অলিম্পিকের
একটা পদকের জন্য কতটা না লড়াই। শুধু পদকই না, ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’
নামের এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারাটাও অনেক বড় এক বার্তা। বাংলাদেশের
উদাহরণ থেকেই বলা যাক। ১৯৮৪ সাল থেকে ২০২৪ অলিম্পিক পর্যন্ত নিজ যোগ্যতায়
লাল-সবুজের হয়ে অলিম্পিকে গিয়েছেন মোটে ৩ জন। বৈশ্বিক আসরের যোগ্যতা অর্জন
ঠিক অতটাই কঠিন।
গ্রেট ব্রিটেনের স্কারলেট মিউ জেনসেন এমন একটা সুযোগ
হারাতে চাইলেন না। এক মাস আগেও অনিশ্চিত ছিলেন অলিম্পিকের জন্য। রানআপে
সমস্যা হচ্ছিল। সিনক্রোনাইজাইড ডাইভে সঙ্গীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলাটাই
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেটা করতে পারবেন কিনা তা নিয়েই ছিল শঙ্কা।
সঙ্গী
ইয়াসমিন হারপারের সঙ্গে শুরুর দিকে বেশ ভুগেছেন। পিছিয়ে পড়ছিলেন ক্রমাগত।
কিন্তু শেষ ডাইভে নাটকীয়ভাবে জয় করেছেন ব্রোঞ্জ পদক। অস্ট্রেলিয়ার দুই
ডাইভার ম্যাডিসন কেনি এবং অ্যানাবেল স্মিথ শেষ ডাইভের আগপর্যন্ত এগিয়ে
ছিলেন। কিন্তু একেবারে শেষে দেশকে এনে দিলেন ব্রোঞ্জ পদক।
ইয়াসমিন এবং
স্কারলেটের এই পদকের মাহাত্ম্যও অনেক। এই দুজনের কল্যাণেই ডাইভিংয়ের কোন
ইভেন্টে দীর্ঘ ৬৪ বছর পর পদক পেয়েছে ব্রিটেন। পদক নিশ্চিতের পর দুজনের
চোখেই ছিল আনন্দের অশ্রু। তবে কিছুটা আবেগতাড়িত ছিলেন স্কারলেট, ‘আমি ভাষা
হারিয়ে ফেলেছি। একমাস আগেও ভাবিনি আমি এখানে থাকব। বোর্ডের থাকতে পারা আর
এটা (ব্রোঞ্জ পদক) নিয়ে ফিরতে পারাৃ আমি এরচেয়ে ভাল কিছু ভাবতে পারছি না।’
স্কারলেটের
এমন জয়ে মিশে আছে অন্য এক উপলক্ষ্য। আগামীকালই যে তার জন্মদিন। এমন বিশেষ
দিনের আগে ডাইভিংয়ে যুক্তরাজ্যের ৬৪ বছরের পদকখরা কাটিয়েছেন। স্কারলেটের
জন্য আনন্দের রেশ তাই দ্বিগুণ, ‘আমরা এটা নিয়েই ভাবছিলাম। আমাদের মেয়েরা
এতগুলো বছর পদক নিতে পারেনি। তাই আজ আসার পথেই আমরা নিজেদের সেরাটা দিতে
চেয়েছি।’
ব্রোঞ্জ পদকের শেষ ডাইভে এসে স্কারলেটের ভাবনায় ছিলেন ব্রিটিশ
ডাইভিং কোচ ডেভ জেনঙ্কিন্স। ২০২২ সালেই পরপারে চলে গিয়েছিলেন। শেষ সময়ে
গুরুর কথাই মাথায় ছিল ব্রিটিশ ডাইভারের, ‘ইয়াসকে (ইয়াসমিন হার্পার)
বলছিলাম, ব্রোঞ্জ জয়ের পর আমি কেবল তার কথাই ভেবেছি (ডেভ জেনঙ্কিন্স)। আমি
জানি তিনি আমাদের নিয়ে প্রচন্ড গর্ব করতেন। আমি এটা ব্যাখ্যা করতে পারব না।
শুধু ভাবছি, তিনি যদি এখানে থাকতেন।’
ওম্যান্স সিনক্রোনাইজ ৩মিটার
স্প্রিংবোর্ডের এই ইভেন্টে স্বর্ণপদক জয় করেছেন চীনের ইয়ানি চ্যাং ও ওয়েইন
চেনের জুটি। রীতিমত দাপট দেখিয়েছে তারা। রৌপ্যজয়ী মার্কিন দলের চেয়ে ২৩.০৪
পয়েন্ট বেশি ছিল চীনের মেয়েদের।