বাংলাদেশ
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের ৮ দিনব্যাপী একুশে শিল্প মেলার ৪দিন
শেষ। কুমিল্লায় চলমান এবারের শিল্প মেলায় বিক্রি হয়েছে ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৬০০
টাকা। অর্ডার ৩০ লাখ ৫৬ হাজার ৩০০ টাকা। ৪দিনে সবচেয়ে বেশি ১ লক্ষ ৫৫
হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে মাতাব ভাইয়ের পাঁচমিশালি আচার স্টলে। মেলার
একমাত্র আচারের স্টল হওয়ায় বিক্রি নিয়ে অনেক সন্তুষ্ট স্টলের
স্বত্বাধিকারী।
পরিচিতি এবং ক্রেতা সমাগম বৃদ্ধি করতে বিক্রেতারা
মার্কেটের তুলনায় কিছুটা কম মূল্যে পন্য বিক্রি করছেন। যার ফলে মূল্য নিয়ে
সন্তুষ্ট ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়।
লটারিতে স্টল বন্টন করার মাধ্যমে
কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের সহায়তায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) থেকে শুরু
হওয়া বিসিক একুশে শিল্প মেলা-২০২৪ আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলমান
থাকবে।
কুমিল্লা বিসিক জেলা কার্যালয়ের আয়োজনে তথ্য কেন্দ্রের ১টি
স্টলসহ মোট ৬০টি স্টল নিয়ে সাজানো হয়েছে এবারের বিসিক শিল্প মেলা। এবারের
শিল্প মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলমান থাকে।
১২ ঘন্টার মধ্যে বন্ধের দিন ও প্রতিদিন বিকেলবেলা লোকসমাগম হয় সবচেয়ে বেশি।
৫৯টি
স্টলের মধ্যে শিল্প নগরীর ৮টি, কসমেটিকসের ৫টি, পোশাকের ২৩টি, কেক, ফুসকা,
মিষ্টি, পিঠা সহ খাবারের ১৫টি, গোমতী বিলাস এগ্রো ফার্ম এন্ড নার্সারি
১টা, আচার ১টা এবং কসমেটিকস সহ অন্যান্য পন্য ৬টি।
ছোটবোনকে নিয়ে
শাসনগাছা থেকে আসা ফাহমিদা জানায়, দাম মোটামুটি হাতের নাগালেই আছে। দাম
অনুযায়ী পন্যের মান ভালো। প্রতি বছর এই মেলা চলমান থাকলে মেলা থেকে
কেনাকাটার সুযোগ তৈরি হবে।
নিজস্ব স্টলের স্বত্বাধিকারী দুররে মনছুরা
বলেন, বিক্রি হচ্ছে তবে টাউন হল কুমিল্লার কেন্দ্রবিন্দু হওয়া স্বত্ত্বেও
এখানে নারীদের জন্য কোনো ওয়াশরুমের ব্যবস্থা নেই। নামাজের জায়গা নেই এটা
খুবই দুঃখজনক। টাউনহলের জন্য এতো বরাদ্দ আসে তবুও এই জিনিসগুলোর পরিবর্তন
হয় না।
বিক্রেতা হালিমা খাতুন তাইফস মিলের স্বত্বাধিকারী সহ অনেকে
অভিযোগ করে বলেন, আমি বাসায় বসে অনলাইনে দৈনিক ২৫-৩৫শ টাকা বিক্রি করি।
বিসিকের প্রচারণার পরিমাণ সীমিত। যার কারনে ৪দিনে এখনও আশানুরূপ বিক্রি
হয়নি। সারা বাংলাদেশে যেখানে স্টল প্রতি ২৫-৩৫শ টাকা করে নেওয়া হয়। আমাদের
থেকে ৫,৮৫০ টাকা নেওয়া হয়েছে। কথা ছিল টেবিল দিবে দুইটা দিছে একটা। পিঠা
মেলায় ৩দিনে আমার ৫০+ বিক্রি ছিল কিন্তু আজ ৫দিন এখনও আমার দাম উঠে নাই।
তাদের নিকট অভিযোগ দিলে তারা মাথা ঘামায় না বরং অশোভনীয় আচরণ করে।
নিরাপত্তার
দায়িত্বে থাকা একজন বলেন, পন্য চুরি বন্ধ, দেখাশোনা ও হট্টগোলসহ যেকোনো
সমস্যা মোকাবেলায় প্রতিদিন রাতে ৬জন এবং দিনে ৪জন আমরা পাহারায় থাকি। এখনও
নিরাপত্তা শঙ্কা দেখা যায়নি।
বিসিকের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাসুমা
বলেন, মনিটরিংয়ের মাধ্যমে প্রতিদিন স্টলের বিক্রির খোঁজখবর নেওয়া হয়।
বন্ধের দিন ও প্রতিদিন বিকেলবেলায় বেশি ভিড় থাকে। শিল্পনগরীর ৮টি স্টল ছাড়া
মোটামুটিভাবে বাকি সব স্টলই নারীদের বেশিসংখ্যক নারী উদ্যোক্তাদের
প্রশিক্ষণ দেওয়ার কারনে নারীদের স্টল সংখ্যা বেশি।
উপ-মহাব্যবস্থাপক
মুনতাসির মামুন বলেন, শিল্প মেলার ৯ দিনে স্টল প্রতি সরকারিভাবে ৫,৮৫০ টাকা
ফি ধার্য করা হয়েছে। সাদা কাগজে স্টল নং লিখে দেওয়া হয়েছে। কাউকে রিসিট
দেওয়া হয়নি। মেলা শেষে সবাইকে রিসিট দিয়ে দেওয়া হবে। তিনি স্টল ফি নিয়ে
বলেন, সিটি কর্পোরেশন এবং এর বাইরের এরিয়ার মধ্যে স্টলের পরিমাণে কম-বেশি
আছে।
মেলায় আগত দর্শনার্থীদের আনন্দ ও বিনোদনের মাধ্যমে আকর্ষিত করতে
২টি সাউন্ড বক্স এবং ১টি ফটো ফ্রেমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেখানে এসে
দর্শনার্থীরা ছবি তুলে। এবং একটি সংগঠন রয়েছে যারা প্রতিদিন এখানে গানের
সাথে নৃত্য পরিবেশন করে।