ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
বাবার কোলে শিশুকে গুলি করে হত্যা: ৪ আসামি রিমান্ডে
Published : Thursday, 21 April, 2022 at 6:50 PM
বাবার কোলে শিশুকে গুলি করে হত্যা: ৪ আসামি রিমান্ডেনোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে বাবার কোলে থাকা শিশু তাসফিয়া আক্তার জান্নাতকে (৪) গুলি করে হত্যা মামলায় চার আসামিকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মামলার প্রধান আসামি মো. রিমনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন। রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সুজন, সোহেল উদ্দিন, নাইমুল ইসলাম ও আকবর হোসেন।

এর আগে, তাসফিয়া আক্তার জান্নাত হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. সবজেল হোসেন আদালতে আজ সকালে পাঁচ আসামির সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। এরপর আদালত চার আসামির পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া মামলার প্রধান আসামি রিমন দায় স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবেন। সেটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।


মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলার সুবর্ণচর উপজেলার চরক্লার্ক ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে র‌্যাব-১১ একটি দল তাসফিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামিসহ চার জনকে গ্রেফতার করে।

উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল (বুধবার) বিকাল ৪টায় সন্তান তাসফিয়াকে নিয়ে বাড়ির পার্শ্ববর্তী মালেকার বাপের দোকান এলাকার আবদুল্লাহ আল মামুনের দোকানে যান প্রবাসী বাবা মাওলানা আবু জাহের। সেখান থেকে তাসফিয়ার জন্য চকলেট, জুস ও চিপস নিয়ে দোকান থেকে বের হওয়ার সময় রিমন, মহিন, আকবর ও নাঈমের নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের একদল সন্ত্রাসী দোকানে এসে মাটি কাটা নিয়ে বিরোধের জেরে তার ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে পাশে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডারে লেগে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরে তারা দোকান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা পেছন থেকে তাদের লক্ষ্য করে প্রথমে ইট নিক্ষেপ করলে মাথায় আঘাত পায় তাসফিয়া। পরে তারা বাড়ি যাওয়ার সময় পেছন থেকে বেশ কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। এতে তাসফিয়া ও মাওলানা আবু জাহের গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

পরে তাদেরকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় নেওয়ার পথে কুমিল্লায় পৌঁছালে মারা যায় তাসফিয়া। মাটি কাটার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও এই বিরোধের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ততা ছিল না মাওলানা আবু জাহের বা তার মেয়ে তাসফিয়ার। তবে মাটি কাটা নিয়ে সালিশি বৈঠকে বসায় সন্ত্রাসীদের টার্গেট হন মাওলানা আবু জাহের।

ঘটনার পরদিন ১৪ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) দুপুরে তাসফিয়ার তার খালু হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বাদশা ও রিমনসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলায় এ পর্যন্ত ৯ জন এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।