জাতীয়
কবির ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সারা দেশের ন্যায় কুমিল্লা
ইসলামিয়া আলিয়া কামিল মাদরাসায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভার আয়োজন
করা হয়। মাদরাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবদুল মতিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায়
গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন মাদরাসার মুহাদ্দিস মাও: মোঃ গোলাম মোস্তফা
শাহ, সহকারী অধ্যাপক মোঃ মোশাররফ হোসেন ও প্রভাষক মোঃ শাহাদাৎ হোসেন।
আলোচনায়
বক্তারা বলেন, কবির বাবার মৃত্যুর পর দারিদ্র্যের কারণে রুটির দোকানে কাজ
করেন। তরুণ বয়সে সেনা সদস্য হিসেবে যোগ দিয়েছেন যুদ্ধেও। কবি বিশেষ আলোড়ন
তুলেন ‘বিদ্রোহী’ কবিতা লিখে। শোষকের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে
তিনি লিখেছিলেন, ...আমি ত্রাস সঞ্চারি ভুবনে সহসা সঞ্চারি ভূমিকম্প।/ধরি
বাসুকির ফণা জাপটি,/ধরি স্বর্গীয় দূত জিব্রাইলের আগুনের পাখা শাপটি!/আমি
দেব-শিশু, আমি চঞ্চল,/আমি ধৃষ্ট, আমি দাঁত দিয়া ছিঁড়ি বিশ্বমায়ের অঞ্চল...।
বিখ্যাত কবিতা ‘কামাল পাশা।’, ‘অগ্নিবীণা, প্রলয়োল্লাস, আগমনী, খেয়াপারের
তরণী, শাত-ইল্-আরব’ কবিতাগুলো তুমুল হৈ চৈ ফেলে দেয় সর্বত্র।
কবির গদ্য
রচনার বেলায়ও ছিলেন স্বতন্ত্র চিন্তার। বাউন্ডেলের আত্মকাহিনী, হৈনা,
ব্যথার দান, মেহের নেগার ও ঘুমের ঘোরে গল্পগুলো। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার গান
রচনা করেন তিনি।
১৯৭২ সালের ২৪ মে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে কবি সপরিবারে বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশ সরকার
কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান এবং জাতীয় কবি হিসাবে
ঘোষণা দেন। দীর্ঘ রোগ ভোগের পর ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট পৃথিবীকে চির বিদায়
জানান তিনি। কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাহিত করা
হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা ছিলেন সহকারী শিক্ষক মোঃ মোমেন মিয়া।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে কবির রুহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন মাদরাসার মুহাদ্দিস মাও. মোঃ গোলাম মোস্তফা শাহ।