প্রকাশ: শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ৬:৩৬ পিএম |
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে ছাত্রীদের উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় এসএসসি পরীক্ষার্থী নীরব হোসেনকে (১৭) হত্যার ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকাল পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এদিন বিকালে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও ছয়-সাত জনকে অজ্ঞাত আসামি করে শ্রীনগর থানায় হত্যা মামলা করেছেন নিহত নীরবের মা দিলারা বেগম। এর আগে শুক্রবার বিকালে উপজেলার ভাগ্যকুল ইউনিয়নের কামারগাঁও এলাকায় নীরবকে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করে স্থানীয় কয়েকজন যুবক।
নিহত নীরব হোসেন চাঁদপুরের মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। বাবার মৃত্যুর পর শ্রীনগরের ভাগ্যকুল ইউনিয়নের কামারগাঁও এলাকায় মা দিলারা ও ছোট ভাইয়ের সঙ্গে মামার বাড়িতে থাকতো। নীরব স্থানীয় কাজী ফজলুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে। পরে লৌহজং মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেয়। একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ায় এবার এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শ্রীনগর-সার্কেল) মো. তোফায়েল হোসেন সরকার বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বিকাল পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও র্যাব। ৯ জনই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রস্তুতি চলছে। গ্রেফতারকৃতরা উপজেলার বাঘড়া মাগডাল, কামারগাঁও, জগন্নাথ পট্টি ও আল-আমিন বাজার এলাকার বাসিন্দা। তারা কিশোর এবং কেউ শিক্ষার্থী, আবার কেউ বখাটে।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার কাজী ফজলুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান চলাকালে বিদ্যালয়ের সামনে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করেছিল মাগডাল গ্রামের আরেফিনসহ আরও কয়েকজন যুবক। বিষয়টি দেখে নীরব ও তার সহপাঠীরা প্রতিবাদ করে। এ নিয়ে দুই পক্ষের বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। পরে স্থানীয় লোকজন মীমাংসা করে দিলে যে যার বাড়িতে চলে যায়। শুক্রবার বিকালে কামারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে বসে আড্ডা দিচ্ছিল নীরব ও তার তিন বন্ধু। বৃহস্পতিবারের ঘটনার জেরে তাদের ওপর হামলা চালায় কয়েকজন যুবক। এতে নীরবের সঙ্গে থাকা বন্ধুরা পালালেও পালাতে পারেনি সে। হামলাকারীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে পাশের একটি খালে ফেলে যায়। পরে স্থানীয়রা নীরবকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
শ্রীনগর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, ‘শুক্রবার রাতে ময়নাতদন্তের জন্য নীরবের লাশ মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার বিকালে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় র্যাব ও পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’