Published : Friday, 27 November, 2020 at 12:00 AM, Update: 27.11.2020 1:04:31 AM

মাসুদ
আলম।। কুমিল্লার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ১০৪ কিলোমিটার অংশের ইউটার্নগুলো
মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় অসংখ্য দুর্ঘটনা। এসব
দুর্ঘটনায় ঝরে যাচ্ছে অনেক তাজাপ্রাণ। ইউটার্নের স্থানগুলো দুঘর্টনা প্রবণ
উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও যানবাহন চালকদের অসতর্কতা-অসচেতনতা, সড়ক ও ট্রাফিক
আইন অমান্য করে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, মোবাইল ফোনে কথা বলা,
তন্দ্রাচ্ছন্নভাব নিয়ে চালকের আসনে বসাসহ অন্যান্য অসঙ্গত কারণে ছোট-বড়
দুর্ঘটনা ঘটছে মহাসড়কে। এছাড়া ইউটার্ন নেওয়ার সময় দুইপাশের গাড়ি দেখে টার্ন
না নেওয়ায় দুর্ঘটনা সংগঠিত হচ্ছে।
সর্বশেষ বুধবার (২৫ নভেম্বর) রাতে
কুমিল্লা থেকে চৌদ্দগ্রাম যাওয়ার পথে বাসের ধাক্কায় আবু রায়হান রবিন নামে
এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম সুয়াগাজী ট্রাফিক মোড়ে
ইউটার্নে এই ঘটনায় ঘটে। রবিন চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সুয়াগাজী হাড়িশ্চর গ্রামের
আবুল কালামের ছেলে। সেই কুমিল্লা কমার্স কলেজের ছাত্র।
স্থানীয়
সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত কুমিল্লা থেকে দুই বন্ধুসহ মোটরসাইকেল দিয়ে
বাড়ি ফিরছিলেন। কুমিল্লার সুয়াগাজীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ইউটার্ন করার
সময় কক্সবাজার থেকে ঢাকাগ্রামী একটি বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে রবিন নিহত
হয়। গুরুত্ব আহত হয় সঙ্গে থাকা দুই বন্ধু।
কুমিল্লার ময়নামতি হাইওয়ে
থানার ওসি মো. সাফায়েত হোসেন দুর্ঘটনার বিষয়ে বলেন, বাসের ধাক্কায়
মোটরসাইকেল আরোহী নিহতের বিষয়টি ব্যপারে কেউ আমাদেরকে জানাননি। যার কারণে
খোঁজ নিতে পারিনি।
এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সুয়াগাজীর এই
ইউটার্নের আগেও একাধিক মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সংগঠিত হয়েছে। চলতি বছরের গত
ফেব্রুয়ারিতে এই ইউটার্নে মোড় নিতে গিয়ে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাশিনগর গ্রামের এক সারের ডিলার মোটরসাইকেল যোগে
কুমিল্লা থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী লরি
ধাক্কায় ওই ব্যবসায়ী ঘটনাস্থলে নিহত হয়।
এর আগে একই স্থানে কুমিল্লার
চৌয়ারা ইউনিয়নের জঙ্গলগ্রামের এক ব্যবসায়ী দুর্ঘটনার শিকার হয়ে বর্তমানে
পুঙ্গু হয়ে বাড়িতে বসে আসেন। চলতি বছরের শুরুতে মোটরসাইলে যোগে মহাসড়কে
ইউটার্ন নেওয়ার সময় ট্রাকের ধাক্কায় তিনি ছিটকে যান। গুরুতর অবস্থায়
কুমিল্লা মেডিক্যালে ভর্তি করে চিকিৎসার পর তিনি জানে রক্ষা পান।
নিরাপদ
চালক চাই বাংলাদেশ সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক ও মানবাধিকার কর্মী আবদুল
হান্নান জানান, মহাসড়কের ইউটার্নগুলো মরণফাঁদ। এসব এলাকায় দূর্ঘটনা
স্বীকার হয়ে অনেকে প্রাণ হারাচ্ছে। আবার অনেকেরেই আহত হয়ে পুঙ্গু হয়ে
মানবেতর জীবন যাপন করছেন। হাইওয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন অত্যন্ত
ঝুঁঁকিপূর্ণ কুমিল্লা সদর দক্ষিণ সুয়াগাজী ইউটার্নটি দূর্ঘটনা মুক্ত করতে
যথাযত ব্যবস্থা গ্রহন করা হোক।
কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশ সুপার নজরুল
ইসলাম বলেন, সুয়াগাজীসহ কুমিল্লার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের প্রত্যেকটি
ইউটার্ন ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ এই ইউটার্নগুলোতে দুর্ঘটনা রোগে কুমিল্লা
সড়ক ও জনপদ বিভাগের সাথে একাধিকবার আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু তারা কোন
ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।