কোটা
সংস্কার আন্দোলন চলাকালে সহিংসতায় এ পর্যন্ত ১৪৭ জনের মৃত্যুর তথ্য
দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।রোববার সচিবালয়ে
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত প্রাথমিক হিসাবে ১৪৭
জন মারা যাওয়ার খবর রয়েছে আমাদের কাছে।”
শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের
ওই আন্দোলন গত ১৬ জুলাই সহিংস রূপ পাওয়ার পর এই প্রথম সরকারের তরফ থেকে
প্রাণহাণির কোনো সংখ্যা বলা হল, যদিও সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদনে দুই
শতাধিক মৃত্যুর কথা বলা হচ্ছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বলেন, “পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে কখনোই গুলি করেনি। অনেক ধৈর্য ধরে পরে পুলিশ
গুলি করতে বাধ্য হয়েছে।”
ওই আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতা ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলার ঘটনায় কয়েক হাজার গ্রেপ্তারের খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে।
‘কোনো
নির্দোষ ব্যক্তিকে’ গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না দাবি করে আসাদুজ্জামান খান
কামাল বলেন, “ভিডিও দেখে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে জড়তিদের গ্রেপ্তার করা
হচ্ছে।”
২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র হাই
কোর্ট অবৈধ ঘোষণা করলে ছাত্ররা চলতি জুলাই মাসের শুরু থেকে ফের মাঠে। ধীরে
ধীরে তাদের আন্দোলনের মাত্রা ও ব্যপ্তি বাড়তে থাকে।
১৫ জুলাই ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে কোটা আন্দোলনকারীদের সংঘাতের পর পরিস্থিতি
পাল্টে যায়। পরদিন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুর থেকে ৬ জনের মৃত্যুর খবর আসে।
এর
প্রতিক্রিয়ায় ১৮ জুলাই সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা হয়,
সেদিন মাঠে নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও।
গোটা দেশে নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে, এর মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় রাষ্ট্রীয় সম্পদে
হামলা শুরু হয়। প্রাণহানির সংখ্যাও বাড়তে থাকে।
রামপুরায় বিটিভি ভবন,
মেট্ররেলের দুটি স্টেশন, বনানীতে সেতু ভবন, মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
ভবন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরদিন
পরিস্থিতির অবনতি হলে কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েন করা হয় সারা দেশে। দুই
দফায় তিন দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলে পুরো দেশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
পরিস্থিতি
অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসায় কারফিউ শিথিল করে অফিস-আদালত ও কলকারখানা আবার
খুলে দেওয়া হয়েছে। দূরপাল্লার বাস ও লঞ্চ চলাচল শুরু হলেও ট্রেন চলাচল এখনো
বন্ধ আছে।