ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
মেঝেতে পাশাপাশি ডেঙ্গু ও সাধারণ রোগীর চিকিৎসা, বাড়ছে ঝুঁকি
Published : Sunday, 19 September, 2021 at 12:00 AM
দেশে করোনার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গুরোগী। চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের দায়িত্বরত নার্স ও চিকিৎসকরা। ওয়ার্ড-কেবিনে শয্যা সঙ্কটের কারণে হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন শত শত রোগী। প্রতিদিন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন চিকিৎসক, নার্স ও সাধারণ রোগীরাও।
শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ড ও মেডিসিন বিভাগে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের তিন নম্বর ভবনের ষষ্ঠ ও সপ্তম তলায় মেডিসিন বিভাগের মেঝেতেই একইসঙ্গে ডেঙ্গুরোগী ও সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। দায়িত্বরত নার্স শবনম বলেন, অষ্টম তলা হচ্ছে মূলত ডেঙ্গু ওয়ার্ড, সেখানে সিট ফাঁকা হলে ষষ্ঠ ও সপ্তম তলা থেকে রোগীদের সেখানে নেওয়া হয়।
এছাড়া মিটফোর্ডের মেডিসিন বিভাগের তিন ফ্লোরেই সাধারণ ও ডেঙ্গুরোগীদের গাদাগাদি অবস্থা। এতে বিভিন্ন রোগী ডেঙ্গুর পাশাপাশি করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানান দায়িত্বরত নার্সরা। ডেঙ্গুরোগীদের মশারি সরবরাহ করা হলেও তাদের মধ্যে মশারি ব্যবহারের প্রবণতা কম। অনেক রোগী মশারি লাগিয়ে বাইরে বসে থাকেন।
সপ্তম তলায় দায়িত্বরত নার্স সুমনা জাগো নিউজকে বলেন, আজ আমাদের ওয়ার্ডে ৫০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। তার মধ্যে ডেঙ্গুরোগী ছয়জন। মোট কতজন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি আছেন সেটা না বলতে পারলেও ডেঙ্গু ও সাধারণ রোগী একসঙ্গে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান। এছাড়া ডেঙ্গুরোগী ৪-৫ জনের বেশি ভর্তি হন না বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, আমরা ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল না হওয়ায় আমরা পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট পাচ্ছি না। ডেঙ্গুরোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড না থাকায় ডেঙ্গুর ঝুঁকি নিয়েও আমরা কাজ করছি। এতো এতো রোগীকে ভালোভাবে সেবা দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না বলেও জানান তিনি।
ধোলাইখাল থেকে আসা ডেঙ্গুরোগী ইকবাল হোসেন জানান আমি ডেঙ্গু পজিটিভ হয়ে দুইদিন ধরে মেঝেতেই চিকিৎসা নিচ্ছি। এখানে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। অষ্টম তলার ডেঙ্গু ওয়ার্ডে রেফার করা হলেও সেখানে জায়গা না থাকায় যেতে পারছি না বলে জানান তিনি।
মেডিসিন ওয়ার্ডের সিটেই চিকিৎসা নিচ্ছেন মালিহা বেগম, তিনি কথা বলতে পারছেন না। তার অভিভাবকরা জানান, এখানে ভালো চিকিৎসা হয় না। ডেঙ্গু ওয়ার্ডে জায়গা না পেয়ে আমরা এখানে আছি। ডেঙ্গু ওয়ার্ডে যাওয়ার জন্য দুইদিন আগে সিরিয়াল দিয়ে রেখেছি। এখানে এতো এতো রোগীর মাঝে আমাদের রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
তবে অষ্টম তলায় মূল ডেঙ্গু ওয়ার্ডে দেখা যায়, সেখানে মেঝেতে কোনো রোগী নেই, সবাই ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রোগীদের দুই-একজন ছাড়া বেশিরভাগ রোগীই মশারি না টানিয়ে শুয়ে আছেন।
সেখানে দায়িত্বপালন করা একজন চিকিৎসক জানান, ডেঙ্গু ওয়ার্ডে গত এক সপ্তাহে রোগী কিছুটা কমেছে। প্রতিদিন দুই থেকে তিনজন ওয়ার্ডে ভর্তি হচ্ছে। এখানে জায়গা না থাকায় অধিকাংশ রোগী মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
ডেঙ্গু ওয়ার্ডের দায়িত্বরত অফিস সহায়ক শহিদুল হক বলেন, ডেঙ্গুরোগী গত এক সপ্তাহ থেকে কমে গেছে। এখন দিনে ৮/১০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এই ওয়ার্ডে বর্তমানে ৬০ জন রোগী ভর্তি আছেন। এখানে সিট খালি হলে আমরা মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে ডেঙ্গুরোগীদের নিয়ে আসি বলে জানান তিনি।