কোটা
সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে কয়েকদফা সংঘর্ষ ও সরকারের জারি করা কারফিউতে প্রায়
এক সপ্তাহ অচল ছিল বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। তবে বুধবার (২৪ জুলাই) সকাল থেকে
পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। কারফিউ শিথিল ও অফিস খোলা থাকায় সড়কে বেড়েছে
গাড়ির সংখ্যা।
আজ চট্টগ্রামের সব পোশাক কারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্তের
কথা আগেই জানিয়েছিল তৈরি পোশাক কারখানা মালিকদের সংঘটন বিজিএমইএ। তাই সকাল
আটটার পর থেকেই চট্টগ্রামের সড়কগুলোতে শ্রমিকদের উপস্থিতি দেখা যায়।
এছাড়াও
সকাল ১০টায় কারফিউ শিথিলের আগেই কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বের হন বিভিন্ন
সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। তবে গণপরিবহনের সংখ্যা
কম থাকায় দুর্ভোগে পড়েন তারা।
এদিকে চট্টগ্রামে ধীরে ধীরে খুলতে শুরু
করেছে দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সকাল ১০টার দিকে নগরের বহদ্দারহাট
কাঁচাবাজারে ক্রেতা বিক্রেতাদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। নগরের পুরাতন
চান্দগাঁও থানা এলাকার বাসিন্দা ও পোশাক শ্রমিক জোসনা বেগম বলেন, 'আমার
কারখানা টেক্সটাইল এলাকায়। গতকাল কারখানা খোলা থাকলেও গাড়ি না পাওয়ায়
কারখানায় যেতে পারিনি। তাই আজ আগেভাগে বের হয়ে হেঁটে রওনা হয়েছি। রাস্তায়
আজ গাড়ি দেখা যাচ্ছে, আশাকরি সময়মত কাজে পৌঁছাতে পারবো।'
প্রায় এক
সপ্তাহ কর্মহীন থাকার পর শ্রমিকরা কাজের খোঁজে চক সুপার মার্কেট এলাকায় ভিড়
করেছেন। তাদের একজন মো. দিদার বলেন, ‘কারফিউর কারণে কাজের খোঁজে বের হতে
পারিনি। পরিবার নিয়ে এ কদিন খেয়ে না খেয়ে দিন পার করেছি। তাই আজ কাজের
খোঁজে এসেছি, কিন্তু মানুষের মনে এখনো আতঙ্ক রয়ে গেছে। দুই একজন কাজ পেলেও
সবাই কাজ পাচ্ছেন না।'
সকাল থেকেই ঢাকার রাস্তায় চলছে গণপরিবহন সকাল থেকেই ঢাকাসহ আশপাশের জেলার উদ্দেশ্যে দুরপাল্লার বাস ছেড়ে যাচ্ছে। রাঙ্গামাটি,
বান্দরবান ও কক্সবাজার থেকে আন্তঃজেলা বাস চট্টগ্রামে প্রবেশ করেছে, তবে যাত্রী সংখ্যা কম বলে জানিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
এদিকে
আজ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ
শিথিলের কথা জানানো হয়েছে। তবে নগরের মোড়ে মোড়ে এখনো সেনাবাহিনী, বিজিবি ও
পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সন্দেহজনক মনে হলেই গাড়ি ও পথচারীদের তল্লাশি করা
হচ্ছে।
এর আগে গত ১৬ জুলাই নগরের ষোলশহর ও মুরাদপুরে আন্দোলনরত
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে দুই
শিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহত হন। একদিন পর বৃহ¯পতিবার নগরের বহদ্দারহাট এলাকায়
শিক্ষার্থী, পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষে এক শিক্ষার্থীসহ
আরও দুইজনের মৃত্যু হয়। এসময় বহদ্দারহাট পুলিশ বক্স ও চান্দগাঁও থানায়
হামলার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় চট্টগ্রামে মোট ২৪ টি মামলায় ৬০০ জনকে গ্রেফতার
করা হয়েছে। এছাড়াও কারফিউ অমান্য করায় বিভিন্ন ধারায় দণ্ড পেয়েছেন অন্তত
৩০০ জন।