মালয়েশিয়ার মেয়েদের খেলা
দেখলে কথাটি বারবার মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। এ হয় নাকি! অবশ্য ফিফা
র্যাঙ্কিং যখন সেটা বলছে, সেটা আর অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
তবে
র্যাঙ্কিংয়ে জোর থাকলেও বাংলাদেশের মেয়েদের সামনে আজ মাথা তুলেই দাঁড়াতে
পারেনি মালয়েশিয়ান মেয়েরা। আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে মালয়েশিয়াকে ৬-০
গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল
স্টেডিয়ামে ডিফেন্ডার আঁখি খাতুনের জোড়া গোলের সন্ধ্যায় একটি করে গোল
করেছেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন , সিরাত জাহান, মণিকা চাকমা ও কৃষ্ণা রানি।
ফিফা
র্যাঙ্কিংয়ে মালয়েশিয়া ৮৫তম, বাংলাদেশ ১৪৬তম। খাতা কলমের এই পরিসংখ্যানকে
আজ কমলাপুর স্টেডিয়ামে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন সাবিনা, আঁখিরা। এই তো গত
১৪ জুন এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে স্বাগতিক মালয়েশিয়ার কাছে ৪-১ গোলে হেরেছিল
জামাল ভূঁইয়ারা। আজ ৬ গোল করে সে ক্ষতেই যেন প্রলেপ দিলেন সাবিনারা।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৬ ম্যাচ পর জয় পেল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের শেষ জয়টি ছিল
২০১৯ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভুটানের বিপক্ষে ২-০ গোলে।
৬-০
গোলের স্কোর লাইনের কোনো কাটাছেঁড়া বিশ্লেষণের প্রয়োজন পড়ে না। একেবারে
হেসে খেলেই জিতেছে বাংলাদেশ। বেশ কয়েকটি সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট না করলে আরও
বড় ব্যবধানেই জিততে পারত গোলাম রব্বানীর দল।
মালয়েশিয়ার মেয়েদের খেলা
দেখে কখনোই মনে হয়নি তারা র্যাঙ্কিংয়ে অনেক এগিয়ে থাকা একটি দল। অনেকের
মতে কমলাপুরের মাঠ টার্ফ হওয়ায় এখানে খেলতে পারেনি মালয়েশিয়া। আর এই মাঠেই
বছরব্যাপী অনুশীলন করার সুযোগটাই নিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে দুই দল মুখোমুখি
হয়েছিল একবারই। ২০১৭ সালে সিঙ্গাপুরে আমন্ত্রণমূলক তিন জাতির প্রীতি
টুর্নামেন্টে মালয়েশিয়ার কাছে ২-১ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশকে। ওই দলে খেলা
মালয়েশিয়ার তিন ফুটবলার এবার এসেছেন ঢাকায়।
আজ কিক অফ বাঁশির শুরু থেকেই অলআউট আক্রমণে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের খেলা দেখে কখনো কখনো মনে হচ্ছিল ৪-২-৪ ফরমেশনে খেলছে।
৯
মিনিটে আঁখি খাতুনের গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। মিডফিল্ডার মারিয়া মান্দার
কর্নার থেকে মালয়েশিয়ার গোলকিপার বলের ফ্লাইট মিস করলে গোল লাইন থেকে পা
লাগিয়ে গোলটি করেন ডিফেন্ডার আঁখি।
২৬ মিনিটে ২-০ করেছেন অধিনায়ক
সাবিনা খাতুন। এই গোলে সাবিনা দেখিয়েছেন তাঁর অভিজ্ঞতা। ডান প্রান্ত থেকে
ফরোয়ার্ড স্বপ্নার বাড়ানো থ্রু বক্সের মধ্যে প্রতিপক্ষ গোলকিপারের সামনে
থেকে ডান পায়ের আউটসাইড ডজে নিয়ন্ত্রণে নিলেন, এর ওপরেই ওপরেই ডান পায়ের
শটে জালে। বাংলাদেশকে পেয়ে বসে গোলের নেশা।
৩০ মিনিটে ৩-০ করেছেন আঁখি।
সাবিনার ক্রসে গোলমুখ থেকে পা লাগিয়ে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন এই
সেন্টারব্যাক। ৪৫ মিনিটে ৪-০। শামসুন্নাহারের বাতাসে বাড়ানো থ্রুতে অফসাইড
ফাঁদ ভেঙে বের হয়ে পড়েন সাবিনা, বক্সে ঢুকে থালায় সাজিয়ে দেওয়ার মতো বল দেন
স্বপ্নাকে। স্বপ্নার কাজটি ছিল শুধু দেখে শুনে পায়ে বল লাগানো। ব্যাস,
গোল।
ম্যাচটা কার্যত প্রথমার্ধেই শেষ। দ্বিতীয়ার্ধে নেমে গোল ব্যবধান
বাড়ানো আর কিং। ৬৬ ও ৭৪ মিনিটে একটি করে গোল করে স্কোর লাইনটা আরও বড়
করেছেন মণিকা ও কৃষ্ণা। আগামী ২৬ জুন মালয়েশিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় প্রীতি
ম্যাচটি খেলবে বাংলাদেশ।