রণদহন
সফিকুল বোরহান
হঠাৎ
তীব্র গতিতে একটা হিস্ শব্দ হলো, মৃদুলের কানের পাশ দিয়ে বিদ্যুৎ গতিতে কি
যেন ছুটে গেল। সামনের ঘন গাছের ক’টি পাতা তীব্র ঝাঁকুনি খেলো। কেউ বুঝতেই
পারলো না যে মর্টারের একটা শেল ওদের বাঁচিয়ে পাশ দিয়ে চলে গেছে। দূরে
কাঠালিয়া নদীর দিক থেকে শোরগোলের শব্দ। দক্ষিণ পাড়া থেকে গুমোট চিৎকার শোনা
যাচ্ছে। রহমান কাকা দৌড়ে উত্তর পাড়ার দিকে চলে গেলেন। থমকে গেল পুরো
পরিবেশ, গাছের পাতারাও বুঝি হিম নীরব হয়ে গেলো। করাতিদের গাছ কাটা দৃশ্য
দেখা থমিয়ে মৃদুল ভ্যবাচেকা খেয়ে বাড়ির দিকে দৌড় দিল।
বড় কাকা আস্তে
হাঁকডাক দিয়ে বললেন, তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নেও সবাই। জরুরী যা আছে সাথে নেও।
কাঠ বাদাম গাছ তলায় নৌকা বাঁধা আছে, মহিলা আর শিশুরা নৌকায় ওঠো। লঞ্চঘাটে
মিলিটারির গানবোট ভিড়েছে। সেখান থেকে ওরা এলাপাতাড়ি মর্টারের শেল মারছে
গ্রামের দিক লক্ষ্য করে। খবর এলো গ্রামের দিকে এগুনোর জন্য ঘাসি নৌকায় উঠছে
মিলিটারিরা। কখন এসে পাশের গ্রামের বুড়া আলফাজ কাকা দু’হাত মোনাজাতের
ভঙ্গিতে উপরে তুলে হাঁক ছেড়ে কাঁদতে লাগলো। বড় কাকার ধমক খেয়ে চুপ করে বসে
রইল উঠানে। মা, ভাইবোনগুলোকে নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছেন। কাকিমা তাড়া দিয়ে সবাইকে
নিয়ে নৌকায় উঠলেন। মর্টার শেলের তীব্র নারকীয় শব্দ ভেসে আসছে মাঝে মাঝে।
একটা কোষা নৌকায় একজন রক্তাক্ত লোককে নিয়ে উর্ধ্বশ্বাসে লগি বেয়ে চলে গেল
অজানা মাঝি। রক্তাক্ত লোকটা নির্জীব পড়ে আছে মাচানে। মনে হয় মারা গেছে।
কাকার তাড়া খেয়ে মনা মাঝি নৌকা ছাড়লো। কাকা বললেন পুরুষরা পায়ে হেঁটে যাবে।
বাঁচার জন্য সবাই চলে যাচ্ছে মৃদুল এটা বুঝে গেছে। কোথায় যাচ্ছে কেউ জানে
না। মা একবারও বললো না, মৃদুল আয়। মৃদুলের চোখ ছেপে কান্না আসলো। মা বললেন,
‘বাবা, কাঁনবি না, কাকাদের সাথে চইলা আইবি।’
মায়েদের নৌকা চলে যাচ্ছে,
মৃদুলের মনে হলো কোন অজানায় পাড়ি দিচ্ছে ওই নৌকা, আর বুঝি ফিরে আসবে না।
মিলিয়ে গেলো দূর বাঁকে, আর দেখা যাচ্ছে না। মাকে বুঝি আর সে দেখতে পাবে না।
কাকা
বললেন, ‘তোদের ঘরে ভাত তরকারি যা আছে লইয়া আয়।’ মৃদুল দৌড়ে পাতিলের ঢাকনা
সরিয়ে দেখে মা নরম ল্যাচকা খিঁচুড়ি রান্না করেছিলেন। আর কোনো তরকারির পাতিল
নেই। খিঁচুড়ির পাতিল কাকাদের ঘরে আনা হলো। কাকা বললেন, ‘এই খিচুড়ি
মাইনষ্যে খায়! যা, মুরগির খোয়াড়ের সামনে রাইখ্যা আয়।’ মৃদুল হতবিহ্বল হয়ে
পাতিল রেখে এলো।
কাইস্যা মুনি অনেক বোঝাভাঝি মাথায়, পিঠে নিয়ে চলতে
লাগলো। বাংলা ঘরের সামনে এসে দেখে দক্ষিণ পাড়ার দিক থেকে লাইন ধরে নারী,
পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশু উত্তর পাড়ার দিকে দ্রুত হেঁটে চলেছে। মৃদুলরাও লাইনে
সামিল হলো। শুধু মিয়া বাড়ির মানুষ আর চেয়ারম্যান সাহেবের দল দেখে পাশ কেটে
ছুটতে লাগলো ওরা।
হাঁটা আর শেষ হয় না। সন্ধ্যা হয়ে আসছে। পা ব্যাথায় টন্
টন্ করছে। কতদূর যে হেঁটে এলো বা কতদূর হাঁটতে হবে কিছুই জানা যাচ্ছে না।
চাচাতো ভাইরা, কাইস্যা মুনি যখন যেভাবে পারে তাড়া দিচ্ছে কিংবা নজর রাখছে
একজন আরেকজনের দিকে। কাকা শুধু মাঝে মধ্যে কারো কারো সাথে কি সব বলাবলি
করছেন আর হাতের ছড়ি এদিক সেদিক করছেন।
যে বাড়িতে ওরা এসে থামলো সে
বাড়িটা যেন মেজবান বাড়ি। অনেক লোক এদিক সেদিক ছোটাছুটি করছে, কারো হাতে
কুপি, কারো হাতে হারিকেন, কারো হাতে টর্চ; কেউ বিছানা, চাটাই, তোষক ইত্যাদি
নিয়ে এঘর ওঘর করছে। বাড়ির দু’তিন রান্না ঘরে রান্নার হুলস্থুল ব্যাপার মনে
হলো। কোথা থেকে মা এসে জড়িয়ে ধরলো মৃদুলকে। অনেকক্ষণ বুকে চেপে ধরে
রাখলেন। যেন কত যুগ পর মা ছেলের মিলন হলো। আধো অন্ধকারে মা’র মুখ ঠিকমত
দেখা গেল না। আয় বাবা, ‘হাত মুখ ধুইয়া নে’ বলে পুকুর ঘাটে নিয়ে গেলেন।
পুকুর পাড়ের ঘন গাছের ফাঁক দিয়ে আসা শুক্লপক্ষের নতুন চাঁদটার একটু আলোতে
মা’র মুখটা দেখে মৃদুলের কান্না এলো চোখ ছেপে। কি সুন্দর মা’র মুখটা!
‘কাঁনতাছত ক্যান, হাইটা আইতে কষ্ট হইছে?’
মৃদুলের
তখন কোষা নৌকার উপর নির্জীব পড়ে থাকা রক্তাক্ত মানুষটার ছবি ভেসে এলো,
পুরো রাস্তায় শিশু, বৃদ্ধ, নারী পুরুষের আচ্ছন্নের মতো হাঁটতে থাকার ছবি
ভেসে এলো। কানে ভেসে আসতে থাকলো মর্টার সেলের শব্দ।
‘মিলিরা কই, মা?’
‘ওরা ঘুমাইতাছে।’ কোনো এক রান্নাঘরের এক কোণায় বসে মা ভাত খাইয়ে দিলেন
মৃদুলকে। মুরগির মাংস দিয়ে গরম ভাত আর ডাল, কত দিন এমন মজার খাওয়া হয়নি।
‘আয় শুইয়া পড়’, বলে মা উঠোন কোণে সীম মাচার নীচে পাতানো বিছানার দিকে
মৃদুলকে নিয়ে এলেন। চাটাইয়ের উপর তোষক বা কাঁথা জাতীয় কিছু পেতে বালিশ ছাড়া
শোবার ব্যবস্থা। ওখানেই মিলি, মিতু, মনু, মন্টি বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। একটু
দূরে অন্য এক পরিবারকে দেখা গেল একই ভাবে শুয়ে আছে বা শুয়ে বসে আছে।
‘কাকারা কই, মা?’ ‘আছে কোনখানে’, বলে মা শুয়ে পড়লেন। কোন এক মসজিদ থেকে
খুবই নিচু স্বরে ভেসে এলো ফজরের আজান। পুরো বাড়িটা আজানের সাথে সাথেই কেমন
নড়ে চড়ে উঠলো। কি সুনসান নীরবতা, কেউ কোন কথা বলছে না। আলো ফোটার সাথে সাথে
দেখা গেল কী বিধ্বস্ত চেহারা, শরীর একেকজনের। শিশু, বড়, ছোট সবার মধ্যে
কেমন একটা আতঙ্ক ভাব।
মর্টার শেলের শব্দ থামছে না। যুদ্ধের বিভিষীকা আর
মৃত্যুভয় মানুষের মনকে কতো বিমর্ষ করতে পারে, নিস্তদ্ধ পরিবেশ আর নীরব
অস্থিরতায় যে না ডুবেছে সে কখনই উপলব্ধি করতে পারার কথা নয়। ফযরের আজান
কানে এলো না। ভোর পাখিরাও তাদের কাকলি থামিয়ে দিয়েছে। দু’একটা দাঁড় কাক
কর্কশ কন্ঠে জানান দিল ভোর হচ্ছে। বিরামহীন শব্দের আতঙ্কে কোনো কোনো মা
তাদের কোরান শরীফ পড়াও থামিয়ে দিয়েছে। শিশুরাও বুঝে গেছে শব্দ করে কাঁদতে
হয় না এই সময়টাতে। মৃদুল যেতে চাচ্ছে বাইরের দিকে, মিতু সর্বশক্তি দিয়ে
মৃদুলের হাত চেপে ধরে রইল। বুড়া দাদা ঠায় বসে আছে বাঁধানো ঘরের সিঁড়িতে।
দাদার এসময়টা মসজিদে থাকার কথা।
ত্রস্ত কয়েকটা পায়ের শব্দে চমকে সামনের
গেইটের দিকে তাকিয়ে আছে সবাই। হুড়োহুড়ি করে ধুতি পড়া এক বয়স্ক লোক ঢুকে গেল
বাড়িতে। ‘কর্তা বাবু, আমি সরকার বাড়ির চিনি সরকার, সুধিন সরকারের বড় ভাই,
মেলিটারিগো ডরে পলাইতেছিলাম। রাস্তার মইধ্যে সুধিনের পুতের বউয়ের ব্যাথা
উঠছে, আর হাঁটতে পারতেছে না। দাদা, দয়া করেন, আশ্রয় দেন। মাইডা মইরা
যাইবো...।’ কথা শেষ হতে না হতেই অল্প বয়েসী এক পোয়াতি মেয়ে তাদের আঙিনায়
কোকাতে কোকাতে চলে এলো, সাথে কয়েকজন মহিলা, শিশু, কিশোর-কিশোরী। মা, কাকীমা
সহ আরো দু’একজন দৌড়ে মেয়েটাকে ধরে একটা ঘরের ভিতর নিয়ে গেল। তীব্র
গোঙ্গানীর শব্দ ভেসে এসে পরিবেশটাকে আরো বিষাদময় করে তুললো। একটু পরেই
নবজাতকের চিৎকার, হিন্দু মহিলাদের নীচু স্বরে ‘উলুধ্বনী’। মা-কাকিমাদের
‘শোকর আলহামদুলিল্লাহ্’ বলে নিশ্চিন্ত নিঃশ্বাস! থেমে থাকে না জাগতিক কোন
কিছু, শত বিভীষিকার মধ্যেও। মুসলমানের ঘরে হিন্দুর নিষ্কলুষ আবির্ভাব,
মহিমান্বিত হলো কি ধরণী! মর্টার শেলের শব্দ আসতেই থাকলো। যুদ্ধের বিভিষীকা
আর মৃত্যুভয় মানুষের মনকে কতো বিমর্ষ করতে পারে, নিস্তদ্ধ পরিবেশ আর নীরব
অস্থিরতায় যে না ডুবেছে সে কখনই উপলব্ধি করতে পারার কথা নয়।
একা
মেহেরুন্নেছা
সে হারায় আরেক রাজ্যে
ঘোর লাগা নিয়ে বোধোদয় হয়
অনাদিকাল ধরে ডানা খসে পড়ছে
এটা ঘটছে ঘুরপাকের কারণে
তীরের আঘাতেও
এমন ঘটতে পারে বৈকি!
এই যে সে একা
কিংবা তাকে একা করে দেওয়া হয়
অথবা সে একা হয়ে যায়
এ তার অভিযোজনের গদ্য
এ তার সভ্যতা অতিক্রমণের আখ্যান।
উজ্জ্বল আঁধারসৈয়দ গোলাম কিবরিয়া
নিন্দিত উত্তেজনায়
জেগে থাকে উজ্জ্বল আঁধার।
মাথায় বিলিকাটে অনাগত স্বপ্ন!
কিন্তু...
মগজে ভূমধ্যসাগরের চিৎকার...
যন্ত্রণায় ঘুমোতে পারি না।
কোষে গেঁথে যায়
ছোট ছোট ক্ষয়িষ্ণু শরীর কিংবা জীবন্ত টুকরো!
ক্রমাগত বিয়োগ হচ্ছে সেল...
সেল মরে গেলে কাফন পরাতে হয় না।
কাদের পদচিহ্ন করোটিতে
পৃথিবীকে নিয়ত ক্ষত-বিক্ষত করে?
ক্রমশঃ অনুজ্জ্বল হতে থাকে স্বপ্ন,
সুরক্ষার পলেস্তারা খসে পড়ে...
নিন্দিত উত্তেজনায়
ছড়িয়ে পড়ে উজ্জ্বল আঁধার...
মস্তিষ্কের অন্বেষণ জলিল সরকার
মস্তিষ্ক খনন চলছে বেশ কয়েকদিন;
অবিরত শূন্যতা নিয়ে হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত দিবস চলে গেছে সূর্যাস্তের ভেতর,
মস্তিষ্কের ভেতর খনিজ সম্পদ আজও হয়নি উন্মোচিত,
দিন শেষে ফিরে আসে রাজ্যের সেই শূন্যতা,
কেবলই বুকফাটা বৃষ্টির আর্তনাদ ছুঁয়ে যায় সবুজ অরণ্য;
শুধুই অন্ধকার হাতড়ে ডুবে যায় কালবেলা।
মস্তিষ্কের ভেতর আজকাল ভীষণ যন্ত্রণা হয়
বুকের থেমে আসে হৎপি-ের আস্ফালন,
কালো মেঘেরা ভিড় করে আকাশের ঠিকানায়;
বেলা শেষে কোথাও কিছু পেলে কী খুঁজে?
যখন থেমে যাবে কোলাহল সুনশান নিরবতা-
নক্ষত্ররাজি হয়ে যাবে চূর্ণবিচূর্ণ, তখন--
থমকে যাবে পৃথিবী!
তখন, শূন্য চাঁদ ধুলোয় লুটাবে এক মুহূর্তে
কী বা হবে তখন জীবনের মানে খুঁজে!
মস্তিষ্কের ভেতর নদী বয়ে গেছে ধীরস্থির,
উত্তাল ঢেউয়ের তালে তালে ভেসে গেছো তুমি শূন্য হাতে,
ষড়রিপুর মাঝে কেটেছে বাঁধভাঙা যৌবনের উচ্ছ্বাস;
তবুও মন ফেরানি আলোর মিছিলে।
মস্তিষ্কের ভেতর কুঁড়ে খায় শূন্য চাঁদ
শুষ্কমাঠ, বিবর্ণ পৃথিবী, বৃক্ষরাজি-
খুঁজিনি তারে যে ছিলো আমার আমিতে
যে ছিলো সবুজ অরণ্য
যে ছিলো অরণ্য আকাশ
গ্রহ নক্ষত্রের মাঝেই বেলা অবেলায়।
মস্তিষ্কের ভেতর খনন চলছে বেশ কয়েকদিন
কী পেলাম, কী পাইনি খুঁজে
দিন শেষে হিসেবের খাতায় শূন্যতার ধূলো জমা ডায়েরি হাতড়ে।
ভেসে আসা জোয়ান এবং বিজয়জুবাইদা নূর খান
কচুরিপানার মতো ভাসতে ভাসতে গোমতীর পাড়ে ঠেকেছিলো শক্ত জোয়ান।
হাত দুটো পেছন দিয়ে বাঁধা, উপরের পাটির দাঁত গুলো ভাঙা।
বেয়নেটের খোঁচায় বুকের চারপাশে জমাট বাঁধা রক্তের ক্রুর হাসি।
হার না মানা এক মহাকাব্যের নায়ক।
মাঘ মাসে পরীকে ঘরে তুলবে,
হাতে হাত রেখে এমনটাই ছিলো প্রতিশ্রুতির বিশুদ্ধ বয়ান।
পরীর হাতে লাল আলতার নকশা আর কাঁচের চুরির রিনিঝিনি;
ঘোমটাপরা পরীর কোলে মায়াবী শিশু;
মুক্ত মাটির কোলে মুক্ত সন্তান;
ছোট্ট ছোট্ট স্বপ্নের দেয়ালিকা।
পরীর কপালে এঁকে দেয়া চুমুর প্রতিটা স্পর্শে
শিহরিত জোয়ানের চোখে তাইতো চুপিসারে
নেমেছিলো প্রতিশোধের সুবর্ণ ঝিলিক।
আর, স্বপ্নবাজ জোয়ান কোনো এক রাতে
বেরিয়ে পড়েছিলো অমাবস্যার মেঠোপথ ধরে।
পথ চিনিয়ে দিয়েছিলো তাকে জোনাক পোকার আলো।
এরকম লক্ষ লক্ষ জোয়ানেরা কালো পিচ ঢালা পথে
ঢেলে দিয়েছিলো বুকের লাল রক্ত।
সবুজ ঘাসে মিশে সেই রক্ত আজ আমাদের স্বাধীনতা;
পরীর জোয়ানের ছিনিয়ে আনা বিজয়, আমাদের প্রতীক্ষিত বিজয়।
বিশ্বাস পাখিআহমেদ সাব্বির
বিশ্বাসের সবটুকু উঠে গেছে,
ভালবেসে যেদিন ছ্যাঁচড়া হয়েছি ।
কুকুর, ছাগল , গরু অথবা বলদের সহোদর হয়েছি।
বিশ্বাসের সবটুকু উঠে গেছে,
ভালবেসে যেদিন কাঁক হয়ে উড়ে গেছি।
এই শহুরে আকাশ ছেড়ে ।
ডিসেম্বরের তাৎপর্যবশির আহমেদ
দোয়েল পাখির ঠোঁটে বিজয়ের গান
ঘন কুয়াশা ঘিরে রেখেছে বধ্যভূমির চারপাশ
শহীদের রক্তে ভেজা আমার পতাকা
ডিসেম্বরের তাৎপর্য মিশে আছে শাপলার পাপড়িতে
অগ্রহায়ণের রোদে সন্তানের ছায়ারূপ
মায়ের ঝাপসা চোখে।
কতদিন কত হলো আর এলো না ফিরে-নাভি ছেঁড়া ধন!
মুক্তির সুবাতাস দোল খায় আমনের মাঠে
রাত্র গভীর হলে হুতুম পেঁচারা ডাকে ডুমুরের ডালে।
হলুদ সর্ষে খেতে মধুমক্ষিকার পরম উল্লাস বিজয়ের অম্লানে।
শুভ সকালবিজন দাসের
তোমাদের সুখ দুঃখগুলো
আমাকে দিয়ে দাও
আমার যতো গল্প কবিতা
সব কিছুর জানান দিব
পাখি ডাকা ভোরে জেগে উঠা
সংসার বুননের তাগিদে
গাছ-গাছালির বৃক্ষের পাখিরা
কেমন আছে আজকাল
কোটি বছরের পুরানো সূর্যের
আলোকিত একটি ভোর দেখা মানুষের বহুদিনের প্রত্যাশা।
২০২৪ সালশাহজালাল সরকার
সমাপ্ত বছরের দুঃখ-কষ্ট-ক্লেশ ছাড়ি
নতুনের আগমনকে মোরা
নবরূপে চলো গ্রহন করি।
শুভ বিদায় জানাই ২০২৩ সালকে
যত ছিল মনের তাপ, যাতনা
ভুলে যাই সেই গতকালকে।
না পাওয়া বেদনার কালো স্মৃতিগুলো
মুছে ফেলি চলো, নিমিষেই
অপসৃত করি, এলোমেলো।
চলো, করি আলিঙ্গন ঐ আগমনীরে
বরণ করে নিই, সোহাগে
ঐ যতো সব নব বাণীরে।
হে ২০২৪ সাল, তুমি আসো ভিন্ন সাজে
সুখের বারতা বহন করে
করো বিচরণ, মর্ত্য মাঝে।
যুদ্ধের ছড়াআতাউর রহমান
লাখো শহীদের রক্তের দামে
আমাদের দেশ কেনা,
জীবন দিয়েছে কতো কতো বীর
লড়েছে মুক্তিসেনা।
এখানে ওখানে পাহাড়েও জলে
মানুষের পঁচা লাশ,
বাতাসের মতো সবখানে যেনো
উড়ছিল ভরা ত্রাস।
কতো মা-বোনের ইজ্জত নিলো
কতোশতো শিশু-প্রাণ,
মানুষের মতো হায়নারা দিলো
মানুষেরে বলিদান।
হানাদার পশু সারাদেশ জুড়ে
আঁকলো রক্ত-ছবি,
মুক্তিসেনারা প্রাণ বলিদানে
জাগালো জয়ের রবি।
ভালোবাসি দেশ,তাদেরেও বাসি
যারা দেশ সেবা-রত,
লাল সবুজের পতাকা আমার
মায়ের মুখের মতো।
জনতা সাধারডাঃ মল্লিকা বিশ্বাস
সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা" যুদ্ধ "!
সবচেয়ে লাভজনক শিল্প "অস্ত্র নির্মাণ"!
বোমারু বিমান চালক হাসপাতালে
ক্ষিপ্র বোমা ফেলে এসে
নিরীহ নগরে চুমুকে চুমুকে
শেষ করে গ্লাস ভর্তি মদ।
জনৈক তুখোড় রাজনীতিবিদ
মানবতার ফেরিওয়ালা হয়ে
মিথ্যা বক্তৃতার বমিতে
ছয়লাপ করেন হতবাক বিশ্বকে।
নক্ষত্র -খচিত জেনারেলবৃন্দ
নকশা আঁকেন ব্যাপক মৃত্যুর।
ভানুমতির খেল দেখাতে চান
মোড়ল রাষ্ট্রদূতেরা। আর আমরা
জনতা সাধারণ -
দাবার ঘুটি কিংবা খেলার পুতুল
হয়েই কি থাকে যাব আজীবন!