কুমিল্লা টাউন হলে সপ্তাহব্যাপি বৃক্ষ মেলা উদ্বোধন
বিদেশি গাছের চাহিদা বেশি
তানভীর দিপু:
|
পালামার,
চিয়াংমাই, মিয়াজাকি অথবা কিং চাকাপাত- এসব কোন কোরিয়ান-জাপানি মানুষের নাম
নয়। সবগুলোই আমের প্রজাতির নাম। জাপানি হাইব্রিড জাতের এক একটি আমের ওজন
৫শ গ্রাম থেকে এক কেজি। আছে থ্রি-টেস্টি এবং আমেরিকান কেইনও। দেখতে মাটি
দিয়ে বানানো রঙ করা ঘর সাজানো আমের মত এসব গাছের চারা পাওয়া যাচ্ছে
কুমিল্লা টাউন হল মাঠে বৃক্ষ মেলায়। এছাড়া বিলুপ্ত প্রজাতির নাগলিঙ্গম,
চন্দন-চেরি ফলে বনসাই, ক্যান্সার প্রতিষেধক আফ্রিকান ননী ফল, থাই লংগান,
মেনিলা চেরিসহ নানান জাতের দেশি বিদেশী ফুল ও ফলের চারার পসরা সাজিয়ে এই
মেলায় বসেছেন নার্সারি মালিকরা। সাথে আছে কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগের
ষ্টলও। মোট ৪০টি ষ্টল নিয়ে এই মেলা চলবে আগামী এক সপ্তাহ। যদিও প্রতি বছর
সাধারণ মানুষের আগ্রহের কারণে এই মেলা থেকে যায় মাসব্যাপী। এবারের মেলায়
দেশি প্রজাতির চেয়ে বিদেশি প্রজাতির নানান ফুল-ফল ও শোভাবর্ধক কাজ নজর
কাড়ছে সবার। সোমবার সকালে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে ফিতা কেটে সপ্তাহব্যাপি
বৃক্ষ মেলার উদ্বোধন করেন কুমিল্লা সিটি মেয়র আরফানুল হক রিফাত, কুমিল্লা
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম, কুমিল্লা জেলা বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ
আলীসহ অন্যান্যরা। পরে কুমিল্লা টাউন হল মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় অংশ নেন
তারা। এদিকে মেলায় ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি স্টলে দেশি বিদেশী নানান জাতের ফুল, ফল, বনজ-ঔষধি, শাক-সবজি, শোভাবর্ধক গাছের চারা বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছে নার্সারি মালিকরা। ১০ টাকা থেকে শুরু করে সাড়ে তিন লাখ টাকা দামের গাছ আছে এই মেলায়। আছে এ্যাবাকাডে, মীরাককেল, রামবুটানের মত বিদেশী ফলের গাছও। ছয় মাসে ফল দেয়া কেরালার নারকেল গাছের চারাও বিক্রি হচ্ছে মেলায়। হাইওয়ে নার্সারির সত্ত্বাধিকারী রেজাউল মোস্তফা বাবলু বলেন, আমরা প্রতি বছরই গাছের স্বাস্থ্যবান চারা নিয়ে আসি। কুমিল্লার মানুষ গাছ লাগাতে পছন্দ করে- তারা নিজের ইচ্ছামত বেছে গাছ নিয়ে যায়। মেলায় সব সময়ই তরুন ক্রেতাদের সংখ্যা বেশি থাকে। আমাদের স্টলে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা দামের ২৭ বছর বয়সী চেরি ফলের বনসাই গাছ আছে। বখশী নার্সারির সত্ত্বাধিকারী আবদুল খালেক বখশী বলেন, সবকিছুর দাম বাড়ে কিন্তু গাছের দাম বাড়ে না। টাকার অংকে না- মানুষের কাছে গুরুত্বের ভিত্ত্বিতে গাছের দাম বৃদ্ধি পেলেই তবে কল্যান আসবে। আমরা মেলায় সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যেই গাছ বিক্রি করে থাকি। এদিকে ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আগের বছরের তুলনায় এবারের মেলায় গাছের দাম তুলনামূলক বেশি। ফুল গাছের চাহিদা সব সময়ই বেশি, এবারো ক্রেতারা বেশি ফুল গাছই কিনছে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী ফাহমিদা হাসান বলেন, এসেই কাঠ গোলাপের গাছ কিনেছি। যে দাম- গাছ কিনতে সাহস প্রয়োজন। বেসরকারি চাকুরীজীবী জহিরুল ইসলাম বলেন, বাড়িতে লাগানোর জন্য ফল গাছ কিনতে এসেছি। বারোমাসি আমগাছ কেনার চেষ্টা করছি। বিদেশি আম গাছের দাম অনেক বেশি। মেলা মাত্র শুরু হলো - দেখে শুনে কিনতে হবে। এবার কুমিল্লা বৃক্ষ মেলার শুরু থেকেই তরুন ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে বাড়ির ভেতরে ও ছাদে গাছ লাগানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে- তাই ছোট ছোট গাছের চাহিদা বেশি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়িরা। |