বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় এখন বড় প্রতিবন্ধক হিসেবে দেখা দিয়েছে মূল্যস্ফীতি। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। মূল্যস্ফীতির প্রভাব পড়েছে সর্বস্তরে। মূল্যস্ফীতি রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
বাজার কোনোভাবেই স্থিতিশীল হচ্ছে না। ভোক্তার অস্বস্তি কাটছে না। বাজার কোনোভাবেই সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকছে না। মূল্যস্ফীতির কারণে নি¤œ আয়ের মানুষ প্রচ- চাপের মধ্যে রয়েছে।
সরকারের সামনেও বড় চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি, যা দেশের মানুষের জীবনযাত্রায় বড় প্রভাব ফেলছে। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা আরো কঠিন করে তুলছে।
কোনো কোনো পণ্যের দাম বাড়ে কারণ ছাড়াই। যেমন-পেঁয়াজ।
প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর গত মে মাসে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। ব্যবসায়ীরা তখন বলেছিলেন, আমদানির কারণে পেঁয়াজের সংকট থাকবে না। ধারণা করা হয়েছিল, পেঁয়াজ আমদানির ফলে দেশের বাজারে দাম কমবে। ভোক্তা পর্যায়ে দাম কমবে। কিন্তু সবার ধারণা ভুল প্রমাণ করে পেঁয়াজ এখন বাজারে সবচেয়ে আলোচিত পণ্য।
ঈদের পর পেঁয়াজের দাম শতক ছুঁয়ে যায়। এখন এই দাম আরো বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে।
গত বছর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পর চলতি বছরও থামছে না পণ্য দুটির মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা। গত বছর এই সময়ে আলুর দর ৩৫ থেকে ৪০ টাকা হয়ে যাওয়ার পর আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। আলুর খুচরা দর এখন কোথাও কোথাও ৬২ থেকে ৬৪ টাকা। গত বছর এমন সময় দেশি পেঁয়াজের দর ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজের দর ছিল ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা। সেই পেঁয়াজ ঈদের আগেই উঠে গিয়েছিল ৯০ টাকা। ঈদের পর দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই বেড়ে ১০০ টাকায় দাঁড়াল। সেই পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। বাজার সূত্র বলছে পেঁয়াজের খুব একটা সংকট না থাকলেও ধাপে ধাপে চড়ছে দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সামনে দাম আরো বাড়তে পারে। কেন? কৃষি বিপণন অধিদপ্তরও বলেছিল এ বছর পর্যাপ্ত পেঁয়াজের উৎপাদন হয়েছে। তাহলে দাম বাড়বে কেন? বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোনো সংকট নয়; বরং ‘মুনাফালোভী’ মজুদদাররা পরিকল্পনা করে দাম বাড়িয়েছে। মজুদদারদের কাছে প্রচুর পেঁয়াজ আছে। এখন কৃষকদের হাতে খুব একটা পেঁয়াজ নেই। সেই সুযোগটা কাজে লাগানো হচ্ছে।
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতায় একটি সিন্ডিকেট পণ্যের সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ ও মূল্য নির্ধারণ করে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হলে ‘ভোক্তাবান্ধব, জনবান্ধব’ নীতি গ্রহণ করতে হবে। ন্যায্য ও সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করার ব্যবস্থা নিতে হবে।