
সচিবালয়ের কর্মচারীরা একই পদে সমযোগ্যতা নিয়ে চাকুরীতে প্রবেশ করে উপসচিব (ননক্যাডার) পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীরা ৩০/৩৫ বছর একই পদে চাকুরী করে অবসর নিতে হয়। এ বৈষম্য থেকে বের হয়ে আসার জন্য মাঠ প্রশাসনের বিভাগীয় কমিশনার অফিস, ডিসি অফিস, ইউএনও অফিস ও এসিল্যান্ড অফিসের কর্মচারীরা সরকারের কাছে বিগত ২০ বছর যাবত অনুরোধ জানিয়ে আসছে। এ বৈষম্য দুর করার জন্য মে ২০১৪ এর ২য় পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মাঠ প্রশাসনে কর্মরত তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীগণের পদবি পরিবর্তন এবং বেতন স্কেল উন্নতকরণের প্রস্তাব যথাযথভাবে বিবেচনাক্রমে নিষ্পত্তি করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নীতিগত সম্মতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ১৭ জুন ২০১৪ তারিখে ১৭৫ নং স্মারকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এ আদেশ আজও বাস্তবায়ন করা হয়নি। গত ১৯ নভেম্বর ২০২০ তারিখ চলতি অধিবেশনে জাতীয় সংসদে ময়মনসিংহ-৮ আসনের সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীদের সচিবালয়ের ন্যায় পদোন্নতির দাবীতে চলমান কর্মবিরতির বিষয়টি উত্থাপন করেন। এ সময় জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। তিনি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবী প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দেয়ার পরও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এদিকে বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির ঘোষণা অনুযায়ী ৬৪ জেলায় কালেক্টরেটের কর্মচারীরা ১৫ নভেম্বর থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করে আসছে। কর্মসূচির ৬ষ্ঠ দিনে কুমিল্লা কালেক্টরেট ও এর আওতাধীন ১৭ টি ইউএনও এবং এসিল্যান্ড অফিসের কর্মচারীরা সকাল ৯টায় হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে মিছিল সহকারে কর্মসূচিতে যোগ দেন। অপর দিকে সারা দেশে কালেক্টরেট ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারী সমিতি বাকাসসের দাবীর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে কর্মসূচিতে যোগ দেয়। ৬ষ্ঠ দিনেও কালেক্টরেট প্রাঙ্গনে কর্মচারীরা মিছিল সমাবেশ করে। সভায় বক্তব্য রাখেন কালেক্টরেট সহকারী সমিতি কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি মো: আবু হানিফ, সিনিয়র সহসভাপতি সুলতান মোঃ নাছির উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো: আরিফুর রহমান, সহসভাপতি মো: আবু বক্কর ছিদ্দিক হেলাল, আবদুর রহিম, হাবিবুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া, হালিমা খাতুন, সহসাধারণ সম্পাদক ইমাম উদ্দিন, সদস্য সাইফুল ইসলাম মুন্সী, অর্থ সম্পাদক আমান উল্লাহ, সদস্য মাইনউদ্দিন, সাজ্জাদ হোসেন, কোহিনুর আক্তার, সহ প্রমুখ। বক্তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন অনুযায়ী তাদের দাবী পুরণের আহবান জানান। তারা বলেন একই দেশে দুই নীতি অবলম্বন করা হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, উপজেলা ভূমি অফিসের ৩য় শ্রেণীর সকল কর্মচারীরা এ কর্মসূচি পালন করছে। এতে করে কালেক্টরেটসহ সংশ্লিষ্ট অফিসসমুহের কার্যক্রম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। কালেক্টরেটে গিয়ে দিখে গেছে সকল কর্মচারী মাঠে অবস্থান করছে। ইনথিসহ সকল কাজে প্রভাব পড়ার আশংকা রয়েছে। বক্তারা তাদের যৌক্তিক দাবী মেনে নেওযার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবী জানান। ৩০ শে নভেম্বর এর মধ্যে দাবী পূরণ না হলে ঢাকায় মহাসমাবেশের মাধ্যমে বৃহত্তর আন্দোলনে কর্মসূচি দিবে কেন্দ্রীয় কমিটি। উল্লেখ যে, বিভাগীয় কমিশনার অফিস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, উপজেলা ভূমি অফিসের ৩য় শ্রেণীর কর্মচারীরা সচিবালয়ের ন্যায় তাদের পদ পদবি পরির্তন ও পদোন্নতি দাবীতে বিগত ২০ বছর যাবত আবেদন জানিয়ে আসছিল।