বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের দাপটের মধ্যে বাংলাদেশেও দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচশ ছাড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৫০৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
এক দিনে শনাক্ত রোগীর এই সংখ্যা ১১ সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে সর্বশেষ ১৩ অক্টোবর এর চেয়ে বেশি রোগীর সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। সেদিন শনাক্ত হয়েছিল ৫১১ জন রোগী। এরপর থেকে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচশর নিচেই ছিল। বুধবার দৈনিক শনাক্ত পাঁচশর কাছাকাছি পৌঁছায়, একদিন পরও তা পাঁচশ ছাড়াল।
গত একদিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও সাত জনের, এই সংখ্যা এক মাসের বেশি সময় পর সর্বোচ্চ। এর আগে গত ২৫ নভেম্বর ৯ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বুধবার সকাল পর্যন্ত শনাক্ত নতুন রোগীদের নিয়ে এ পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৮৫ হাজার ২৭ জনে। তাদের মধ্যে মোট ২৮ হাজার ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, গত ২৪ ঘণ্টায় সেরে উঠেছেন ৩৯৫ জন। তাদের নিয়ে মোট ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ৮১১ জন এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠলেন।
গত একদিনে যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে ৪৩৮ জনই ঢাকা বিভাগের যা মোট আক্রান্তের শতকর ৮৬ শতাংশের বেশি। দেশের ৩০ জেলায় এক দিনে নতুন কারও আক্রান্ত হওয়ার খবর আসেনি।
যে ৭ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগেরই পাঁচজন। এছাড়া একজন চট্টগ্রাম এবং একজন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ২২ হাজার ৬৬৭টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ১ কোটি ১৪ লাখ ৭২ হাজার ৮১৫টি নমুনা।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী শনাক্তের হার ২ দশমিক ২৫ শতাংশ, যা আগেরদিন ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ ছিল। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৮২ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
গত একদিনে যারা মারা যাওয়া ব্যক্তির মধ্যে চারজন পুরুষ, তিনজন নারী। তাদের মধ্যে ৪ জনের বয়স ছিল ষাটের বেশি। ২ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ছিল।
তাদের ৫ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ২ জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। এ বছর ৩১ অগাস্ট তা ১৫ লাখ পেরিয়ে যায়। এর আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ৫ ডিসেম্বর কোভিডে মোট মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫৪ লাখ ২৪ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২৮ কোটি ৪৬ লাখের বেশি রোগী।