অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতার এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার তিনদিনের রিমান্ডে রয়েছেন। ভারতের অর্থ-সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) জিজ্ঞাসাবাদ করছে তাকে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় পি কে হালদার কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বলে জানা গেছে।
পি কে হালদার ছাড়াও উত্তম মিত্র, স্বপন মিত্র, প্রীতিশ হালদার ও তার জামাতা সঞ্জীব হালদারকে কলকাতার সল্টলেকের পূর্বাঞ্চলীয় সিজিও কমপ্লেক্স জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
শনিবার (১৪ মে) দিনগত গভীর রাতে পি কে হালদারসহ ছয়জনকে ব্যাঙ্কশাল সিবিআই কোর্টে হাজির করা হয়। এরপর আদালত তাদের তিনদিন করে রিমান্ড দেন।
ইডি সূত্রে জানা যায়, পি কে হালদার ওরফে শিবশঙ্কর হালদারকে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। তার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
তবে সবাইকে পৃথক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে ইডি সূত্রে জানা গেছে। জিজ্ঞাসাবাদে পি কে হালদার জানিয়েছেন, তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন।
অন্যদিকে, ধারণা করা হচ্ছে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ২১ থেকে ২২টি ধারায় মামলা দেওয়া হবে। মানি লন্ডারিং, ভুয়া পাসপোর্ট তৈরি, আধার কার্ড, প্যান কার্ড ও রেশন কার্ড সবক্ষেত্রেই তাকে অভিযুক্ত করা হবে।
শনিবার সকালে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ মাথায় নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমানো এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পি কে হালদারসহ ছয়জনকে পশ্চিমবঙ্গের অশোকনগর থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে ভারতে পি কে হালদারের বিপুল পরিমাণ অর্থের সন্ধান পায় দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা। কলকাতায় পি কে হালদারের সহযোগী সুকুমার মৃধার কাছে এ অর্থের সন্ধান মেলে। শুক্রবার (১৩ মে) সকাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় ইডি।
ইডি জানায়, প্রশান্ত হালদার নামে এক বাংলাদেশি হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে কানাডায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তারই সহযোগী সুকুমার মৃধা বর্তমানে উত্তর ২৪ পরগনার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাছ ব্যবসায়ী।
সুকুমার মৃধার বাড়িও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। তার অফিসে তল্লাশি চালায় ইডি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মাছের ব্যবসার আড়ালে বিপুল পরিমাণ বেআইনি টাকার লেনদেন করেন। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক জালিয়াতির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ রয়েছে। বেশকিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালনকালে এই অর্থপাচার করেছিলেন তিনি। তাকে গ্রেফতার করতে রেড অ্যালার্ট জারি করেছিল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)।