বুধবার ৩০ অক্টোবর ২০২৪
১৪ কার্তিক ১৪৩১
ওবায়দুল কাদের বললেন-
‘শ্রীলঙ্কান স্টাইলে’ গণভবন দখলের ষড়যন্ত্র ছিল
প্রকাশ: সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪, ১:৩৭ এএম |

‘শ্রীলঙ্কান স্টাইলে’ গণভবন দখলের ষড়যন্ত্র ছিল


নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনকে ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবনে আক্রমণের ছক কষা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সংঘাতমতয় পরিস্থিতিতে ১৯ জুলাই রাতে কারফিউ জারি করার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে তিনি বলেছেন, “ওই রাতে শ্রীলঙ্কান স্টাইলে গণভবন দখলের ষড়যন্ত্র ছিল।”
রোববার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দুস্থদের মাঝে খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দুস্থদের মাঝে ১০ কেজি চাল, দুই কেজি আলু, এক কেজি করে ডাল ও লবণ এবং এক লিটার তেল দেওয়া হয়।
কাদের বলেন, “আপনাদের (বিএনপি) নৃশংসতা হানাদার বাহিনীকে হাত মানিয়েছে। ক্ষমতার জন্য লন্ডনের পলাতক (তারেক রহমান)... গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে শ্রীলঙ্কা স্টাইলে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি দখল করার টার্গেটও ওই রাতে ছিল। যদি কারফিউ জারি না হত, এই প্ল্যান তাদের ছিল।
“শ্রীলঙ্কা স্টাইলে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি আক্রমণ করা অভ্যুত্থানের উপর রাইড করে হাওয়া ভবনের যুবরাজ ক্ষমতা দখল করত। এটাই তো তাদের পরিকল্পনা।”
গত ১৮ জুলাই শিক্ষার্থীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে সকালের দিকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজনের প্রাণহানির পর ছাত্র আন্দোলনে পায় নতুন মাত্রা।
সেদিন ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকায় হঠাৎ করেই বিপুল সংখ্যক মানুষ রাজপথে নেমে পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায়। এসব এলাকার একটি ছিল মোহাম্মদপুরে। সেখানে পুলিশের থানা ও ফাঁড়ি আক্রমণ হয়েছে। কারফিউয়ের মধ্যেও টানা চারদিন ধরে চলতে থাকে সংঘাত।
মোহাম্মদপুর ঘেঁষা শেরেবাংলা নগরেই গণভবনের অবস্থান।
কারফিউয়ে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে কাদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন কারফিউ দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিলেন, সেনাবাহিনী নামল। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি সেনাবাহিনী কোথাও একটা গুলিও ছুড়েনি।”
‘আমরা আক্রমণকারী নই, আক্রান্ত’:
এক সপ্তাহের ঘটনাপ্রবাহে বিপুল সংখ্যক প্রাণহানির পর সরকারের সমালোচনা করে দেশ বিদেশ থেকে যে বিবৃতি আসছে, তা নিয়েও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, “বিদেশ থেকে অনেকেই বিবৃতি দিচ্ছেন। অনেক সংস্থা, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও আছেন। কারা সমন্বয় করছেন আমরা জানি।
“তাদেরকে বলব কারও প্ররোচনায় বিবৃতি না দিয়ে এখানে এসে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়, বিআরটির ধ্বংসলীলা দেখুন। বিআরটিসির ৪৪ টি গাড়ি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে, তা দেখুন। সাংবাদিক বন্ধুরাও আক্রান্ত হচ্ছেন।”
কাদের বলেন, “আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে চাই আমরা আক্রান্ত, আক্রমণকারী নই। এখন বিবৃতি আসছে আক্রান্তদের বিরুদ্ধে।”
পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নিহত এক নেতার নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এগুলো করেছে আক্রমণকারীরা।
“আজকে অনেকে অনেক কথা বলেন। ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে ১৫ জনকে। এসবের জন্য কারা দায়ী?
“ অপবাদ দেওয়া হচ্ছে আমরা যেন হাজার হাজার মানুষ মেরে ফেলেছি। আজকে আমাদের মেরা ফেলা..গতকাল তালিকায় দেখেছি আমাদের ১২জন কর্মী।”
হাসপাতালে আহতদের এবং ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা দেখতে যাচ্ছেন বিবেকের টানে, হৃদয়ের টানে, আপনাদের মত মায়াকান্না করতে নয়। বিবেক ও হৃদয়ের টানে তিনি হাসপাতালে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু মানুষের জন্য যা করতেন, তার কন্যাও সেই সহানুভূতি নিয়ে যাচ্ছেন।”
‘এটা স্বাধীন দেশ’, ইউনূসকে কাদের:
সহিংসতার ঘটনায় গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ইউনূসের বিবৃতি নিয়েও কথা বলেন কাদের।
ইউনূস সরকার বিরোধী হিসাবে মাঠে নেমেছেন বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “অতীতে যিনি রাজনৈতিক দল খুলে ওয়ান ইলেভেনে সাড়া পাননি, যার বিরুদ্ধে মামলা চলমান, যিনি পদ্মাসেতু নির্মাণে বিরোধিতা করেছেন, তিনি আবার সক্রিয়। আগে গোপনে করেছেন। এবার তিনিও এসেছেন।”
কাদের বলেন, “আজকে ইউনূস কত নির্লজ্জ, তিনি ভারতকে অনুরোধ করেন শেখ হাসিনাকে থামাতে। শেখ হাসিনা আক্রান্ত, আক্রমণকারী নন, তাকে থামাবে কেন? আক্রমণকারীদের থামান। যাদের সঙ্গে আপনি আছেন।”
ভারতকে উদ্দেশ করে এই বক্তব্যকে ‘আপত্তিকর’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “এই দেশ স্বাধীন দেশ। স্বাধীন সার্বভৌম দেশের প্রধানমন্ত্রীকে বোঝানো! কী বুঝাতে তিনি ভারতকে বলেছেন? খোলাসা করে ইউনূস সাহেব বলবেন কি?”
কোটা আন্দোলন, ‘অগ্নিসন্ত্রাস’ ও সাম্প্রতিক সহিংসতার সঙ্গে এই বিবৃতির সংযোগ আছে কিনা তাও ভেবে দেখা দরকার বলে উল্লেখ করেন তিনি।
যানজটের এখনকার কষ্টটা কে দিচ্ছে?:
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঢাকায় যানজট বেড়ে যাওয়া নিয়েও কথা বলেন সড়ক মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “কেন এই যানজট? মেট্রোরেল নেই। যে ধ্বংস লীলা মেট্রোরেলের ১০ নম্বর স্টেশন, কাজীপাড়া স্টেশনে, আজকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোলপ্লাজা আগুনে কয়লা হয়ে গেছে। উত্তরা থেকে মানুষ আসা যাওয়া করতে পারছে না। সময়ও বাড়ছে, পরিবহন ব্যয়ও বাড়ছে।
“এই কষ্ট বহুকালের। শেখ হাসিনাই জনগণের কষ্ট লাঘবে এসব প্রকল্প নিয়েছেন। আমাদের বাস র্যাপিড ট্রানজিট গাজীপুর থেকে চালু হওয়ার কথা। ৩৪ টি এক্সিলেটর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কেমনে চালু করব? এগুলো তো মানুষের জন্য করেছেন।”
এই পরিস্থিতির জন্য বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করে তিনি বলেন, “জনগণ আজ উপলব্ধি করছে মেট্রোরেল, এলিভেটেড বন্ধ থাকলে তারা কত কষ্টে থাকে। এই কষ্টটা আমরা দেইনি। এটা দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত। ক্ষমতার জন্য সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে, সহিংসতার পথ বেছে নিচ্ছে।”
বিএনপির ঐক্যের ডাক নিয়ে প্রতিক্রিয়া:
সরকার পতনের ‘এক দফা’ দাবিতে জাতীয় ঐক্য গড়তে বিএনপি যে আহ্বান জানিয়েছে, তা নিয়েও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, “বিএনপি এখন স্বাধীনতা বিরোধী, দেশ বিরোধী, উন্নয়ন বিরোধী অপশক্তিকে নিয়ে নতুন প্লাটফর্ম করার কথা জানান দিচ্ছে। তাদের আহ্বানে তাদের দোসররা সাড়া দেবে, এটাই স্বাভাবিক।
“মাথা যেদিকে যাবে লেজ ও সেদিকে অনুসরণ... এতে নতুনত্ব কিছু নাই। তবে তাদের ঐক্য ‘আগুস সন্ত্রাসের’ ঐক্য, দেশ ও দেশের উন্নয়ন ধ্বংসের ঐক্য।”
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক ও কামরুল ইসলামও।













সর্বশেষ সংবাদ
মনোহরগঞ্জে সরকারি খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ
কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পি.পি. নিযুক্ত হলেন অ্যাড. সুজন
কুমিল্লায় শচীন মেলা শুরু আজ
টুটুল পালালেন অস্ট্রেলিয়ায়
কুমিল্লা জেলা পিপি এড. কাইমুল হক রিংকু
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লা সদরের সাবেক চেয়ারম্যান টুটুল অস্ট্রেলিয়া পালিয়ে গেছেন
কুমিল্লা জেলা পিপি এড. কাইমুল হক রিংকু
সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য নিয়োগ পেলেন ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া
কুমিল্লায় ১৮ দিনে ২৭ অভিযানে ৬৭ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
কুমিল্লায় শচীন মেলা শুরু আজ
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২