মালয়েশিয়ায়
যেতে না পারা ভিকটিম শ্রমিকের জীবন ধ্বংসের জন্য কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা
এবং খামখেয়ালিপনাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং কেন মালয়েশিয়া যেতে না
পারা ১৭ হাজার ৭৭৭ শ্রমিকের টাকা সুদসহ ফেরত দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে
রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে কর্তৃপক্ষকে প্রতি তিন মাস পরপর এই
ঘটনায় আপডেট রিপোর্ট দাখিল করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এক রিট আবেদনের
পরিপ্রেক্ষিতর মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও
বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ
দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন মো. তানভীর আহমেদ এবং বিপ্লব কুমার
পোদ্দার। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার জেনারেল তুষার
কান্তি রায়।
এর আগে রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে চূড়ান্ত ছাড়পত্র পাওয়ার
পরেও প্রায় ২০ হাজারের মতো কর্মী মালয়েশিয়া যেতে না পারার ঘটনায় রিট দায়ের
করা হয়।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে মালয়েশিয়ায় কর্মী না যাওয়ার ঘটনায় কী
ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা সাত দিনের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন
হাইকোর্ট। সে অনুযায়ী রাষ্ট্রপক্ষ একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।
ওই
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা কর্মীদের কাছ থেকে গ্রহণ
করা সমুদয় টাকা ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে ফেরত দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া কর্মী
প্রেরণে ব্যর্থতা ও দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং
এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রিক্রুটিং এজেন্সি কর্তৃক মন্ত্রণালয় নির্ধারিত সর্বোচ্চ অভিবাসন ব্যয় ৭৮
হাজার ৯৯০ টাকার অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণের প্রাপ্ত অভিযোগগুলোর আইনানুগ
নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে কর্মী
প্রেরণের ক্ষেত্রে সময়সীমা নির্ধারণ করা হলে নির্ধারিত সময়সীমার সঙ্গে
সঙ্গতি রেখে চাহিদাপত্র ও ভিসা ইস্যুর তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।
প্রতিবেদনে
কিছু সুপারিশ করা হয়েছে, এতে বলা হয়েছে— মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে কর্মী
প্রেরণের ক্ষেত্রে একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু করা দরকার। যাতে
চাহিদাপত্র ইস্যু থেকে কর্মীর বিদেশ গমন ও পরবর্তী পরিস্থিতি তদারকি করা
যায়। এই সিস্টেমে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ, বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাগুলো এবং
রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো সংযুক্ত থাকতে পারে। মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগানুমতি
গ্রহণের পর বিএমইটি’র ক্লিয়ারেন্স কার্ড গ্রহণ এবং কর্মী প্রেরণের বিষয়টি
নির্দিষ্টকরণ করা। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো কর্তৃক অভিবাসী কর্মীদের কাছ থেকে
অভিবাসন ব্যয় গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং ই-ভিসা প্রাপ্ত
যেসব কর্মী মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে পারেননি, তাদের বিষয়ে মালয়েশিয়ায়
বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্তৃক সে দেশের সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ অব্যাহত
রাখা।