কুমিল্লার দেবিদ্বারে এক নৈশ প্রহরীর হাত-পা ও মুখ বেঁধে আরহাম ব্যাটারি হাউজ নামে একটি দোকান থেকে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকার ব্যাটারি চুরির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দিবাগত রাত পৌন ৩টার দিকে পৌরসভার বানিয়াপাড়া গাউছিয়া মার্কেটে এ দুর্ধষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। দোকানের মালিক আল আমিন মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার রাজা চাপিতলা গ্রামের মো.মানিক মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় দোকান মালিক আল আমিন দেবিদ্বার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দোকানের মালিক মো. আল আমিন বার বার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। পাশে তাঁর ছোট মেয়ে ও স্ত্রী হাউ মাউ করে কাঁদছেন। এসময় তাঁর দোকান ও পিছনের গুডাউন পুরো খালি দেখা যায়। দোকানের কেচি গেইটের ৭টি তালা ভাঙা নিচে পড়ে আছে। খবর পেয়ে দেবিদ্বার-বিপাড়া সার্কেল শাহ মোস্তফা তারেকুজ্জামান, থানার ওসি কমল কৃষ্ণ ধর, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত ) খাদেমুল বাহার বিন আবেদসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
দোকানের মালিক মো. আল আমিন জানান, প্রতিদিনের মত রাত ১০টার দিকে দোকানে তালা মেরে বাসায় যাই। সকাল ৭টার দিকে পাশ^বর্তী এক দোকানদার আমাকে ফোন করে দোকানে চুরির ঘটনা জানালে আমি দৌড়ে এসে দেখি গ্যাস দিয়ে ৭টি তালা ভেঙে হ্যামকো ও ভলভোসহ মোট ২৬৮টি ব্যাটারি চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্র। যার বাজার মুল্য প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা। আমি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে এ দোকান দিয়েছি। চোর আমাকে আমাকে পথে বসিয়েছে। হামকো ব্যাটারি মার্কেটিং ম্যানেজার মো. ফেরদৌস ও ভলভো কোম্পানীর ইনচার্জ সাব্বির বলেন, খবর পেয়ে দোকানে এসেছি। এটি খুব দু:খজনক ঘটনা। আল আমিন আমাদের ব্যবসায়ীক পার্টনার। আমরা সাধ্যমত তাঁর পাশে দাঁড়াব।
নৈশপ্রহরী মো. হারুন জানান, ২টি পিকআপ থেকে প্রায় ১০/১২ জন চোর নামে। আমার সন্দেহ হলে সামনে এগিয়ে যাই, কোন কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই ওরা আমার মুখে গামছা ও কসটেপ দিয়ে বেঁধে ফেলে। পরে আমার হাত-পা বেঁধে দোকানের পিছনে নিয়ে আমাকে নিচে ফেলে আমার ওপর কার্পেট দিয়ে তিনজন বসে পড়ে। বাকিরা প্রায় পৌনে এক ঘন্টায় সময় ধরে ব্যাটারিগুলো পিকআপে তোলে। তিনজনের মধ্যে দুইজন আমাকে মেরে ফেলতে চেষ্টা করে কিন্তু একজন আমাকে না মারা জন্য বলে। না হয় ওরা আমাকে মেরে ফেলত। চুরি শেষে আমাকে বাধা অবস্থায় ফেলে ওরা পালিয়ে যায়। পরে আমার গোঙানির শব্দ শুনে এক লোক আমাকে উদ্ধার করে।
দেবিদ্বার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত আল আমিন থানায় অজ্ঞাত নামা চোরদের আসামী করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন, ঘটনাটি তদন্ত চলছে। দোকানের আশ পাশে যত সিসি ক্যামেরা আছে সবগুলোতে তল্লাসি চলছে। সংঘবদ্ধ চোর চক্রকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।