নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬জন প্রার্থী। এই ৬জন প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি
সম্পদের মালিক সদ্য বিদায়ী মেয়র ও বিএনপির বহিস্কৃত নেতা মনিরুল হক সাক্কু।
হলফনামায় দেওয়া তথ্যমতে, সাক্কুর নগদ টাকা আছে এক কোটি ৩৭ লাখ ৫৯ হাজার
৮৯২ টাকা। ব্যাংকে আছে দুই লাখ ৯৪ হাজার টাকা। স্বর্ণ আছে নিজের ১০ তোলা,
স্ত্রীর ১০ তোলা। অপরদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত হলফনামায়
উল্লেখ করেছেন, তার নগদ টাকা নেই। ব্যাংকে আছে ৬১ লাখ দুই হাজার ৪৯৫ টাকা।
পোস্টাল সেভিংসে আছে ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৪৫৪ টাকা। স্বর্ণ নিজের ২০ ভরি,
স্ত্রীর রয়েছে ৩০ ভরি।
এদিকে ৬ মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে মামলা বেশি রয়েছে
বিএনপির আরেক বহিস্কৃত নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সারের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে
৮টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে। জানা গেছে, ৬
প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত এবং ইসলামী
শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী রাশেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বর্তমানে কোনো
মামলা নেই। এছাড়া বাকি চার প্রার্থীর বিরুদ্ধেই মামলা রয়েছে। এর মধ্যে
মনিরুল হক সাক্কুর বিরুদ্ধে ২টি, মাসুদ পারভেজ খান ইমরানের বিরুদ্ধে ২টি,
কামরুল আহসান বাবুলের বিরুদ্ধে ২টি মামলা চলমান আছে।
কার কতো সম্পদ:
মেয়র
প্রার্থীদের মধ্যে মনিরুল হক সাক্কুর সম্পদ সবচেয়ে বেশি। বাড়িভাড়া থেকে
সাক্কুর বার্ষিক আয় ৪ লাখ ৮ হাজার টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র বা ব্যাংক আমানত
থেকে বার্ষিক আয় ৩ লাখ ১ হাজার ৬৯৭ টাকা। দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র হিসেবে
বার্ষিক সম্মানী ভাতা পেয়েছেন ১৬ লাখ ২০ হাজার টাকা। সাক্কুর অস্থাবর
সম্পত্তির মধ্যে নগদ টাকা রয়েছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৫৯ হাজার ৮৯২ টাকা। তার
স্ত্রী আফরোজা জেসমিন টিকলীর নামে নগদ টাকা আছে ৯৯ লাখ ১৩ হাজার ৮২১ টাকা।
আওয়ামী
লীগের মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের কৃষি খাত থেকে বার্ষিক আয় ১০
হাজার টাকা, বাড়ি ও দোকানভাড়া থেকে ৫ লাখ টাকা ও ব্যবসা থেকে আয় ১৭ লাখ ১১
হাজার ৮০০ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ব্যাংকে জমা আছে ৬ লাখ ১২ হাজার ৪৯৫
টাকা, সঞ্চয় আছে ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৪৫৪ টাকা। গাড়ি দুটি ও সোনা আছে ২০ ভরি।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে কুমিল্লার সালমানপুরে ১৭ শতক, ঢাকায় এবং কুমিল্লায়
মোট দুটি ফ্ল্যাট আছে। দুটি ফ্ল্যাটের দাম ৭০ লাখ টাকা।
আওয়ামী লীগের
বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী মাসুদ পারভেজ খান ইমরানের কৃষি খাত থেকে বার্ষিক আয়
২০ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে ১৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা, অস্থাবর সম্পদের মধ্যে
নগদ টাকা আছে ২ লাখ ৪২ হাজার ৭৪২ টাকা, ব্যাংকে জমা ৩ লাখ ১৭ হাজার ২৫৮
টাকা, গাড়ি একটি। স্থাবর সম্পদের মধ্যে শাতকলা মৌজায় ৭৭ দশমিক ৬৬ শতক জমি ও
লালমাই পাহাড়ে ১ দশমিক ১২ একর বাগান আছে।
স্বেচ্ছাসেবক দল থেকে
বহিস্কৃত অপর স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন কায়সারের
চাকরি থেকে আয় ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা, অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকা ৩৮ লাখ
৭২ হাজার ৯৩৫ টাকা, ব্যাংকে জমা ৩ লাখ ২ হাজার ৪৯৭ টাকা।
অপর মেয়র
প্রার্থী কামরুল আহসান বাবুলের ব্যবসা থেকে বার্ষিক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার
টাকা, অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকা ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমা ৫
হাজার টাকা, স্থাবর সম্পদের মধ্যে ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকার অকৃষিজমি আছে।
ইসলামী
আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মো. রাশেদুল ইসলামের শিক্ষকতা থেকে
বার্ষিক আয় ৩ লাখ ১৮ হাজার টাকা, অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকা ৫০ হাজার,
ব্যাংকে জমা ২ লাখ ৪২৮ টাকা ও স্থাবর সম্পদের মধ্যে ৮ দশমিক ২৫ শতক
অকৃষিজমি ও একটি বাড়ি আছে।
১৯ মে (বৃহস্পতিবার) মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই
শেষে মেয়র পদে ৬ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন কুসিক নির্বাচনের
রিটার্নিং অফিসার শাহেদুন্নবী চৌধুরী। আগামী ১৫ জুন কুমিল্লা সিটি
কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে তিন পদে মোট ১৫৪ জন
প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ২৭ মে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক
বরাদ্দ দেওয়া হবে।