ইসমাইল নয়ন।।
কুমিল্লার
বিভিন্ন উপজেলায় ঘুর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে গত দুদিন বৃষ্টি ও বাতাসে আমন
ধান ও শীতকালীন সবজি ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কাচাঁ পাকা আমন ধানের মাঠ মাটিতে
শুয়ে পড়েছে। বৃষ্টির কারণে অনেক কৃষক জমি থেকে পাকা আমন ধান কাটতে না পারায়
লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন। এছাড়া রোপনকৃত শীলতকালীন সবজি নষ্ট হওয়ার শঙ্কা
রয়েছে। ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙ্গে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা
লন্ডভন্ড হয়ে পড়লে শুক্রবার বিকেল থেকে ৮/১০ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল
কুমিল্লার অনেক উপজেলাতে।
বিভিন্ন উপজেলার কৃষকেরা জানান, ঘুর্ণিঝড়
মিধিলির কারণে গত দুই দিনের বৃষ্টি ও বাতাসে আমন ধান লুয়ে পড়ে। শুধু আমন
ধান নয় রবি ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সদ্য রোপনকৃত শীতকালীন সবজির চারা
এখন নষ্ট হয়ে গেছে।
সরেজমিনে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার দেবীদ্বার,
বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, চান্দিনা, বরুড়াসহ অন্যান উপজেলায় গিয়ে দেখা যায়,
বাতাস ও বৃষ্টির কারণে কাঁচা পাকা আমন ধান এলোমেলো ভাবে মাটিতে শুয়ে পড়েছে।
যেগুলো শুয়ে পড়েছে এগুলো নিচে ওপরে পানি জমে আছে। পাকা ধান পানিতে থাকায়
নষ্ট হওয়ার শঙ্কা বেশি রয়েছে। এছাড়া সদ্য রোপনকৃত শীতকালীন সবজির ছোট ছোট
গাছ মাটিতে শুয়ে পড়ে আছে। এছাড়া ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিভিন্ন স্থানে গাছপালা
ভেঙ্গে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা লন্ডভন্ড হয়ে পড়লে ৮/১০ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন
ছিল। বিদ্যুৎ কর্মীরা বৈদ্যুতিক লাইনের উপর পড়া গাছ সরিয়ে অনেক স্থানে
শুক্রবারে রাতে এবং শনিবার সকালে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করে।
কুমিল্লা কৃষি
বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, এ বছর এ জেলায় চলতি আমন মৌসুমে ১ লাখ ১৪ হাজার ৬
শত ২৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। তবে
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আমন আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কিছুটা ব্যাহত হতে পারে।
জমিতে পানি লেগে থাকলে আগাম ও শীতকালীন সবজি কিছু নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা
রয়েছে। তবে যে পরিমাণ ক্ষতি হবে কৃষক তা পুষিয়ে উঠতে পারবে।
দেবিদ্বার
উপজেলার সুবিল ইউনিয়নের কৃষক কালাম মিয়া বলেন, আমি ৬৫ শতক জমির মধ্যে আমন
ধান চাষ করছি এবং বাড়ির পাশে ৭ শতক জমিতে ধন্যপাতা,কাঁচামরিচ, ও টমেটোর চাষ
করেছি। আমার ধান পুরোপুরি পেকে গেছে। শনিবার সকালে খেতে গিয়ে দেখি দুই
দিনের বৃষ্টিতে সব ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে।
এছাড়াও রবি ফসলের জমিতে পানি লেগেছিল এখন পানি নেমে গেছে। তবে আমার কি পরিমান ক্ষতি হয় তা জানিনা।
বুড়িচং
উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়ন কৃষক আবুল হোসেন বলেন, আমার প্রায় ৫০ শতাংশ জমির
আমন ধান ও প্রায় ১৫ শতক জমির রবিশস্য ফসল একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। টানা
বৃষ্টি ও বাতাসে আমার মতো অনেক কৃষকের ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক( ডিডি) আইয়ুব মাহমুদ গতকাল কুমিল্লার
কাগজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কারণে এ বছর আমান ধানের জমি নষ্ট হয়েছে।
তবে রবি ফসলের তেমন একটা ক্ষতি হবে না বলে তিনি জানান।