ওমানের বিপক্ষে এক অর্থে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ। দিনের প্রথম ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে স্কটল্যান্ড জিতে গেলে, সুপার টুয়েলভে উঠতে রাতের ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে জয় বিকল্প অন্য কোনো পথই খোলা থাকবে না।
সমীকরণ যখন এই, বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোও মানছেন কঠিন এক পরীক্ষা অপেক্ষা করছে দলের জন্য। ওমান ম্যাচকে সামনে রেখে সংবাদ সম্মেলনে ডোমিঙ্গো বলেছেন, ‘ওমান খুব ভালো ক্রিকেট খেলছে। তারাও পরের রাউন্ডে উঠতে মরিয়া। আমাদের জন্য কঠিন (পরের রাউন্ডে ওঠা), তবে ছেলেরা জানে যদি আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে পারি, তবে আমাদের সামনেও বেশ ভালো সুযোগ আছে।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে ওঠাই ছিল বাংলাদেশের প্রাথমিক লক্ষ্য। টাইগাররা নিজেরাই সেই রাস্তা কঠিন করে তুলেছে স্কটিশদের কাছে হেরে। তবে খেলোয়াড়রা এই হারে ভেঙে পড়েনি। ডোমিঙ্গো সংবাদ সম্মেলনে সে কথাই বলছিলেন, ‘আমরা পরের রাউন্ডে যাবো, ছেলেদের মধ্যে এই আত্মবিশ্বাসটা আছে। ওদের মধ্যে বিশ্বাস আছে ওমান এবং পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে আমরা ঘুরে দাঁড়াব এবং বিশ্বকাপের মূল পর্বে উত্তীর্ণ হবো।’
নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ স্কটল্যান্ডের কাছে হারলেও, ওমান ঠিকই বড় জয় তুলে নিয়েছে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে। ১০ উইকেটে পাওয়া সেই জয়ে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে আছে দলটি। প্রতিপক্ষকে সমীহ করেই টাইগাররা আজ তাই মাঠে বলে জানালেন ডোমিঙ্গো, ‘ওমানের প্রতি আমাদের সম্মান দেখাতেই হবে। তারা প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী দল। তার ওপর দলটি আবার খেলবে ঘরের মাঠে। প্রথম ম্যাচে ওমান ভালোভাবে জিতেছে। তবে আমাদের শুধু তাদের ওপর তাকিয়ে থাকলে চলবে না। আমাদেরকে আমাদের নিজেদের পারফরম্যান্স, স্কিল এবং লক্ষ্যে মনোযোগ দিতে হবে।’
স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংসের শেষের দিকে খাপছাড়া বোলিং করলেও, শুরুতে বাংলাদেশের বোলাররা ছিলেন দারুণ। তবে ব্যাটাররা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুধু হতাশই করে গেছেন। দুই ওপেনার লিটন দাস এবং সৌম্য সরকার বরাবরের মতো ব্যর্থ। উইকেটে সেট হয়েও সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা ম্যাচ শেষ করতে আসতে পারেননি। উল্টো বল হজম করে দলকে ফেলেছেন চাপে।
অপ্রত্যাশিত হারের পর কাঠগড়ায় তাই এমন নির্জীব ব্যাটিং। সবাই দুষছেন সাকিব-মুশফিকদের। ডোমিঙ্গো অবশ্য সে দলে নেই। তিনি সিনিয়র ক্রিকেটারদের ওপর রাখছেন আস্থা, ‘আপনি এই হারে তাদের দোষ দিতে পারেন না। তারা বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়, বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার। হয়তো সেদিন নিজেদের লেভেল অনুযায়ী খেলতে পারেনি তারা।’
বাংলাদেশ দলের ফিনিশার মাহমুদউল্লাহ। সাকিব-মুশফিক বল নষ্ট করলে ম্যাচ ধরে রেখেছিল। মাহমুদউল্লাহর কাজ ছিল সেখান থেকে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যাওয়া। সেটা বাংলাদেশ অধিনায়ক পারেননি। অনেকবার বড় শট খেলার চেষ্টা যে করেননি তা নয়। তবে কিছুতেই যেন ব্যাট-বলে হচ্ছিল না মাহমুদউল্লাহর।
ডোমিঙ্গোর মতে, সদ্যই ইনজুরি থেকে ফেরত আসায় আর প্রস্তুতি ম্যাচগুলো খেলতে না পারায় একটু মরচে ধরেছে তার ব্যাটে। দলের অধিনায়ককে নিয়ে ডোমিঙ্গো বলেছেন, ‘কিছুদিন আগেই তো এই রিয়াদের ব্যাটের ওপর ভর করে আমরা নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ জিতেছি। প্রস্তুতি ম্যাচগুলো খেলতে না পারায় সে হয়তো অস্বস্তিতে ছিল। কিন্তু তাতে আমি তাদের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারি না। কারণ, বিশ্বের অনেক কোণে তাদের স্মরণীয় অনেক পারফরম্যান্স আছে।’