টিকা কেন্দ্র ও কর্মীর সংখ্যা বাড়াতে হবে
Published : Thursday, 25 February, 2021 at 12:00 AM
করোনার
টিকা নেওয়ার ব্যাপারে প্রথম দিকে মানুষের মধ্যে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ
করলেও এখন তা নেই বললেই চলে। ফলে কেন্দ্রগুলোতে তাৎক্ষণিক নিবন্ধনের যে
সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, তা বন্ধ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ২৪ লাখ মানুষকে প্রথম
ডোজ টিকা দেওয়া হয়ে গেছে। মোট নিবন্ধনের সংখ্যা ৩৫ লাখ ছাড়িয়েছে। যাঁরা
প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন, তাঁদের দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেওয়ার সময় এগিয়ে আসছে।
আট সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের দ্বিতীয় ডোজ টিকা দিতে হবে। কোনো কোনো টিকাদান
কেন্দ্রে এখনই মানুষের ভিড় সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে। দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া
শুরু হলে সেই ভিড় এই কেন্দ্রগুলো কিভাবে সামাল দেবে, তা নিয়ে রীতিমতো
দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, কেন্দ্র ও কর্মীর সংখ্যা দ্রুত
না বাড়ালে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে।
করোনার টিকা পর্যাপ্ত
পরিমাণে পাওয়া নিয়েও সংশয় রয়েছে। কারণ পৃথিবীব্যাপী টিকার চাহিদা এত বেশি
যে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন অনেক পিছিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ অনেক ভাগ্যবান যে
এরই মধ্যে ৯০ লাখ ডোজ টিকা হাতে চলে এসেছে। অনেক দেশ এখনো কোনো টিকাই হাতে
পায়নি। এ ছাড়া ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা তিন কোটি ডোজ টিকার মধ্যে
প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসার কথা রয়েছে। কোভ্যাক্সের মাধ্যমেও ২০ থেকে
৩০ লাখ ডোজের একটি চালান শিগগিরই দেশে আসতে পারে। কিন্তু আমাদের টিকার
প্রয়োজন অনেক বেশি। ১৮ বছরের কম বয়সীদের বাদ দিলে প্রায় ১০ কোটি মানুষকে
টিকা দেওয়ার প্রয়োজন হবে। প্রত্যেকের দুই ডোজ হিসাবে টিকা লাগবে ২০ কোটি
ডোজ। সেই পরিমাণ টিকা কবে নাগাদ পাওয়া যাবে, তা এখনো অনিশ্চিত। তাই অনেকেই
মনে করছেন, টিকা সংগ্রহে আমাদের উদ্যোগ আরো বাড়াতে হবে। সরকার অবশ্য
বেসরকারিভাবে টিকা আমদানির বিষয়টি বিবেচনা করছে। এরই মধ্যে টিকা আমদানিতে
যে ৫ শতাংশ অগ্রিম কর দিতে হতো, তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। টিকা উদ্ভাবক
সংস্থার অনুমতি সাপেক্ষে দেশে টিকা উৎপাদনের কথাও ভাবা হচ্ছে। দেশে টিকা
উৎপাদন ও ভ্যাকসিন সম্পর্কিত গবেষণা, প্রশিক্ষণ, কারিগরি সহায়তা পেতে
আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট (আইভিআই) প্রতিষ্ঠার চুক্তি অনুসমর্থনের
প্রস্তাবেও সায় দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ফলে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন উৎপাদন
প্রক্রিয়া আরো সহজভাবে করা যাবে। কিন্তু এ সবই দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার।
দ্রুততম সময়ে আরো কোন কোন উৎস থেকে টিকা সংগ্রহ করা যায়, সে ব্যাপারে
কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
করোনা সংক্রমণের হার বর্তমানে কিছুটা কমেছে।
কিন্তু যেকোনো সময় এটি বেড়ে যেতে পারে। তাই টিকা নিলেও মাস্ক পরাসহ
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি কঠোরভাবে পালন করতে হবে। পাশাপাশি টিকা
প্রদান কার্যক্রম আরো জোরদার করতে হবে। দ্বিতীয় ডোজ টিকা প্রদানও যেন
নির্বিঘœ হয়, সে ব্যাপারে এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।