ফরিদপুরের ভাঙ্গায় প্রেমিকের সামনে এক মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলেসহ তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ জুন) দুপুরে গ্রেফতারদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন: ভাঙ্গার চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্যার ছেলে সাইফুর রহমান সুজন (২১), উপজেলার পৌর সদরে তাহসিন মুন্সি (১৯) ও চান্দ্রা ইউনিয়নের মুন্নু মিয়া (২০)।
জানা যায়, মাদারীপুরে শিবচরের ওই মাদ্রাসাছাত্রী (১৫) তার প্রেমিক ইউনুছ সরদারকে (২৪) সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার বিকেলে ভাঙ্গা গোলচত্বরে ঘুরতে যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে তাদের ভ্যানের গতিরোধ করেন সাইফুর রহমান সুজন, তাহসিন মুন্সি ও মুন্নু মিয়া নামে তিন মোটরসাইকেল আরোহী। এরপর প্রেমিক ইউনুছ সরদার ও ভ্যানচালককে মারধর করে তারা ওই ছাত্রীকে রাস্তার পাশের একটি ক্ষেতে নিয়ে যান। একপর্যায়ে মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তারা।
এরই মধ্যে থানা পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে উদ্ধার করে এবং চেয়ারম্যানের ছেলে সুজনকে গ্রেফতার করে। অন্যরা তখন পালিয়ে যান। শনিবার সকালে পলাতক তাহসিন মুন্সি ও মুন্নু মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ভুক্তভোগী ওই মাদ্রাসাছাত্রী বলে, সূর্যনগরে টেইলারিংয়ের প্রশিক্ষণ শেষে এক ভাইকে সঙ্গে নিয়ে (প্রেমিক) ভাঙ্গার গোলচত্বরে যাই। ভ্যানে সেখান থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেই। পথিমধ্যে একটি মোটরসাইকেলে তিন যুবক এসে গতিরোধ করে। তারা আমাকে টেনে-হেঁচড়ে রাস্তার পাশে নিয়ে যায়। তখন আমি তাদের কাছে মাফ চাই, তারপরেও তারা আমার সঙ্গে জোরাজুরি করতে থাকেন। এ সময় পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে এবং একজনকে আটক করে। পরে আরও দুজনকে আটক করে পুলিশ। দ্রুত পুলিশ আসায় আমি বেঁচে গেছি।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন আল রশিদ জানান, মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে চেয়ারম্যানের ছেলেসহ তিন যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই মাদ্রাসাছাত্রীর মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
ওসি আরও জানান, ঘটনার সময় টহল টিমের নজরে পড়ে যায় বিষয়টি, এ কারণে ওই ছাত্রী অনেক বড় ক্ষতির থেকে বেঁচে গেছে। শনিবার দুপুরে গ্রেফতারদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া উদ্ধার হওয়া ওই মাদ্রাসাছাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্যা জানান, তার ছোট ছেলে খুবই ভদ্র। তবে ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক, এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত হওয়া কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।