বুড়িচং
প্রতিনিধি: কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভুরভুরিয়া গ্রামে স্বামীর যৌতুকের
দাবীতে শারীরিক নির্যাতন করে তিন সন্তানের জননী বৃষ্টি আক্তার (২৩) নামে এক
গৃহ বধূকে হত্যা করে মুখে বিষ দিয়ে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এই
ঘটনার পর থেকে স্বামীর বাড়ীর লোকজন পলাতক রয়েছেন। খবর পেয়েব বুড়িচং থানা
পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের
মর্গে প্রেরণ করেছে। বুধবার ময়নাতদন্তের শেষে বাদ জোহর লাশ দাফন করা হয়েছে।
এই ঘটনায় নিহতের পিতা মোমিন মিয়া বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখ
করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। থানা পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা
যায়, বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া গ্রামের রফিক মিয়ার ছেলে মোঃ
ছাব্বির (৩২) এর সাথে ময়নামতি ইউনিয়নের বাজেবাহেরচর গ্রামের মোঃ মোমিন
মিয়ার মেয়ের সাথে ২০১৪ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের ঘরে ২
ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। মেয়ের পিতা মোমিন মিয়া অভিযোগ করে বলেন,
বিয়ের পর থেকে আমার মেয়ে বৃষ্টিকে যৌতুকের জন্য বিভিন্নভাবে শারিরীক
নির্যাতন করে আসছিলো। বৃষ্টি তার মা ও আমাকে বিষয়টি জানালে আমি বিভিন্ন সময়
মেয়ের শান্তির জন্য ৪-৫ লক্ষ টাকা জামাতা ছাব্বিরকে দিয়েছি। এছাড়াও
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অংকের যৌতুক বৃষ্টিকে দিয়ে আমার কাছে দাবী করলে আমি
দিয়ে আসছি। এছাড়া নিয়মিত বিভিন্ন পারিবারিক বিষয়ে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক
নির্যাতন করতো। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার সকালে যৌতুক ও বিভিন্ন পারিবারিক
বিষয়াদী নিয়ে আমার মেয়েকে শারীরিক নির্যাতন চালায়। এছাড়াও ছাব্বির আমার
মেয়ের কথা গোপন রেখে অন্যত্র একটি পরকিয়া করে বিবাহ করে। এবিষয়টি আমার মেয়ে
জানতে পেরে এর প্রতিবাদ করলে জামাতা ছাব্বির আমার মেয়ের উপর নতুন করে
যৌতুক দাবী করে। এতেও সে প্রতিবাদ করলে তাকে কঠোর শারীরিক নির্যাতন করে
হত্যা করে মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে বুড়িচং থানার এএসআই
মঞ্জুর হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের
জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এঘটনায় বুড়িচয় থানায় ৩
জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীরা হলেন- স্বামী ছাব্বির
(৩২), তার পিতা রফিক মিয়া (৬০) ও তার মাতা মোসাঃ নিলুফা বেগম (৪৫)। বুড়িচং
থানার এএসআই মঞ্জুর হোসেন জানান, এই ঘটনায় থানায় ৩ জনকে আসামী করে একটি
আতœহত্যা প্ররোচনা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার পর পর আসামীরা সকলেই
পলাতক। পুলিশ আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দোষী কাউকে ছাড়
দেওয়া হবে না।