শুক্রবার মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে আবাহনীর বিপক্ষে মোহামেডান অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের অভব্য আচরণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ম্যাচ আম্পায়ারদ্বয়ের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ম্যাচ রেফারির সুপারিশক্রমে সাকিবকে তিন ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ এবং পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিসের (সিসিডিএম) চেয়ারম্যান কাজী ইনাম।
সাধারণত মাঠে আচরণবিধির ঘটনার সুরাহা হয়ে যায় ম্যাচের পরপরই। ম্যাচ রেফারি তলব করেন অভিযুক্তকে। সেখানে শুনানির পরই রায় জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সাকিব আল হাসানের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত নেননি সে ম্যাচের রেফারি মোরশেদুল আলম। বিষয়টি গড়িয়েছে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বাসা পর্যন্ত। গতকাল সন্ধ্যায় বোর্ড সভাপতির বাড়ির গ্যারেজে অনানুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে তেমনটিই জানিয়েছেন কাজী ইনাম, ‘আমরা এখানে মাননীয় বোর্ড প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমি এবং জালাল ইউনুস ভাই (বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান)। উনি (বোর্ড সভাপতি) খুবই কনসার্নড। তো, আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি...সেদিন সাকিব দুইবার যেটা করেছে, তা লেভেল থ্রি পর্যায়ের। তাই তাকে তিন ম্যাচের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং সঙ্গে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’
শুক্রবার প্রথমে নিজের বোলিংয়ের সময় মুশফিকুর রহিমের বিপক্ষে এলবিডাব্লিউর আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ায় লাথি মেরে স্টাম্প ভেঙে ফেলেন সাকিব। পরের ওভারে আরেক আম্পায়ার বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ করার ঘোষণা দিতেই তিনটি স্টাম্প উপড়ে আছাড় দেন সাকিব।
আইসিসির কোড অব কন্ডাক্টে এ সংক্রান্ত পরিষ্কার বিধি-নিষেধ আছে। আম্পায়ারের কোনো সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অসৌজন্যমূলক আচরণ করলে সেটি লেভেল ওয়ান কিংবা টু হিসেবে বিবেচিত হবে, যা নির্ভর করবে আম্পায়ারদের জমা দেওয়া প্রতিবেদনের ওপর। তবে কোনো খেলোয়াড় একই কাণ্ড যদি পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে করেন, তাহলে সেটি লেভেল থ্রি কিংবা ফোর হিসেবে বিবেচিত হবে। সেটিও নির্ধারিত হবে আম্পায়ারের প্রতিবেদনের ওপর। তবে ছয় মাসও অপেক্ষা করেননি সাকিব। আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে তাঁর দুইবার স্টাম্প ভাঙার ঘটনার মাঝের ব্যবধান মাত্র পাঁচ বলের। তাই কোড অব কন্ডাক্টে ওটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৃতীয় পর্যায়ের অপরাধ। আম্পায়াররা যদি এতে বিপন্ন বোধ করার বিষয়টি উল্লেখ করে থাকেন, তাহলে সেটি লেভেল ফোর, যা বড় শাস্তির মুখে ফেলে দিতে পারত সাকিবকে।
সাকিবের এ ঘটনায় অবশ্য শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। কারণ আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের পর তিনি নিজের ফেসবুক পেজেই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ম্যাচ পরিচালনাকারীদের যেকোনো সিদ্ধান্তের বিরোধিতা না করার বিষয়টি জানিয়ে দেন। শাস্তিও মেনে নিয়েছেন। এতে মোহামেডানের হয়ে পরবর্তী তিনটি ম্যাচে দেখা যাবে না সাকিবকে। এ মৌসুমেই আর ক্লাব জার্সিতে তাঁকে মাঠে দেখা যাবে কি না, তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। মোহামেডান ক্লাবেও সংশয় উড়ছে যে, আমেরিকায় পরিবারের কাছে চলে যেতে পারেন সাকিব।