কুমিল্লার
বুড়িচংয়ের বুড়বুড়িয়া গ্রাম সংলগ্ন গোমতীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভাঙ্গার পর
প্লাবিত উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের সৃষ্ট দুর্ভোগের মাঝে গতকাল রোববার সকাল
থেকেই নদীর পশ্চিমপাড়ের একই উজেলার ময়নামতি ও ভারেল্লা উত্তর ইউনিয়নের
একাধিকস্থানে ফাটল সৃষ্ট হওয়ায় চরম আতঙিÍক হয়ে পড়ে হাজার হাজার মানুষ। এসময়
মসজিদের মাইকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাহায্যের আহবানে হাজার হাজার
গ্রামবাসী সাড়া দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণস্থানে মাটি ও বালুর বস্তা ফেলে ভাঙ্গন
রোধের চেষ্টা চালায়।
ময়নামতি ইউপি সদস্য হবিউল্লাহ এ প্রতিবেদককে জানান,
গতকাল রোববার ভোর থেকেই গোমতীর পশ্চিমপাড় অংশের ময়নামতি ইউনিয়নের
কাঁঠালিয়া, মীরপুর এলাকায় বাঁধের মাটি সরে যেতে থাকলে স্থানীয়দের দেওয়া
তথ্যেও ভিত্তিতে মসজিদেও মাইক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নদী তীরবর্তী
এলাকায় সাহায্যেও আবেদন করেন। এতে তাৎক্ষণিক
মীরপুর,সমেষপুর,সিন্দুরিয়াপাড়া, হরিণধরা, কাঁঠালিয়া , রায়পুরসহ আশপাশের
হাজার হাজার নারী-পুরুষ,কিশোর-তরুণ প্লাস্টিকের বস্তা,কোদাল নিয়ে
ঘটনাস্থলের ছুটে এসে সকাল ৮ টা থেকে বাঁধ মেরামতের চেষ্টা চালায়। তিনি আরো
বলেন, নদীতে তীব্র ¯্রােত থাকায় নদীর ভিতর ও বাইরের অংশ থেকে এসময় কাঠালিয়া
ও মীরপুর অংশ মাটি সরে যেতে থাকে। দুপুর ১ টা নাগাদ উল্লেখিত দুটি স্থানে
প্রায় ৩ হাজার লোকের আপ্রান চেষ্টায় বাঁধ ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা পায়।
এদিকে একই উপজেলার ভারেল্লা উত্তর ইউনিয়নের পারুয়ারা গ্রামের লায়ন জহিরুল
কাইয়ুম জানান, গত ৩/৪দিন ধরে রামচন্দ্রপুর,হাসনাবাদ এলাকায় গোমতীর বাঁধ চরম
ঝুঁকিপুর্ন ছিল। গতকাল ভোর থেকে বাঁধ চুইয়ে পানি বের হতে থাকলে
গ্রামবাসীরা স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি কেটে ভাঙ্গন ঠেকায়। একই উপজেলার নদীর
পূর্বপাড়ের পীর যাত্রাপুর ইউনিয়নের উত্তর ও দক্ষিণ
শ্যামপুর,কোমাল্লা,গোবিন্দপুর এলাকায় বাঁধ ঝুঁকিপুর্ন থাকায় আতঙ্কে রয়েছে
হাজার হাজার মানুষ। এদিকে বুড়িচং এর কংশনগর সংলগ্ন ব্রাহ্মনপাড়ার মনোহরপুর,
অলুয়াচন্ডিপুর, নাল্লা,বৃষ্টিপুর আদর্শ সদও উপজেলার
কাচিয়াতলী,আমতলী,বানাসুয়া ,
রতœাবতী,ছত্রখীল,কাপ্তানবাজার,ঝাকুনীাড়া,অরণ্যপুর এলাকায় পানি চুইয়ে বের
হতে থাকলে স্থানীয়রা মাটি ও বালুর বস্তা ফেলে ভাঙ্গন রোধ করে। এছাড়া নদীর
বাঁধ ভাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্থ ষোলনল,পীরযাত্রাপুর ,বুড়িচং সদও,বাকশীমুল ও
রাজাপুর ইউনিয়নের প্লাবিত এলাকাগুলোতে এখনো অবস্থার পরিবর্তন হয়নি,উল্টো
প্লাবিত এলাকাগুলোতে খাবার,পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বাঁধ ভাঙ্গার
আগে ও পরে এবং বিভিন্নস্থানের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের অপেক্ষাকৃত নিরাপদ স্থানে
আশ্রয় নেওয়া বেশ কিছু মানুষও এখন পর্যন্ত নদী তীরে খোলা আকাশের নীচে
মানবেতর জীবনযাপন করছে। গোমতীর সার্বিক পরিস্থিতি জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন
বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোঃ ওয়ালিউজ্জামান গতকাল বিকেল সাড়ে
৪টায় এ প্রতিনিধি কে জানান, গোমতীর পানি এখনো বিপদ সীমার ৭২ সেন্টিমিটার
উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত পুরো বাঁধটি চরম
ঝুঁকিপুর্ন অবস্থায় রয়েছে।