উপাচার্য-শিক্ষক
দ্বন্ধে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় টানা এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর চলমান সঙ্কট
নিরসনে দু'টি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৭ মে কুমিল্লা
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার মোঃ আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ
তথ্য জানা গেছে।
অফিস আদেশ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়
মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর ডঃ বিশ্বজিৎ চন্দকে আহ্বায়ক করে গঠিত ৫
সদস্যের কমিটি গত ২৮ এপ্রিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভূত অনাকাঙ্ক্ষিত
ঘটনার তদন্ত পূর্বক তথ্য উদঘাটন করবেন।এই কমিটির অপর চার সদস্য হলেন -
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের
ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডীন মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন নিজামী, চট্টগ্রাম
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ডঃ মুস্তাফিজুর রহমান
সিদ্দিকী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তার এবং সদস্য সচিব
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার মোহাম্মদ আমিরুল হক চৌধুরী।
অপরদিকে
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডঃ মোঃ আবু তাহেরকে আহবায়ক
করে অপর একটি ৫ সদস্যের কমিটি শিক্ষক সমিতির দাবি সমূহ পর্যালোচনা পূর্ব
যৌক্তিক সমাধানে সুপারিশ প্রদান করবেন। এই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন - ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি বিভাগের প্রফেসর ড. এ জে
এম শফিউল আলম ভূঁইয়া, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের
অতিরিক্ত সচিব আব্দুন নূর মোহাম্মদ আল ফিরোজ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ডঃ মোহাম্মদ আবু
তাহের এবং সদস্য সচিব কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার মোহাম্মদ আমিরুল
হক চৌধুরী।
কমিটি প্রসঙ্গে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষক
সমিতির সভাপতি প্রফেসর ডঃ মোঃ আবু তাহের জানান, একটি কমিটিতে শিক্ষক সমিতির
প্রতিনিধি আছে, অপর একটি কমিটিতে শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধি থাকা উচিত ছিল।
আমাদের সাথে আলোচনা করে কমিটি করা হয়নি। এ ব্যাপারে আমাদের সাধারণ সভা শেষে
আমাদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবো।
উল্লেখ্য, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
শিক্ষক সমিতির সাত দফা দাবি কে কেন্দ্র করে উপাচার্য, প্রক্টর ও ট্রেজারার
কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে শিক্ষক সমিতি। দাবি আদায়ের জন্য শিক্ষক সমিতি
কার্যালয়েও তালা মেরে দেয়। পরে ২৮ এপ্রিল উপাচার্য তার কার্যালয়ে প্রবেশের
সময় শিক্ষক সমিতির সাথে উপাচার্য পন্থীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পর
উপাচার্য ও ট্রেজারারের দাবি করে এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষক
সমিতি। এরই ৩০ এপ্রিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩ তম সিন্ডিকেটের জরুরি
সভায় সিদ্ধান্তক্রমে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত কুমিল্লা
বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে সিন্ডিকেটের সেই সিদ্ধান্ত
প্রত্যাখ্যান করে এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে অবস্থান করছে শিক্ষার্থীরা।
নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষার দাবি জানিয়েছেন তারা।
ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়
সূত্রে জানা গেছে গত সাত দিনে বিভিন্ন বিভাগের অন্তত ১২টি পরীক্ষা বন্ধ করা
হয়েছে। সাতটি বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ স্থগিত রাখা হয়েছে।
বিশ^বিদ্যালয়ের
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নুরুল করিম চৌধুরী জানান, বিশ^বিদ্যালয় খোলার পর নতুন
সময় সূচীতে এসব পরীক্ষা নেয়া হবে। যতদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে তত
পিছিয়ে যাবে শিক্ষার্থীরা। আমার কাছে বিভিন্ন বিভাগ থেকে পরীক্ষার জন্য
প্রস্তাবিত সময়সূচি ও রুটিন এসে পৌঁছালেও সেগুলো নিশ্চিত ভাবে প্রকাশ করা
যাচ্ছে না। যেসব পরীক্ষাগুলো সম্প্রতি হওয়ার কথা ছিল সেগুলো কবে হবে তা
নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে।