নিরাপদ
সড়কের দাবিতে যত আন্দোলন হয়েছে, যত আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে, যত সুপারিশ
এসেছে সম্ভবত আর কোনো বিষয়ে তা হয়নি। শিার্থীদের ব্যাপক আন্দোলনের মুখে সাত
বছর ঝুলে থাকার পর ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ পাস হয়। কিন্তু তাতে সড়ক খুব
একটা নিরাপদ হয়েছে কি? সড়ক যে নিরাপদ হয়নি তার প্রমাণ আমরা প্রতিনিয়ত
পাচ্ছি। গতকালের পত্রিকায়ও এসেছে বেশ কিছু দুর্ঘটনার খবর। বুধবার ভোরে
সিলেটের গোলাপগঞ্জে একটি মাইক্রোবাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাককে
পেছন থেকে ধাক্কা দিলে মাইক্রোবাসের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন
ধরে যায়। তাতে এক শিশুসহ চারজন নিহত হয়। এ ছাড়া একই দিনে পৃথক দুর্ঘটনায়
মানিকগঞ্জে তিনজন, গাজীপুরে একজন এবং ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে একজন নিহত হয়।
রাজধানীতে নিহত হয়েছেন পুলিশের এক এসআই। এটি সড়কের নিত্যদিনের চিত্র।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ জন্য মূলত দায়ী ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অদ ও মাদকাসক্ত চালক
এবং সড়কের নিয়ম-কানুন না মানা।
কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে জানা যায়,
সড়কে শৃঙ্খলা রায় নতুন বছরের শুরু থেকেই ট্রাফিক পুলিশ কঠোর অবস্থানে যাবে।
গত মঙ্গলবার ডিএমপি সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ট্রাফিক বিভাগের রুজু করা মামলা,
রেকারিং ও জরিমানা বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক আলোচনাসভায় এসংক্রান্ত বেশ কিছু
নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আছে—রাস্তা যানজটমুক্ত ও যান চলাচলে
শৃঙ্খলা আনতে রাস্তার মোড়গুলোতে গাড়ি দাঁড়ানো ও যাত্রী ওঠানো-নামানো বন্ধ
করা, ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও অচল গাড়ি রাস্তায় নামতে না দেওয়া এবং মামলা ও
রেকারিং করে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা। এ ছাড়া কঠোরভাবে যাচাই করা হবে
চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স। এগুলো ট্রাফিক বিভাগের স্বাভাবিক দায়িত্ব হলেও
এখন তা নিয়ে ঘোষণা দিতে হচ্ছে। আমরা আশাবাদী যে ট্রাফিক বিভাগের নতুন
উদ্যোগে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে এবং মৃত্যুর মিছিল যথেষ্ট পরিমাণে কমে
আসবে।
সড়ক নিরাপত্তার জন্য আরো অনেক েেত্রই নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে
করেন বিশেষজ্ঞরা। অভিযোগ রয়েছে, অর্থের বিনিময়ে অনুপযুক্ত গাড়ি যেমন ফিটনেস
পায়, তেমনি অদ চালকও লাইসেন্স পায়। চালক মাদকাসক্ত কি না তা পরীা করা
অত্যন্ত জরুরি হলেও ডোপ টেস্ট বা মাদকাসক্তি পরীার যথেষ্ট আয়োজন নেই।
দুর্ঘটনা কমাতে এসব বিষয়ে পদপে নেওয়ার পাশাপাশি আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত
করতে হবে।