রাজধানীর
বেইলি রোডে বহুতল ভবনে ভয়াবহ আগুন লেগে ৪৬ জনের মৃত্যুর ঘটনার কারণ
অনুসন্ধানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিবের নেতৃত্বে উচ্চ
পর্যায়ের কমিটি গঠন করার আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। কমিটিতে পুলিশ, রাজউক,
ফায়ার সার্ভিস, বুয়েটের বিশেষজ্ঞ, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের
প্রতিনিধি রাখতে বলা হয়েছে।
এই কমিটি চার মাসের মধ্যে বেইলি রোডে একটি
ভবনে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনার কারণ অনুসন্ধান, কারা দায়ী তা খুঁজে বের করবে।
এ ছাড়া রাজধানীর ভবনগুলোতে অগ্নিকা-ের ঘটনা প্রতিরোধে অগ্নি নির্বাপণ
ব্যবস্থা কেমন হবে তার সুপারিশ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
সোমবার পৃথক দুটি রিট আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। খবর ইউএনবির
এর পাশাপাশি অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ ভবনে সতর্কীকরণ নোটিশ সাইনবোর্ড আকারে দৃশ্যমান স্থানে টাঙাতে ফায়ার সার্ভিসকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
একই
সঙ্গে আইন অনুযায়ী স্কুল, কলেজ, শপিংমলসহ রাজধানীর ভবনগুলোতে অগ্নি
নির্বাপণ ব্যবস্থা না রাখা কেন অবৈধ হবে না,তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে
আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইউনূছ আলী আকন্দ ও আইনজীবী ইসরাত জাহান সান্ত¡না।
বেইলি
রোডের গ্রিন কোজি কটেজে আগুন লেগে ৪৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় বিশেষজ্ঞদের
সমন্বয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রোবাবর রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী
ইসরাত জাহান সান্ত¡না।
রিটে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করার নির্দেশনা
চাওয়া হয়। একই সঙ্গে রিটে সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আদালতে দাখিল
করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী ইউনুছ আলী
আকন্দ রাজধানীর বেইলি রোডসহ সব আবাসিক স্থাপনায় রেস্টুরেন্ট বন্ধের
নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। রিটে বেইলি রোডে অগ্নিকা-ে প্রকৃত
দায়ীদের গ্রেপ্তার ও আহত, নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা
চাওয়া হয়। এছাড়া বেইলি রোডে অগ্নিকা-ের ঘটনা তদন্তের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে
আবেদনে।
গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, মন্ত্রী পরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের আইজি, রাজউকের চেয়ারম্যান, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর
সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়। এ দুটি রিটের
ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারির পাশাপাশি আদেশ দেয়।
গত ২৯
ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ‘গ্রিন কেজি কটেজ’ ভবনে লাগা
আগুনে এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪৪ জনের মরদেহ
পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দুজনের মরদেহ ঢাকা মেডিক্যালে রয়েছে।
তাদের ডিএনএ নমুনা নেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন
ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ১৪ জনের মধ্যে বাসায় ফিরেছেন ১১ জন। এখনও ভর্তি
আছেন তিনজন। আর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও দুজন।