৭৫
হাজারেরও বেশি রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থক সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে বরণ করে নিল
কিলিয়ান এমবাপেকে, তাদের মুখে হাসি ফোটানোর প্রতিশ্রুতিও দিলেন এই ফরাসি
ফরোয়ার্ড।
এক যুগ আগে যখন এসেছিলেন, তখন কেবল জিনেজিন জিদানই তাকে যা
একটু ভালোভাবে চিনতেন, কিন্তু এবার? সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে মঙ্গলবার যখন
পা রাখলেন, চারদিকে ‘এমবাপে, এমবাপে’ শ্লোগানে মুখরিত। স্বপ্ন পূরণের
উচ্ছ্বাস পেয়ে বসল কিলিয়ান এমবাপেকেও। ফরাসি ফরোয়ার্ড প্রতিশ্রুতি দিলেন,
রিয়ালের জন্য খেলবেন জানবাজি রেখে।
রেয়ালের প্রতি তার ভালোবাসা আজকের
নয়। সেই শৈশবের। ১২ বছর আগে জিদানের ডাকে ট্রেনিং করতে এসেছিলেন এই ক্লাবের
আঙিনায়। ‘আইডল’ ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে ছবি তুলেছিলেন, ঘুরেছিলেন
জিদানের গাড়িতে। সেদিন আর এদিনের মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক। আবেগ তাই এমবাপের
কণ্ঠে চেপে বসা অস্বাভাবিক নয় একটুও।
অনেক টানাপোড়েনের পর রিয়ালের
সঙ্গে চুক্তিটা গত জুনে সারেন এমবাপে। মঙ্গলবার এলেন রিয়ালের খেলোয়াড় হয়ে
বের্নাবেউয়ে। ৭৫ হাজারের বেশি রিয়াল সমর্থক শ্লোগানে, কলরবে বরণ করে নিল
ফরাসি ফরোয়ার্ডকে।
টানেল দিয়ে যখন তিনি মাঠে প্রবেশ করলেন ‘এমবাপে,
এমবাপে’ শ্লোগান শুনতে শুনতে, এরপর আনুষ্ঠানিক পরিচিতি পর্ব শেষে যখন ‘শুভ
সকাল’ দিয়ে কথা বলতে শুরু করলেন, বের্নাবেউয়ে তখন পিনপতন নিরবতা। প্রিয়
তারকার কথা শুনতে কান পেতে আছে সবাই।
“আমি একটু স্প্যানিশে বলার চেষ্টা
করছি। আমি অনেক রাত এই স্বপ্ন দেখেছিৃআজ সেটা সত্যি হলো। আমি খুবই খুশি।
রিয়াল প্রেসিডেন্ট এবং যারা আমাকে এখানে আনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, সবাইকে
ধন্যবাদ। আমার আসার প্রক্রিয়া কঠিন ছিল, কিন্তু আমি এখন রিয়াল মাদ্রিদের
খেলোয়াড়। আমার পরিবারকেও খুশি দেখছিৃ।”
কথা শেষ করতে পারলেন না এমবাপে!
গ্যালারি প্রকম্পিত হলো সমর্থকদের গর্জনে, “ব্যাজে চুম্বন করো! ব্যাজে
চুম্বন করো!” এমবাপেও দেরি করলেন না একবিন্দু। তাৎক্ষণিক রিয়ালের ব্যাজ
আকঁড়ে ধরে চুম্বন করলেন পরম মমতায়। সমর্থকদের সাথে একাত্ম হয়ে গেলেন। ফের
বলা শুরু করলেন ফরাসি ফরোয়ার্ড।
“এখন আমার স্বপ্ন রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে
জেতা এবং আমি বলতে চাই, এই ক্লাব, এই ব্যাজের জন্য জানবাজি রেখে খেলব আমি।
আশা করি, এই ক্লাবের হয়ে ইতিহাস লিখব।”
“আমি শিশুদের বলতে চাই, আমি
তোমাদের মতোই ছিলাম। তোমাদের মতোই একটা স্বপ্ন ছিল এবং স্বপ্নকে সত্যি করতে
পেরেছি। তোমাদের জন্য আমার একটাই উপদেশ: আবেগ, ধৈর্য্য এবং স্বপ্ন দেখে
যাওয়া, এগুলোই তুমি যা অর্জন করতে চাও, তোমাকে সেটা এনে দেবে। আজ আমি
এখানে, সামনে তোমাদের মধ্যে কেউ এখানে থাকবে।”
রেয়ালের জেতা ১৫টি
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফির সাথেও ছবি তুললেন এমবাপে। ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ
জিতেছেন তিনি, পিএসজির হয়ে লিগ ওয়ানের শিরোপা স্বাদও পেয়েছেন, কিন্তু
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি এখন এমবাপের অধরা। তবে এসব লক্ষ্য নিয়ে বেশি কথা
বলতে চাইলেন না এমবাপে!
“আমি খুবই শিহরিত। আসলেই রোমাঞ্চিত, খুব বেশি
আবেগাপ্লুত। স্বপ্নের ক্লাব ও ফুটবল ইতিহাসের সেরা ক্লাবে আসতে পেরে আমি
সত্যিই ভীষণ খুশিৃএর বেশি কিছু বলতে চাই না, কেননা, আরও বলতে গেলে আমি
কেঁদে ফেলব। কিন্তু আমি আরেকটি জিনিস করতে চাইৃ।”
এই বলেই এমবাপে গণনা
শুরু করলেন, ফের কান পেতে রইল বের্নাবেউয়ের গ্যালারি। এমবাপে শুরু করলেন,
“এক, দুই, তিনৃআলা মাদ্রিদ।” গ্যালারিতেও কেঁপে উঠল প্রিয় তারকার সুরে সুরে
মিলিয়ে।