তানভীর
দিপু: কুমিল্লার পদুয়ারবাজার রেলক্রসিংয়ে মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনের সাথে
সবজি বোঝাই পিকআপ ট্রাকের সংঘর্ষের ঘটনায় ৭ ঘন্টা অচল হয়ে থাকে চট্টগ্রামের
সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগ। শনিবার দিবাগত রাত দুইটায় চট্টগ্রামগামী
মহানগর এক্সপ্রেসের সাথে মিরসরাই থেকে নিমসারগামী একটি পিকআপ ট্রাকের
সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেনটির একটি বগি লাইন থেকে হেলে পরে এবং আরো
কয়েকটি বগি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তবে এই ঘটনায় কেউ নিহত কিংবা গুরুতর আহত হয়নি।
পরে ভোর ৪টায় লাকসাম থেকে একটি উদ্ধারকারী ট্রেন এসে দুর্ঘটনাকবলিত বগি
উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। অক্ষত বগিগুলোকে আলাদা ইঞ্জিন দিয়ে পার্শ্ববর্তী
স্টেশনে নিয়ে রাখা। সকাল ৯টায় হেলে পরা বগিটি লাইনে তুলে দেয় উদ্ধারকারী
ট্রেনটি। পরে একটি ইঞ্জিন দিয়ে বগিটি লাকসাম জংশনে পাঠানো হয়। দুর্ঘটনার পর
৭ ঘন্টা যাবৎ রাজধানী ঢাকা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে
চট্টগ্রামগামী অন্ত ১৫ টি ট্রেন বিভিন্ন রেলস্টেশনে আটকা পরে। নাম
প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রাতে পিকআপ ট্রাকটি রেললাইনের
উপর উঠে থেমে গেলে চালক ও কয়েকজন লোকের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে আমরা আসি।
এসে দেখি পিকআপটির স্টার্ট বন্ধ হয়ে আছে। পরে ধাক্কা দিয়ে এটাকে সরানোর
চেষ্টা করি। কিন্তু কাজ হয়নি। এরই মধ্যে ট্রেন চলে আসলেই সংঘর্ষের ঘটনা
ঘটে। তবে ট্রেনটি রেলগেইট কিভাবে পার হলো সেটা জানি না।
রেলওয়ে পুলিশের
লাকসাম জংশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন খন্দকার জানান, গত
রাত সোয়া দুইটায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ক্রসিংয়ে একটি সবজিবাহী পিকআপ ধাক্কা দেয়। এতে
পিকআপ ট্রাকটি দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং ট্রেনের একটি বগি লাইন চ্যুত হয়। ঘটনার
পর পিকআপ চালক ও হেল্পার পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় রেলের চট্টগ্রাম বিভাগীয়
পরিবহন কর্মকর্তা ¯েœহাশীষ দাশ গুপ্তকে কে প্রধান করে ৪ সদস্যের তদন্ত
কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কুমিল্লা রেলওয়ের জেষ্ঠ্য সহকারী প্রকৌশলী লিয়াকত
আলী মজুমদার জানান, ট্রেনটির খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। তদন্ত কমিটির সদস্যগণ
ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত করবেন। ৭ ঘন্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
তিনি
আরো জানান, দুর্ঘটনার আগে ক্রসিংয়ে কর্মরত কর্মীরা ছিলেন। তারা ঠিকভাবেই
রেললাইনের নিরাপত্তা গেইট ফেলেন। গেইটকিপার পূর্ব পাশের গেইট ফেলে পশ্চিম
পাশের গেইট ফেলার জন্য গেলে পিকআপের ড্রাইভার হেল্পার গেইট তুলে পার হবার
চেষ্টা করে। এর মধ্যেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। সংঘর্ষে আগেই পিকাআপে থাকা সবাই
পালিয়ে যায়।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয়রা ছুটে এসে ট্রেনের যাত্রীদের
উদ্ধার করার চেষ্টা করে। ট্রেনটি থেমে গেলে যাত্রীরা জানালা ভেঙ্গে এবং
দরজা খুলে বেরিযে যায়। তাদের মধ্যে কেউ গুরুতর আহত হয়নি। যাত্রীরা স্থানীয়
পদুয়ারবাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে গন্তব্যে চলে যায়।