রাজনীতি
কী, কাদের জন্য রাজনীতি বা কারা হবেন রাজনীতিবিদ- এ রকম প্রশ্ন মাঝেমধ্যে
মনের ভেতর ঘুরপাক খেলেও এর সঠিক উত্তর খুঁজে পাই না। নিজের সাধারণ বিবেক যা
বলে, বাস্তবে দেখতে পাই তার উল্টোটা। আমার স্বল্প জ্ঞানে এতটুকু বুঝতে
পারি, রাজনীতি অর্থ সেবা দেওয়া এবং সেটা অবশ্যই জনগণের সেবা। মানুষের
কল্যাণ ও অধিকারের নিশ্চয়তা বিধান করাই হলো রাজনীতি। আর একজন সত্যিকারের
রাজনীতিবিদের কাছে রাজনীতি হবে একটি পেশা এবং সেবা দেওয়ার নেশা। তাদের
মধ্যে থাকবে প্যাশন বা গভীর আবেগ। থাকবে দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতনতা। একজন
নেতার থাকবে নৈতিক মেরুদ- এবং নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সম্পর্কে ধারণা। তাকে হতে
হবে সৎ, নির্লোভ ও আদর্শবান। তাকে শুধু ক্ষমতার জন্য বুভুক্ষু থাকলে হবে
না।
কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের অধিকাংশ রাজনীতিবিদের মধ্যে সেসব গুণ
প্রায় অনুপস্থিত। গণমানুষ নয়, শুধুই ব্যক্তিসর্বস্ব রাজনীতি। আদর্শের বালাই
নেই। বিভিন্ন দলে কোন্দল, আদর্শবিচ্যুতি। এ কারণে রাজনীতি প্রত্যক্ষ বা
পরোক্ষভাবে সবকিছুর নিয়ন্তা হলেও তা মানুষকে এখন আর সেভাবে স্পর্শ করছে না।
এক দশক আগেও কোনো না কোনোভাবে রাজনীতি মানুষকে ভাবাত। রাজনৈতিক মতপার্থক্য
সত্ত্বেও আগের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মাঝে সৌজন্যবোধ, সম্প্রীতি,
সহমর্মিতা ও পারস্পরিক সহানুভূতির ঘাটতি ছিল না। এখন সে জায়গাগুলো উধাও।
তাই বর্তমান রাজনীতি নিয়ে মানুষ বীতশ্রদ্ধ। উচ্চশিক্ষিত ও মেধাবী তরুণ
প্রজন্ম রাজনীতিতে আসতে চাইছে না। সেই জায়গাটা দখল করে নিচ্ছে
স্বল্পশিক্ষিত দুর্বৃত্ত শ্রেণি ও টাকার কুমিররা।
তবে আশার কথা হলো এখনো
বাংলাদেশের রাজনীতিতে সৎ, আদর্শবান অনেক নেতা রয়েছেন, যারা দেশের সম্পদ আর
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয়। তারা নিজেদের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে কেবল
মানুষের স্বার্থের রাজনীতি করেন। লোভ, প্রতিহিংসা, ক্ষমতার দাপটের পরিবর্তে
সততা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ আর সেবার মানসিকতা তাদের মধ্যে বিরাজমান। তারা
ব্যক্তিস্বার্থের উর্ধ্বে রেখেছেন রাজনীতিকে। তবে সততা বজায় রাখতে গিয়ে
পদে পদে তাদের প্রতিবন্ধকতা ও বঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছে। তারপরও নিজ আদর্শে
অটল ও অবিচল তারা। আজ এমনই একজন রাজনীতিবিদের কথা লিখছি, যাকে খুব কাছে
থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে আমার। তিনি হলেন প্রিয় মুখ, কুমিল্লা-১ আসনের
নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য, দাউদকান্দি-তিতাসের মাটি ও মানুষের নেতা
ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আবদুস সবুর।
সর্বদা হাস্যোজ্জ্বল, ব্যক্তিত্বে অমায়িক,
কথাবার্তায় বিনয়ী, চলাফেরায় নম্র ও দরাজ কণ্ঠের অধিকারী আবদুস সবুর ভাই
একজন প্রকৌশলী, সফল রাজনীতিবিদ, সফল সংগঠক ও আলোকিত মানুষ। বঙ্গবন্ধুর হাতে
গড়া আওয়ামী রাজনীতির অনুসরণ, অনুকরণ ও মনেপ্রাণে অন্তঃকরণের পর ছাত্রজীবন
থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতির চর্চায় মনোনিবেশ করেন তিনি। ছাত্রলীগের
রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজের আগামনী বার্তাটা পৌঁছে দেন
সকলের মাঝে। তিনি শুধু ছাত্র হিসেবে মেধাবী তাই নয়, তিনি রাজনীতিতেও
প্রজ্ঞা ও মেধার বিকাশ ঘটিয়ে এগিয়ে গেছেন বীরদর্পে। আওয়ামী রাজনীতির
সংগ্রামী এ আদর্শ তৃনমুল থেকে রাজনীতির সর্বোচ্চ পর্যায়ে বিচরণ করছেন।
দাউকান্দি যেনো তার অস্তিত্ব ও হৃদয়জুড়ে। তার মননে, মগজে একাকার হয়ে আছে
দাউদকান্দি-তিতাসের মাটি ও মানুষ। যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলার
সময়ও দেখেছি, অবধারিতভাবেই তার মুখ থেকে বের হয়ে গেছে দাউদকান্দি প্রসঙ্গ।
শেকড়ের প্রতি, এলাকার প্রতি, এলাকাবাসীর প্রতি এমন দরদ, মমতা, আবেগ আর
অকৃত্রিম ভালোবাসা কোনো রাজনীতিবিদের থাকতে পারে, সেটা আবদুস সবুর ভাইকে না
দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। কী করলে দাউদকান্দি সারা দেশের মধ্যে রোলমডেল
হবে, কী করলে দাউদকান্দিবাসী স্বস্তি ও শান্তিতে বসবাস করতে পারবে, কী করলে
দাউদকান্দি মানুষ সম্মানিত হবে, কী করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দাউদকান্দিকে
মনপ্রাণ দিয়ে আগলে রাখবে সেসব চিন্তা-চেতনা, ভাবনা, স্বপ্ন সারাক্ষণ তাকে
বিভোর করে রাখে। তাই তো দাউদকান্দিবাসী তাঁকে একান্ত আপন করে নিয়েছেন।
তাদের সুখ-দুঃখে, বিপদ-আপদে সর্বাগ্রে প্রিয় নেতারই সান্নিধ্য কামনা করেন
তারা।
দাউদকান্দি উত্তর ইউনিয়নের বর্ণাঢ্য পরিবারের সন্তান ইঞ্জিনিয়ার
আবদুস সবুর একাধারে রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক, সংগঠক, ক্রীড়ানুরাগী।তিনি বুকে
টেনে নেন দাউদকান্দি-তিতাসের ক্লান্ত-শ্রান্ত-ঘর্মাক্ত কৃষক-শ্রমিককে আর
আপন করে নেন আপামর জনতাকে। একান্তে কথা বলেন দাউদকান্দির মাটির সঙ্গে,
বাতাসের সঙ্গে আর স্বপ্ন দেখেন দাউদকান্দিকে নিয়ে। দাউদকান্দিবাসীও তাকে
কাছে টেনে নেন, সুখ-দুঃখের গল্প শোনান।
লেখক: সহকারী রেজিস্ট্রার, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়