প্রকাশ: সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৭:৪৭ পিএম |
হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে চলছিল অস্ত্রোপচার। এমন সময় হাসপাতালে অভিযান করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। অপারেশন চলাকালে অস্ত্রোপচার কক্ষে গিয়ে হাজির অভিযান টিম। এসময় বেরিয়ে আসেন হাসপাতালের ওটি ইনচার্জ (অপারেশন থিয়েটারের দায়িত্বরত কর্মকর্তা)। চাওয়া হয় তার সনদ। কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ডিপ্লোমা করেছেন জানতে চাওয়া হয়। মাথা নেড়ে উত্তর দেন তিনি এইচএসসি পাশ করেছেন। আর কোন সনদ নেই। শুধু চোখের দেখা অভিজ্ঞতা থেকেই অপারেশন থিয়েটারের ওটি ইনচার্জ। ঘটনাটি কুমিল্লার আদর্শ হাসপাতালে। এরপর এক লাখ টাকা জরিমানা করে ওই ব্যক্তিকে ওই পদ থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। সোমবার দুপুরে কুমিল্লার মনোহপুর এলাকার এই হাসপাতালে অভিযানের পর বেরিয়ে আসে এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা। এসময় হাসপাতালের ফার্মেসিতেও মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া যায়। এসম অনিয়মের অভিযোগে হাসপাতালকে এক লাখ টাকা ও ফার্মেসিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এদিকে দাম বেশি রেখে দেয়া হচ্ছিল ডিসকাউন্ট (মূল্য ছাড়)। এছাড়াও অতিরিক্ত দামে করা হচ্ছিল স্বাস্থ্য পরীক্ষা এমন অভিযোগে কুমিল্লা নগরীর মনোহরপুর এলাকার জেলা সদর হাসপাতালের পাশের ক্লাসিক কনসালটেশন এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার বেলা তিনটায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো.আছাদুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. মেহেদী হাসান ও ডা. মো. আবদুল কাইয়ুম।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো. আছাদুল ইসলাম জানান, এই স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরেই মূল্য তালিকায় প্রদর্শিত দামের তুলনায় বেশি দাম রেখে তা থেকে ছাড় দিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছিল। এতে ভোক্তা প্রতারিত হতো। এছাড়াও আরও কয়েকটি অভিযোগে এই স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একইদিন একই এলাকার আদর্শ হাসপাতালে অভিযান করা হয়৷ হাসপাতালের ফার্মেসিতে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়াতে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, হাসপাতালের ভেতরের এক্স-রে কক্ষের রশ্মি নিয়ন্ত্রণের কোন ব্যবস্থা ছিল না। এক্স-রে বৈদ্যুতিক লাইন খোলা অবস্থায় পড়েছিল। ল্যাবও অনেক ছোট। হাসপাতালের সিটি স্ক্যানের ছিল না কোন অনুমতি। হাসপাতাল কতৃপক্ষ বলছে এটি তারা অন্য কাউকে ভাড়া দিয়েছে। ভাড়া দেয়ারও কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি৷ এছাড়াও হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে অযোগ্য ব্যক্তি দিয়ে দায়িত্ব পালন করাচ্ছিলেন। তাই এক লাখ টাকা জদিমানা করা হয়েছে। এবং তাদের সিটি স্ক্যান সেন্টার ও এক্স-রে কক্ষ সিলগালা করা হয়েছে।
মেডিক্যাল অফিসার ডা. মেহেদী হাসান বলেন, আদর্শ হাসপাতালের ওটি ইনচার্জের কোন সনদ নেই৷ তাকে আমরা দায়িত্ব থেকে দূরে রাখার নির্দেশনা দিয়েছি। এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ক্লাসিক কনসালটেশন এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও অনিয়ম পেয়ে জরিমানা করা হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।