বাংলাদেশের
টেকনাফ সীমান্তে বার বার গুলিবর্ষণের কারণে সেন্টমার্টিনে নৌযান চলাচল
বন্ধ রয়েছে। গত চারদিন ধরে ওই পথে জাহাজ, ট্রলার, স্পিডবোটসহ সকল ধরনের
নৌযান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ৪ দিন ধরে
নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। যাতায়াত করা যাচ্ছে না। ফলে খাদ্য সংকটের আশঙ্কা
করা যাচ্ছে।
সেন্টমার্টিন বোট মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন,
চারদিন ধরে ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে। মিয়ানমার থেকে আমার ট্রলারেও গুলি করা
হয়েছে। কয়েকদিন আগে আরেকটি ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। এসময় লোকজন
পারাপার হতে পারছে না। টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয়
পণ্য বহণকারী ট্রলারগুলোও চলতে পারছে না। এ নিয়ে সমস্যায় পড়েছি আমরা।
সেন্টমার্টিনের
বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, মিয়ানমারের গোলাগুলির কারণে সেন্টমার্টিন
থেকে টেকনাফ যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। আমরা কষ্টে আছি। দ্বীপবাসীকে সবকিছু
টেকনাফ থেকে আনতে হয়। আমরা কষ্টে আছি।
গত ৫ জুন সন্ধ্যার দিকে নাফ নদীর
মোহনায় সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার পথে বাংলাদেশি নির্বাচনী কর্মকর্তাদের
লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলিবর্ষণ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান তখন বলেছিলেন, নির্বাচন শেষ করে
কর্মকর্তারা ট্রলার যোগে টেকনাফ ফেরার পথে মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে গুলি
ছোঁড়া হয়। এসময় সহকারী কমিশনার ভূমি, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, পুলিং
অফিসারসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের একটি টিম ট্রলারে ছিলেন। ট্রলারটি লক্ষ্য
করে ২৫ থেকে ৩০ রাউন্ড গুলি ছোঁড়া হয় মিয়ানমারের ওপার থেকে।
এর আগেও
টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে ট্রলার লক্ষ্য করে বার বার গুলি ছুঁড়েছে মিয়ানমারের
ওপার থেকে। এসব ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে ট্রলার এবং স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রেখেছে
বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা
ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, সেন্টমার্টিনে প্রায় ১০
হাজার মানুষের বসবাস। তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ট্রলারযোগে আনা-নেওয়া করতে
হয়। যেহেতু মিয়ানমার থেকে বারবার গুলি করা হচ্ছে তাই পরবর্তী নির্দেশ না
দেওয়া পর্যন্ত টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে সমস্ত নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা
হয়েছে। তবে বিকল্প পথে কিভাবে খাদ্যসামগ্রী এবং যাতায়াতের ব্যবস্থা করা যায়
এসব নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ওপার থেকে গুলি
ছোঁড়া হচ্ছে। কিন্তু কারা গুলি করছে আমরা বুঝতে পারছি না। যেহেতু ওপারে
যুদ্ধ চলছে। আমরা এসব বিষয় নিয়ে সরকারকে অবহিত করেছি।