অ্যাঞ্জোলো
ম্যাথুজ-দিনেশ চান্ডিমালের ১৯৯ রানের জুটিটাই সব বদলে দিলো! তাদের ব্যাটে
দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ভালো লিড পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। শেষ সেশনে এই
জুটি ভেঙে লঙ্কানদের দ্রুত অলআউটও করেছে বাংলাদেশ। ১৪১ রানে পিছিয়ে থেকে
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করলে লঙ্কান পেসারদের তোপে আবারও এলোমেলো হয়ে
পড়েছে স্বাগতিক দল।
প্রথম ইনিংসের মতো ব্যাটারদের ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি
দেখা গেলো দ্বিতীয় ইনিংসেও। চতুর্থ দিনের শেষ বিকালে টপের চার ব্যাটার
কোনও অবদান না রেখেই ড্রেসিংরুমে ফিরে গেছেন। দিন শেষে ক্রিজে আছেন প্রথম
ইনিংসে ত্রাতা হয়ে ওঠা মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। শুক্রবার শেষ দিনটিতে
ঢাকা টেস্টের ভাগ্য এখন তাদেরই হাতে।
দ্বিতীয় ইনিংসের ৬ষ্ঠ ওভারেই ভাঙে
ওপেনিং জুটি। তামিম ইকবালের বিদায়ে বাংলাদেশ হারায় প্রথম উইকেট। এই নিয়ে
টানা দুই ইনিংসে শূন্য রানে আউট হওয়ার রেকর্ড গড়লেন তিনি। সবমিলিয়ে দেশসেরা
ওপেনারের এটা ১১তম শূন্য!
তামিমের বিদায়ের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগে চাপ
বাড়িয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। বেশ কিছুদিন ধরে তরুণ ব্যাটার ফর্মে নেই।
শুরুতে অস্বস্তি নিয়ে ব্যাটও করতে দেখা যায় বাঁহাতিকে। মাউন্ট মঙ্গানুইতে
সর্বশেষ হাফসেঞ্চুরির দেখা পাওয়া শান্তর সর্বশেষ দশ ইনিংসে সর্বোচ্চ
সংগ্রহ ছিল ৩৮। শেষ চার ইনিংসেতো দুই অঙ্কের ঘরেই পৌঁছাতে পারেননি। দলের
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন ভূমিকা
দলকে বিপদে ফেলছে। বৃহস্পতিবার ম্যাচের চতুর্থ দিন তো অহেতুক রান নিতে গিয়ে
রান আউটে নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন।
শুরুর ধাক্কা কাটাতে
অধিনায়ক মুমিনুল হকও যথেষ্ট দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে পারেননি। উল্টো কাসুন
রাজিথার বলে রানের খাতা না খুলেই টেস্ট অধিনায়ক প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন।
রাজিথার ডেলিভারি মুমিনুলের ব্যাটের কানায় লেগে গেলে উইকেটকিপার দিকবেলার
হাতে বন্দি হন মুমিনুল। তাতে গত ১৫ ইনিংস ধরে ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক
খাওয়া বাংলাদেশ অধিনায়কের স্কোর হতশ্রী-ই হয়ে থাকলো- ৬, ০, ১, ৭, ৮৮, ১৩*,
০, ৩৭, ০, ২, ৬, ৫, ২, ৯, ০। গড় ১২.১৪। অধিনায়ক যখন সামনে থেকে নেতৃত্ব
দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন, স্বাভাবিক ভাবেই দল সেখানে ব্যর্থ হবে। বাংলাদেশের
ক্ষেত্রেও সেটাই হচ্ছে।
১৯ রানে তিন উইকেট হারানো বাংলাদেশের অবস্থা তখন
বিপর্যস্ত। এমন অবস্থা থেকে উত্তরণে পথ দেখাতে পারেননি দুই বার জীবন পাওয়া
ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ও। ভাগ্য ভালো দ্বিতীয় বারের মতো ‘পেয়ার’ হতে
হয়নি। আগের ইনিংসে শূন্য রান করা জয় আজও উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছিলেন।
কিন্তু লঙ্কান ফিল্ডাররা কেউ আপিল না করায় ‘পেয়ারের’ হাত থেকে বেঁচে যান এই
ওপেনার। শেষ পর্যন্ত ১৫ রানে জয়ের বিদায়ের পর মুশফিক ও লিটন মিলে চতুর্থ
দিনটি নির্বিঘ্নেই পার করলেন।
আগের টেস্টেও ২৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে
খাদের কিনারায় থাকা বাংলাদেশকে টেনে তোলার অবিশ্বাস্য কাজটি করেছে
মুশফিক-লিটনের ২৭২ রানের জুটি। দ্বিতীয় ইনিংসেও একই প্রেক্ষাপটের সামনে
দাঁড়িয়ে তারা।
২৩ রানে চার উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ক্রিজে নামেন লিটন। তার
পর থেকে চলে মুশফিক-লিটনের ম্যাচ বাঁচানোর লড়াই। দিনশেষে ২৩ বলে ১১ রান
নিয়ে অবিচ্ছিন্ন আছেন তারা। মুশফিক ১৪ ও লিটন ১ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন।
ম্যাচ বাঁচাতে হলে কাল এই দুই ব্যাটারকে দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত টিকে থাকতে
হবে। নয়তো দ্বিতীয় সেশনেই হাসিমুখে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নেবে লঙ্কানরা।