নিজস্ব প্রতিবেদক ||
আয়কর মেলা বসেছে রাজধানীর রমনায় অফিসার্স ক্লাবে। প্রথমদিনে (বৃহস্পতিবার) আয়কর মেলার করদাতা ও সেবাপ্রার্থীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। করদাতাদের সেবায় পে অর্ডার, ই-পেমেন্ট ও নগদ ক্যাশে চালানের ব্যবস্থা করেছে সোনালী, জনতা ও বেসিক ব্যাংক। এ জন্য মেলা প্রাঙ্গণে খোলা হয়েছে ব্যাংকের জন্য আলাদা বিশেষ গ্যালারি। সেখানে রয়েছে আলাদা আলাদা বুথ।
বৃহস্পতিবার আয়কর মেলায় সরেজমিনে দেখা গেছে, অনেক করদাতা ই-পেমেন্ট, পে অর্ডার ও ক্যাশে চালান নিয়ে তথ্যের ধোঁয়াশায় পড়ছেন। তাদের জন্যই ব্যাংক শাখার ওই গ্যালারির সামনে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের হাক ছেড়ে ডাকতে দেখা যায়।
সেখানে কথা হয়, বেসিক ব্যাংকের এসিস্ট্যান্ট অফিসার শরিফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, মেলায় আয়কর জমা দেয়ার ক্ষেত্রে পে অর্ডার গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংকে গিয়ে পে অর্ডার করতে হতো। বেসিক ব্যাংকের অ্যাকাউন্টধারীদের জন্য ২৩ টাকা এবং অন্যদের জন্য ৩৫ টাকা খরচা হতো। তবে গত বছর থেকে মেলা প্রাঙ্গণেই পে অর্ডারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাত দিনই ফ্রি পে অর্ডার সার্ভিস চলবে। আবার যে কোনো ব্যাংকের ডেবিট কিংবা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ই-পেমেন্টও করা যাচ্ছে।
সোনালী ব্যাংক সিনিয়র অফিসার মো. আল আমিন জাগো নিউজকে বলেন, মেলায় আসা করদাতাদের সুবিধায় পে অর্ডার ও চালানের কপি নিয়ে আমরা দাঁড়িয়ে আছি। খুব সহজে পূরণ করে আয়কর জমা দিতে পারছেন তারা। চালান জমা দিলেই অনলাইনে ফেরিফিকেশন করা যাচ্ছে। পে অর্ডার, ই-পেমেন্ট ও নগদ ক্যাশে চালান পে অর্ডার দেয়া যাচ্ছে।
ভেতরে ঘুরে দেখা যায়, সোনালী ও বেসিক ব্যাংকের বুথগুলোতে করদাতাদের ভিড় বেশি। সাজানো হয়েছে টেবিল ও হেল্থ ডেস্ক। যেখানে বসে পে অর্ডার ও চালানের কাগজ পূরণ করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বুথে জমা দিচ্ছেন অনেকে।
মেলা প্রাঙ্গণে দেখা যায়, সকাল ৯টায় মেলা শুরু হওয়ার আগেই করদাতা ও সেবাপ্রার্থীরা মেলা প্রাঙ্গণে আসতে থাকেন। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে করদাতা ও সেবাপ্রার্থীদের ভিড়। তবে সব থেকে বেশি ভিড় দেখা গেছে রিটার্ন জমা দেয়ার স্থানে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রিটার্ন জমা দেয়ার স্থানে কয়েক’শ মানুষের লাইন দেখা যায়।
করসেবা প্রদান ও কর সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছরের মতো এবারও আয়কর মেলার আয়োজন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ‘সবাই মিলে দেব কর, দেশ হবে স্বনির্ভর’ এই স্লোগানে এবার রাজধানীতে কর মেলা বসেছে অফিসার্স ক্লাবে। বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এই আয়কর মেলা চলবে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত।
এনবিআর জানিয়েছে, এবারের মেলায় হেল্প ডেস্ক, রিটার্ন বুথ ও ই-পেমেন্টের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে ই-টিআইএন জোন ও রিটার্ন পূরণের স্থান। মেলা প্রাঙ্গণে এবার ৩৯টি হেল্পডেস্ক করা হয়ছে, যা গত বছর ছিল ৩৩টি। রিটার্ন বুথ রাখা হয়েছে ৫২টি, যা গত বছর ছিল ৪৯টি। আর ই-পেমেন্ট বুথ করা হয়েছে ১৪টি, যা গত বছর ছিল ১টি।
বুথের সংখ্যা বাড়ানো হলেও লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে করদাতাদের কর দিতে হচ্ছে। মূলত ওয়ার্কিং ডে (অফিস খোলা থাকা) হওয়ায় করদাতাদের একটি বড় অংশ সকালেই কর দিতে মেলা প্রাঙ্গণে ভিড় জমান। এ কারণে বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে মেলা প্রাঙ্গণ এক প্রকার জনসমুদ্রে পরিণত হয়।