
নিজস্ব
প্রতিবেদক: দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত এক দিনে আরও ৩৬ জনের মৃত্যু
হয়েছে, নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে আরও ১ হাজার ১৩৪ জন। এক দিনে শনাক্ত রোগীর
এই সংখ্যা গত ৫৪ দিনে সবচেয়ে কম। তবে আগের দিন বিজয় দিবসের ছুটির মধ্যে
পরীাও কম হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, নতুন শনাক্ত ১ হাজার ১৩৪ জনকে নিয়ে দেশে
করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৯৭৫ জন হয়েছে।
এর
আগে গত ২৪ অক্টোবর এর চেয়ে কম রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর। সেদিন ১ হাজার ৯৪ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা
জানানো হয়েছিল।
গত এক দিনে মারা যাওয়া ৩৬ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ৭ হাজার ১৯২ জনে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ২ হাজার ২৩৯ জন রোগী
সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪
লাখ ৩১ হাজার ৫৯০ জন হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১২টি আরটি-পিসিআর
ল্যাব, ১৮টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ১০টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে,
অর্থাৎ সর্বমোট ১৪০টি ল্যাবে ১৩ হাজার ১৯১টি নমুনা পরীা করার কথা জানিয়েছে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর; এ পর্যন্ত পরীা হয়েছে ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৭২৮টি নমুনা।
২৪
ঘণ্টায় নমুনা পরীার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৬০ শতাংশে, এ
পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার
হার ৮৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীা করা হয়েছে ২৪ লাখ ২১ হাজার ২৭৮টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ৬ লাখ ১৪ হাজার ৪৫০টি।
আগের
দিন বুধবার ১৪০টি ল্যাবে মোট ১৭ হাজার ২৫টি নমুনা পরীা করার কথা জানানো
হয়েছিল অধিদপ্তরের প থেকে। অর্থাৎ গত এক দিনে প্রায় চার হাজার নমুনা কম
পরীা হয়েছে আগের দিনের তুলনায়।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ
ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ, তা সাড়ে ৪ লাখ পেরিয়ে যায় ২৪ নভেম্বর। এর মধ্যে গত ২
জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ
শনাক্ত।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর
তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ১২ ডিসেম্বর তা সাড়ে সাত হাজার
ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা
এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ২৬তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৩তম অবস্থানে।
বিশ্বে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ৭ কোটি ৪২ লাখ পেরিয়েছে; মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১৬ লাখ ৪৯ হাজার।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ২৭ জন পুরুষ আর নারী ৯ জন। তাদের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন।
তাদের
মধ্যে ২৯ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৪ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে,
২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ ছিল।
মৃতদের
মধ্যে ২০ জন ঢাকা বিভাগের, ৮ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২ জন রাজশাহী, ১ জন
করে মোট ৩ জন খুলনা, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের এবং ৩ জন রংপুর বিভাগের
বাসিন্দা ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৭ হাজার ১৯২ জনের মধ্যে ৫ হাজার ৪৮৯ জনই পুরুষ এবং ১ হাজার ৭০৩ জন নারী।
তাদের
মধ্যে ৩ হাজার ৮৯৯ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ১ হাজার ৮৩৮ জনের
বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৮৪৬ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩৬৪
জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৫৭ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৫৫
জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৩ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
এর
মধ্যে ৩ হাজার ৯২৬ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৩৩৮ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪২২
জন রাজশাহী বিভাগের, ৫১৩ জন খুলনা বিভাগের, ২৩১ জন বরিশাল বিভাগের, ২৮১ জন
সিলেট বিভাগের, ৩২৫ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৫৬ জন ময়মনসিংহ বিভাগের
বাসিন্দা ছিলেন।