করোনাকালে সাইবারজগতে
অপরাধের ঘটনা বাড়ছে। অলস সময়ে ডিজিটাল ডিভাইসের দিকে ঝুঁকছে অনেকে। আসক্তি
বাড়ছে। প্রযুক্তির তিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানা না থাকায় এই আসক্তি অনেকের
জন্য বিপদ ডেকে আনছে। বিশেষ করে নারীরাই সাইবার হয়রানির শিকার হচ্ছে বেশি।
ফেসবুক, টিকটক, লাইকিসহ ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রলুব্ধ
করে নারীদের ফাঁদে ফেলা হচ্ছে। আবার ডিজিটাল আসক্তি থেকে নানা ধরনের
পারিবারিক অশান্তি দেখা দিচ্ছে। অনেকের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন এবং ব্যবহৃত
আইডি হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। চলে যাচ্ছে অন্যের হাতে। প্রকাশিত খবরে বলা
হয়েছে, কিছু অ্যাপের আইডির নিয়ন্ত্রণও নেওয়া যায় সহজে। এই সুযোগ কাজে
লাগিয়ে নতুন ধরনের প্রতারণা চলছে। প্রকাশিত খবরের তথ্য অনুযায়ী গত বছরের ৫
সেপ্টেম্বর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত এক মাসে সিআইডির সাইবার পুলিশ
সেন্টারের ফেসবুক পেজে ১৭ হাজার ৭০৩ এবং ফোনে ৩৮ হাজার ৬১০ অভিযোগ করা হয়।
এর মধ্যে বেশির ভাগই ছিল নারীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো, ছবি কেটে অশালীন
ছবি বসানো, তরুণীদের যৌন হয়রানির হুমকি, ফেসবুক আইডি হ্যাক করে বাজে পোস্ট ও
বিভিন্ন ধরনের হয়রানির। পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা, গুজব ও অনলাইন
পণ্য কেনা নিয়েও প্রতারণার অভিযোগ আছে। চলতি বছর থেকে অভিযোগের সংখ্যা
কিছুটা কমে এলেও প্রতি মাসে গড়ে সাড়ে তিন হাজার অভিযোগ আসছে সাইবার পুলিশ
সেন্টারে। কমেনি নারীদের হয়রানির হার। এসবের পাশাপাশি নতুন ধরনের জালিয়াতি ও
অর্থপাচারের মতো অপরাধ চলে এসেছে সাইবারজগতে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন,
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন আর সামাজিক নেই। আর তাই ব্যক্তিগত সাবধানতার
কোনো বিকল্প নেই। মোবাইল ফোন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে সতর্ক
থাকতে হবে। নিজেরা সচেতন না হলে এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ সম্ভব নয়। দরকার
সামাজিক গণসচেতনতাও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের েেত্র সচেতন হতে
হবে। কোনো প্রলোভনে পড়া যাবে না। ব্যক্তিগত ফোন কোনোভাবেই অন্যকে ব্যবহার
করতে দেওয়া যাবে না। প্রতারণার ফাঁদ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। একই সঙ্গে
সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা রা বাহিনীর সমতা বাড়াতে হবে। জোরদার
করতে হবে নজরদারি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে এসংক্রান্ত আইন থাকলেও
নারীবান্ধব পরিবেশ গড়ে ওঠেনি। দেশের প্রচলিত আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে।