লেনদেন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ওজন ও
পরিমাণে কমবেশি করা জঘন্যতম গুনাহ। কাউকে ঠকানোর মাধ্যমে উপার্জন করা
মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অপরাধ।
সীমাহীন লোভ ও দুষ্ট অভ্যাসের কারণেই অবৈধ পন্থায় উপার্জনের পেছনে ছোটে মানুষ। এতে বরকত নেই, বরং বিভিন্ন রকমের ক্ষতি রয়েছে।
পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এ ধরনের কাজকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যারা এমন করে তাদের নিন্দা করা হয়েছে।
এ কাজ তাদের পরকালীন দুর্ভোগের কারণ হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
আল্লাহ
বলেন, ‘যারা মাপে কম দেয়, তাদের জন্য দুর্ভোগ। এরা লোকের কাছ থেকে যখন
মেপে নেয়, তখন পূর্ণ মাত্রায় নেয় এবং যখন মেপে দেয় তখন কম করে দেয়। তারা কি
চিন্তা করে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে সেই মহাদিবসে যেদিন মানুষ দাঁড়াবে
বিশ্ব প্রতিপালকের সামনে।’ (সূরা মুতাফফিফিন, আয়াত ১-৬)
অন্য আয়াতে
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, তোমরা সঠিক ওজন কায়েম করো এবং ওজনে কম দিও না।’
(সুরা রহমান, আয়াত ৭-৯)। অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘তোমরা মাপ ও ওজন পূর্ণ করে
দাও ন্যায়নিষ্ঠার সঙ্গে। আমরা কাউকে তার সাধ্যের অতিরিক্ত কষ্ট দিই না।’
(সুরা আনআম, আয়াত ১৫২)।
পরিমাপে ও ওজনে কম দেওয়ার ফলে আল্লাহ তাআলা
ফসলের উৎপাদন কমিয়ে দেন ও দুর্ভিক্ষ দেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
‘দুর্ভোগ তাদের জন্য, যারা মাপে কম দেয়, যারা মানুষের কাছ থেকে ওজন করে
নেওয়ার সময় পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে, আর যখন মানুষকে মেপে কিংবা ওজন করে
দেয়, তখন কম দেয়। ’ (সুরা মুতাফফিফিন, আয়াত ১-৩)
রাসুল (সা.) একবার
পরিমাপকারী ও দাঁড়িপাল্লা দ্বারা ওজনকারী ব্যবসায়ীদের বলেন, ‘তোমাদের ওপর
এমন দুইটি জিনিসের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে, যে জিনিস দুইটির দায়িত্ব পালনে
অবহেলা করার কারণে তোমাদের আগের উম্মত ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।’ (তিরমিজি)
অন্য
হাদিসে তিনি বলেন, ‘বিচারের দিনে (অসৎ) ব্যবসায়ীদের হাশর হবে ফাসিক, কাফির
ও বদকারী হিসেবে, তবে তাদের মধ্যে যারা মুত্তাকি, পুণ্যবান ও সত্যবাদী,
তাদের এমনটি হবে না। (মিশকাত, পৃষ্ঠা নং ২৪৪)