৌধুরী জানান, যদিও জরিমানা করোনা মুক্তির পথ নয়। মানুষ সচেতন না
হলে পরিস্থিতি ভয়ানক রূপ নিতে পারে। আতংকের পরিমানটা মানুষকে বুঝাতে হবে
এবং বুঝতে হবে। এই মুহুর্তে যে কোন সংক্রমণ ব্যাধির লক্ষণ দেখা দিলেই করোনা
পরীক্ষা করা উচিত।
দ্বিতীয় ধাপে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ইতমধ্যে
সারাদেশেই চলছে বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার। যারা এখনো মাস্ক ব্যবহারে
আগ্রহী না তাদেরকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানাও করা হচ্ছে। গতকাল
কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ২৮টি মোবাইল কোর্ট
পরিচালনা করে মাস্ক ছাড়া লোকজনকে জরিমানা করা হয়।
জেলাপ্রশাসক কার্যালয়
থেকে জানা গেছে, গতকাল ২১৭টি মামলায় মোট ২৮১ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। এসব
মোবাইল কোর্ট মাস্ক না ব্যবহার করার করানে এসব মামলায় মোট ৮৮ হাজার ৯ শত ৩০
টাকা জরিমানা করেন।
কুমিল্লা জেলাপ্রশাসক মোঃ আবুল ফজল মীর জানান,
করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার আশংকায় আছি আমরা। করোনা প্রতিরোধে সর্বোত্তম পন্থা
মাস্ক ব্যবহার করা। এই লক্ষ্যে আমরা সাধারণ মানুষকে সচেতন করছি। সচেতনতার
পাশিাপাশি যারা মাস্ক ব্যবহার করকে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে না তাদের ব্যাপারে
প্রশাসন কঠোর হচ্ছে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা করা হচ্ছে। যেহেতু
করোনা ভাইরাস একটি প্রাণানশী ভাইরাস এজন্য কারো প্রাণ বাঁচানোর জন্য যদি
আরো কঠোর হতে হয়- আমরা হবো। এখন জরিমানা করা হচ্ছে, প্রয়োজনে জেলও দেয়া
হবে।