শরীরের বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ উপাদানের ঘাটতি মেটাতে দুধ ও ডিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ খাবার। দু’টি খাবারেই বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপাদান রয়েছে। যা শরীরের ছোট ছোট বিভিন্ন উপকার করার পাশাপাশি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে থাকে। অল্প খরচে বাজারে দুধ ও ডিমের মতো স্বাস্থ্যকর খাবার পাওয়া বেশ মুশকিল।
দুধ ও ডিম উপকারী হলেও অনেকেই বলে থাকেন―দুধ ও ডিম একসঙ্গে খেতে নেই। কেউ কেউ বলেন এই দুটি উপাদান একসঙ্গে খেলে নাকি শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতার বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ ও কেপিসি মেডিকেল কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর অরিত্র খাঁ। এবার তাহলে এই পুষ্টিবিদের ভাষ্য অনুযায়ী এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
ডিমের পুষ্টিগুণ: ডিম হচ্ছে অল্প দামের সেরা খাবার। সুষম খাবার বললেও বাড়িয়ে বলা হবে না। এতে উচ্চ জৈবিক মূল্য যুক্ত প্রোটিন থাকে। এসেনশিয়াল অ্যামাইনো এসিড ও মুফা ফ্যাট রয়েছে। এই ফ্যাট শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান। পাশাপাশি ভিটামিন এ, ডি, ই, কে রয়েছে। খনিজের মধ্যে আয়রন, ফসফরাস রয়েছে। এ জন্য প্রতিটি মানুষের ডিম খাওয়া উচিত।
দুধের স্বাস্থ্য উপকারিতা: পুষ্টিগুণের বিচারের দিক থেকে দুধও কম নয়। গরু বা মহিষের এক কাপ অর্থাৎ ২৫০ গ্রাম দুধে প্রায় ১৫২ ক্যালোরি রয়েছে। কিছুটা ফ্যাটও থাকে। এই ফ্যাট থেকে দূরে থাকার জন্য ডাবল টোনড বা স্কিমড মিল্ক খেতে হবে। এছাড়া দুধে হোয়ে প্রোটিন, কেভিন প্রোটিন রয়েছে। আবার ভিটামিন বি১২, বি২, ডি-সহ ক্যালশিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে। এ জন্য দুধ পানে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
দুধ ও ডিম কি একসঙ্গে খাওয়া যায়: বাজারে থাকা বিভিন্ন ধরনের কেকে দুধ ও ডিম একসঙ্গে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন খাবারে মেশানো হয় দুধ-ডিম। সেসব খাবার সুস্থ মানুষের খাওয়ার পর কিছুই হয় না। এ জন্য দুধ ও ডিম খাওয়া নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। গ্যাস, অ্যাসিডিটি বা পেট ব্যথা থেকে শুরু করে কোনো সমস্যাই হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এ জন্য দুধ ও ডিম একসঙ্গে খাওয়া যেতে পারে।
তবে একাংশ মানুষ কাঁচা ডিম ও দুধ একসঙ্গে খেয়ে থাকেন। যা মোটেও ভালো অভ্যাস নয়। এতে শরীরে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশের সম্ভাবনা থাকে। যা থেকে অন্ত্রে সমস্যা হয়। গ্যাস-অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া কাঁচা ডিম ও দুধ খেলে অ্যালার্জি হতে পারে।
কোনটি কখন খাওয়া ভালো: সকালে যদি দুধ বা ডিম কিংবা একসঙ্গেই দুটো খাওয়া যায়, তাহলে ভালো। দুটি খাবারকেই মেটাবলিজম করার কার্যকরী ক্ষমতা সকালে ভালো থাকে। আর রাতের দিকে না খাওয়াই ভালো। কেননা, শরীর ওই সময় পরিশ্রম কমিয়ে দেয়। তখন কিছু এনজাইম কম পরিমাণে থাকে। ফলে খাবার হজমেও সমস্যা হতে পারে। এ জন্য রাতে ছাড়া দিনের যেকোনো সময় দুধ ও ডিম খাওয়া যেতে পারে। তবে কোনোটিই কাঁচা খাওয়া যাবে না। ডিম সিদ্ধ করলে এবং দুধ গরম করলে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ দূর হয়। তাই কাঁচা অবস্থায় না খেয়ে সিদ্ধ করে খাওয়ার পরামর্শ পুষ্টিবিদ অরিত্রর।