কুমিল্লায়
খুলেছে গার্মেন্টস ও কারখানা। সাম্প্রতিক সংঘাত সংঘর্ষের ঘটনায় সৃষ্ট
পরিস্থিতিতে সারাদেশে গার্মেন্টস ও কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এ সেক্টরে
কর্মরত ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা বিপাকে পড়ে। তবে কারফিউ জারি ও আইনশৃংখলা
বাহিনীর কঠোর তৎপরতায় ক্রমেই স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে জনজীবন, খুলতে শুরু
করেছে ফ্যাক্টরী-কারখানা ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত।
টানা ৫দিন
বন্ধ থাকার পর গতকাল বুধবার কুমিল্লা রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ প্রসেসিং জোন
(ইপিজেড)এ ১১টি গার্মেন্টস খোলা ছিল এবং কুমিল্লা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
কর্পোরেশন (বিসিক) এর প্রায় ১৩০টি কারখানা খোলা ছিল বলে নিশ্চিত করেছে
কর্তৃপক্ষ।
কুমিল্লা বিসিক এর উপ-মহাব্যবস্থাপক মুনতাসির মামুন জানান,
আমাদের বিসিক এলাকায় ১৪০টি কারখানা রয়েছে। এদের বেশির ভাগ খোলা ছিল।
আগামীকাল সবগুলো খুলে যাবে। আমাদের বিসিকে প্রায় ১০হাজার শ্রমিকের বেশিরভাগ
শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে সকল শ্রমিক কাজে যোগ দিবে।
এছাড়াও আমাদের বিসিকে কোন রকম সমস্যা হয়নি। আমাদের কোন প্রতিষ্ঠানের কোন
ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
সূত্র থেকে জানা যায়, কারফিউ থাকার কারণে অনেকে ঘর
থেকে বের হতে না পেরে ও কর্মস্থলে না যেতে পেরে অনেকটা হতাশ জীবন
কাটাচ্ছিলেন। গতকাল বুধবার শ্রমিকরা নির্বিঘেœ যথা সময়ে অফিসে এসেছে এবং
কাজে যোগদান করেছে। টানা বন্ধের পর অফিস খোলা হয়েছে জেনে শ্রমিকদের চোখে
মুখে ছিল খুশির ছাপ।
জান্নাত নামে এক শ্রমিক জানান, অফিস মাঝে মাঝে
বন্ধ দিলে ভাল লাগে। কিন্তু টানা বেশি দিন বন্ধ থাকলে খারাপ লাগে। আজ অফিস
খুলেছে শুনে দৌড়ে অফিসে এলাম। অফিস করে বাড়ি ফিরতে পারলে ভাল লাগবে। কিন্তু
এ কয়দিন বন্ধ থেকেও কোন লাভ হয়নি। কেননা ইন্টারনেট, ফেইসবুক, ইমু সবই বন্ধ
ছিল। কাহারো সাথে কোন যোগাযোগ করতে পারিনি। ইন্টারনেট সেবা চালু হলে
বন্ধটা ভাল কাটতো। সরকারে প্রতি অনুরোধ দ্রুত ইন্টারনেট চালু করে আমাদেরকে
স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার সুযোগ করে দিবেন।
জামাল নামে আরেক শ্রমিক
জানান, আমরা সাধারণ শ্রমিক বন্ধ থাকলে মন খারাপ লাগে। এমনিতে বাজারের
অবস্থা খুব চড়া। তার উপর বন্ধ থাকলে চিন্তায় পড়ে যাই। প্রতিদিন যেভাবে খরচ
বাড়ছে সেই তুলনায় আয় রোজগার বাড়ছে না। প্রতি মাসে চাকুরী করে যে টাকা আয় হয়
সংসারের খরচ মিটিয়ে সঞ্চয়ের সুযোগ নেই। তাই বন্ধ থাকলে ধার-দেনা ছাড়া উপায়
থাকেনা।
এদিকে জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান জানান, বুধবার
দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, কুমিল্লার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আইনশৃংখলা পরিস্থিতিও স্বাভাবিক। মানুষজন স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় ফিরে
এসেছে। আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সচল
রাখার জন্যও সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি।