শেষবার
বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড ফাইনাল খেলেছিল ২০১৩ সালে। বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে
অল জার্মান ফাইনালে সেবার আরিয়েন রোবেনের শেষ মুহূর্তের গোলে ফাইনাল হারতে
হয়েছিল ডর্টমুন্ডকে। লম্বা বিরতি দিয়ে আরও একবার সেই ওয়েম্বলিতেই ফাইনাল
খেলার সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে জার্মান ক্লাবটির সামনে। ঘরের মাঠে প্রথম লেগ
জিতে সেই কাজটি খানিক এগিয়েও রেখেছে তারা।
তবে প্রতিপক্ষ ইউরোপের অন্যতম
শক্তিশালী দল পিএসজি। কাতারের মালিকানায় আসার পর থেকেই যারা শক্ত স্কোয়াড
গঠন করেছে বারবার। ইউরোপিয়ান শিরোপার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে তারা। ২০২০ সালে
ফাইনালে উঠেও বায়ার্নের কাছেই হারতে হয়েছে তাদের। পিএসজিও তাই মরিয়া
ফাইনালে ফিরতে।
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের
আগে তাই দুই দলের মাথাতেই থাকবে প্রত্যাবর্তনের চিন্তা। তবে তাতে
ডর্টমুন্ড খানিক নিশ্চিন্ত থাকতে পারে। প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ডর্টমুন্ড ১-০
গোলে জয় পেয়েছিল। নিকলাস ফুলক্রুগের একমাত্র গোল এখন পর্যন্ত এগিয়ে রেখেছে
১৯৯৭ এর চ্যাম্পিয়নদের। তবে দ্বিতীয় লেগ পিএসজির মাঠে। একটা দারুণ
কামব্যাকের প্রত্যাশা করতেই পারে লা প্যারিসিয়ানরা।
দুই দলের অবস্থানে
বিস্তর ফারাক রয়েছে। ফ্রেঞ্চ লিগে নিজেদের শিরোপা এরইমাঝে নিশ্চিত করেছে
পিএসজি। অন্যদিকে জার্মান বুন্দেসলিগায় ডর্টমুন্ড আছে ৫ম স্থানে। যদিও আগের
ম্যাচে জয় পেয়ে আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত
করেছে ডর্টমুন্ড।
জার্মান দলটি পুরো মৌসুমেই বেশ ভুগেছে। তবে
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেলেছে দারুণ ফুটবল। দলের বড় শক্তি মাঝমাঠ। হুলিয়ান
ব্রান্ড, করিম আদিয়েমির পাশপাশি থাকছেন দুর্দান্ত ছন্দে থাকা জ্যাডন
সাঞ্চো। নিজের দিনে এই ইংলিশম্যান কতটা ভয়ানক হতে পারেন, তার নমুনা দেখা
গিয়েছে সেমির প্রথম লেগে। আর অস্ট্রিয়ান মার্সেল সাবিৎজারও গড়ে দিতে পারেন
ম্যাচের পার্থক্য।
রক্ষ্মণেও কম যায়না ডর্টমুন্ড। সবশেষ ম্যাচে কিলিয়ান
এমবাপেকে সুযোগই দেয়নি মাটস হুমেলস আর নিকো স্লটারব্যাকের গড়া ডিফেন্স
ভালোভাবেই সামলেছে পিএসজির আক্রমণ।
প্যারিসের জন্য বলা চলে অলস্টার টিম।
কী নেই দলে। ডাগআউটে বার্সেলোনার হয়ে ২০১৫ সালে ট্রেবল জেতা কোচ লুইস
এনরিকে। আক্রমণভাগে কিলিয়ান এমবাপে এবং ওসমান ডেম্বেলে যেকোন দলকেই মাটিতে
নামিয়ে আনতে পারে। এর সঙ্গে র্যানডাল কোলো মুয়ানি বা ব্র্যাডলি বারকোলাও
আছেন ছন্দে। বেঞ্চে থাকা মার্কো অ্যাসেনসিও বদলি নেমে গড়তে পারেন
পার্থক্য।
ব্রায়ান রুইজ আর ভিতিনহায় গড়া মাঝমাঠ দখল নিতে পারে ম্যাচের
দৃশ্যপট। আর ডিফেন্সে মার্কিনিয়স, আশরাফ হাকিমি বা নুনো মেন্ডেস ঠেকাবেন
আক্রমণ। এর সঙ্গে নিজেদের মাঠ পার্ক দে প্রিন্সেসের প্রায় অর্ধলক্ষ সমর্থক
বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে চাপে ফেলতে পারেন অনায়াসে।
তবে এমন লড়াইয়ের মাঝেও
নজর থাকবে দুজনের দিকে। পিএসজির কিলিয়ান এমবাপে আর ডর্টমুন্ডের মার্কো
রয়েস। এমবাপে বহু জলঘোলা শেষে অবশেষে প্যরিস সেইন্ট জার্মেইন ছাড়বেন। চলতি
মৌসুমের পর তার বিদায় নিশ্চিত।
একইভাবে বিদায় নেবেন ডর্টমুন্ডের
মার্কো রয়েস। জার্মান এই তারকা বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডের ঘরের ছেলে। ২০০০ সালে
অ্যাকাডেমিতে যোগ দিয়ে দুই যুগ পার করেছেন এখানেই। এমবাপে বা রয়েস,
দুজনকেই ক্লাব বিদায় দিতে চাইবে দারুণ সাফল্য দিয়ে। আর সেটার জন্য
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চেয়ে বড় উপলক্ষ্য কী হতে পারে!