কুমিল্লার
ব্রাহ্মণপাড়া সদরে অবস্থিত ব্রাহ্মণপাড়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
ভবন ঘেঁষেই বড় পুকুর ও জলাশয়। বৃষ্টির পানিতে পুকুর পরিপূর্ণ হয়ে উঠায়
স্কুল আঙিনায় উঠে এসেছে পানি। এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে নেই নিরাপত্তা বেষ্টনী
বা সীমানা প্রাচীর। কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলপ্রাণ অধিকাংশ
শিক্ষার্থীই সাঁতার জানে না। ফলে পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে
বিদ্যালয়ে পাঠ নিতে আসা কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
তাই শিশুদের বিদ্যালয়ে
পাঠিয়ে আতঙ্কিত থাকেন অভিভাবকরা। অভিভাবকরাসহ স্থানীয়দের দাবি ঝুঁকিপূর্ণ
স্থানগুলোতে সীমানা প্রাচীর বা নিরাপত্তা বেষ্টনী স্থাপন করা হোক।
সরেজমিনে
দেখা গেছে, ব্রাহ্মণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ঘেঁষেই পূর্বপাশে
ভগবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিশাল পুকুর আর পশ্চিম পাশে জলাশয়। এসব
ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে নেই সীমানা প্রাচীর বা নিরাপত্তা বেষ্টনী। অপরদিকে টানা
বৃষ্টিতে ভগবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুর কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে
ব্রাহ্মণপাড়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙিনায় পানি উঠে এসেছে।
বিদ্যালয়ে মাঠও নেই, শিশুরা খেলাধুলা করে বিদ্যালয় আঙিনায়। যার ফলে এই
বিদ্যালয়ে পাঠ নিতে আসা কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পানিতে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
যে কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে অভিভাবকরাও আতঙ্কে
দিন কাটাচ্ছেন। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়ের চারপাশে সীমানা প্রাচীর বা নিরাপত্তা
বেষ্টনী স্থাপনের দাবি স্থানীয়রাসহ অভিভাবকদের।
স্থানীয় বাসিন্দা
মোহাম্মদ হোসেন বলেন, এখন বর্ষাকাল চলছে। ঘন ঘন বৃষ্টিপাত হচ্ছে, এতে
বিভিন্ন জলাশয়ের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অতি বৃষ্টির কারণে ওই স্কুলের
পাশের পুকুর ও জলাশয়ে অনেক পানি জমেছে। সীমানা প্রাচীর বা নিরাপত্তা
বেষ্টনী না থাকার কারণে সাঁতার না-জানা বাচ্চারা পানিতে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।
এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা বেষ্টনী বা সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা
জরুরি। অন্যথায় যেকোনো সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
মো.
মামুনুর রশীদ নামে একজন অভিভাবক বলেন, ওই স্কুলের একপাশে পুকুর, অন্যপাশে
ডোবা। নেই কোন সীমানা প্রাচীর। এ অবস্থায় যেকোনো সময় কোনো না কোনো শিশু
পানিতে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা শিশুদের বিদ্যালয়ে
পাঠিয়ে আতঙ্কিত থাকি। আমরা চাই শিশুদের সুরক্ষার জন্য দ্রুত সীমানা প্রাচীর
স্থাপন করা হোক।
ব্রাহ্মণপাড়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান
শিক্ষক মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের
অধীনে আমাদের এই বিদ্যালয়সহ পুরো দেশে ৫০৯টি মডেল সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়কে দৃষ্টিনন্দনকরণ করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। আশা করছি প্রকল্পটি
বাস্তবায়িত হলে বিদ্যালয়ের চতুর্দিকে সীমানা প্রাচীর নির্মিত হবে। তবে আমরা
পাঠ নিতে আসা শিশু শিক্ষার্থীদের দিকে সার্বক্ষণিক খেয়াল রাখছি।
ব্রাহ্মণপাড়া
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দা হালিমা পারভীন বলেন, ওই
বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করা হয়েছে।
তবে এটা সময় সাপেক্ষ। বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের বিষয়ে শিগগিরই আবার
যোগাযোগ করবো। এখন বর্ষাকাল হওয়ায় স্কুলের পাশের পুকুর ও ডোবায় পানি বৃদ্ধি
পেয়েছে। ওই স্কুলের শিক্ষকদের শিশু ছাত্রছাত্রীদের দিকে নজর রাখতে বলা
হয়েছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও ) স
ম আজহারুল ইসলাম বলেন, আমি আজই ওই স্কুল পরিদর্শন করবো। শিশুদের সুরক্ষার
কথা ভেবে অচিরেই এডিপি থেকে প্রকল্প নিয়ে এ সমস্যার সমাধান করা হবে। এছাড়াও
ওই বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য ভালো কোন রাস্তা নেই। তাই ভগবান সরকারি উচ্চ
বিদ্যালয় মসজিদের পাশ দিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য একটি রাস্তা
বাস্তবায়নের উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে।