শিক্ষক-সহপাঠীকে
অভিযুক্ত করে আত্মহননের পথ বেছে নেওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
ফাইরুজ অবন্তিকার পরিবারের সাথে সাক্ষাত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গঠিত
তদন্ত কমিটি। শুক্রবার (২২ মার্চ) সকালে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড.
জাকির হোসেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটির ৫ সদস্যসহ মোট ৬ জন অবন্তিকার
কুমিল্লার বাঁগিচাগাওয়ের বাসায় আসেন। তারা অবন্তিকার মা তাহমিনা বেগম শবনম ও
তার ভাই জারিফ জাওয়াদ অপূর্বর সাথে কথা বলেন এবং অবন্তিকার ঘটনার সম্পর্কে
জানেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন জানান, তদন্তের
স্বার্থে তথ্য সংগ্রহের জন্য তারা কুমিল্লায় এসেছেন। তবে কবে নাগাদ তদন্ত
প্রতিবেদন দাখিল করা হবে - সেটি নিশ্চিত জানাতে পারেননি তিনি।
এদিকে
মেয়ের মৃত্যুর পর এখনো শোকার্ত অবন্তিকার মা তাহমিনা বেগম। সাংবাদিকদের
তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তারা এসেছেন; বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর
নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন যতোটা আন্তরিক, আগে এমন আন্তরিক হলে
হয়তো তার মেয়েকে হারাতে হতো না।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. জাকির
হোসেন ছাড়াও কমিটির সদস্য সমাজ বিজ্ঞান বিভাগর ডীন অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন,
আইন বিভাগের ডীন অধ্যাপক ড. মাসুম বিল্লাহ, সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান
সহযোগী অধ্যাপক ঝুমুর আহমেদ, সদস্য সচিব ডেপুটি রেজিষ্ট্রার রঞ্জন কুমার
এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে সহকারী প্রক্টর মুনিরা জাহান সুমি
অবন্তিকার মায়ের সাথে কথা বলেন।
এদিকে তদন্ত কমিটির সদস্যরা অবন্তিকার
আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় কারাগারে থাকা দুই আসামি জগন্নাথ
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী রায়হান আম্মান
সিদ্দিকীর সঙ্গেও কারাগারে দেখা করে কথা বলেছেন।
শুক্রবার বিকাল সাড়ে
৪টার দিকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মোহাম্মদ
আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “জবির তদন্ত কমিটির সদস্যরা সাড়ে ৩টার দিকে
কারাগারে আসেন। তারা কারাবিধি মেনে অবন্তিকার আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায়
কারাগারে থাকা দুই আসামির সঙ্গে দেখা করেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন।”
প্রসঙ্গত,
১৫ মার্চ শুক্রবার রাতে ফেসবুক স্ট্যাটাসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী
প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকিকে দায়ী করে আত্মহত্যা করেন
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। এ ঘটনায় পরদিন রাতে
আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে কুমিল্লা কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা
দায়ের করেন অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম। আত্মহত্যার প্ররোচনার ওই মামলায়
দ্বীন ইসলামকে একদিন এবং আম্মানকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে
পুলিশ। রিমান্ড শেষে অভিযুক্ত দুজন এখন কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।