সেমিকন্ডাক্টর বলতে অর্ধপরিবাহী বা
অপরিবাহী পদার্থ বোঝায়। এ ধরনের অর্ধপরিবাহী পদার্থ দিয়ে ট্রানজিস্টর তৈরি
করা হয়। পত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক
শিল্পে সেমিকন্ডাক্টর খাতে বিপুল আয়ের বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। বিশাল এই
বাজারের সামান্য অংশ ধরতে পারলেও দেশের পোশাক রপ্তানি আয়কে ছাড়িয়ে যাবে
সেমিকন্ডাক্টর খাত।
বিপুল সম্ভাবনার এ বাজারে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ
একেবারেই সামান্য। অথচ এই খাতটি বাংলাদেশের জন্য নতুন সম্ভাবনার দুয়ার
উন্মোচিত করতে যাচ্ছে। বিশ্বে সেমিকন্ডাক্টরের ৫৫০ বিলিয়ন ডলারের বাজার
রয়েছে, যা ২০২৯ সালের মধ্যে এক ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞরা তাই
এই সুযোগকে কাজে লাগাতে বড় ধরনের বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন।
এরই মধ্যে
এশিয়ার অনেক দেশ এই বাজার ধরতে বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ করেছে। ভারত,
ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া সেমিকন্ডাক্টর খাত থেকে বিপুল অঙ্কের
আয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অথচ বাংলাদেশে সেমিকন্ডাক্টর ডিজাইন থেকে আয় মাত্র
১০০ মিলিয়ন ডলার।
আশার কথা, সিলিকনভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক কম্পানি তাদের অপারেশন অফিস ঢাকা থেকে পরিচালনা করছে।
তাদের
কাছে দক্ষ জনশক্তি আছে। তারা বাংলাদেশের প্রথম কম্পানি, যারা
সেমিকন্ডাক্টরের ডিজাইন নিয়ে কাজ করছে। বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও নতুন করে এই
সেক্টরে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অনেকে এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধু
হাই-টেক পার্কে জায়গা নিয়েছেন। এ ধরনের ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক দক্ষ জনবলের
প্রয়োজন আছে।
দেশভেদে ১৫০ থেকে ৫০০ ডলারের এই জনবল বাংলাদেশে ১০০ ডলারে পাওয়া যেতে পারে, যা নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা
মনে করেন, বাংলাদেশের সেমিকন্ডাক্টর সেক্টরে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার সেমিকন্ডাক্টর সেক্টরের উন্নয়নে বিনিয়োগ করছে। তবে
সেমিকন্ডাক্টর সেক্টরে বিনিয়োগের জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে
আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ অত্যন্ত জরুরি।
বাংলাদেশের
প্রকৌশলী ও বিজ্ঞানীরা উচ্চশিক্ষিত এবং দক্ষ। তাঁদের প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা
বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা সেমিকন্ডাক্টর সেক্টরে আরো বেশি অবদান রাখতে পারব।
বাংলাদেশ উচ্চমূল্যের চিপ ডিজাইনে দক্ষতা অর্জনের দিকে মনোযোগ দিতে পারে।
তবে এটাও ঠিক যে বাংলাদেশের এখনো উন্নত সেমিকন্ডাক্টর ফ্যাব্রিকেশন সুবিধার
অভাব রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশ নতুন সম্ভাবনাকে কাজে
লাগাতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। সরকারের যথাযথ
পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বাংলাদেশ হয়ে উঠতে পারে এ শিল্পের অন্যতম বড় প্রতিযোগী।